দেশে প্রতি বছর জনসংখ্যা বাড়ছে ২০-২৫ লাখ

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
জনবহুল এই বাংলাদেশে বতর্মানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সহনীয় মাত্রায় রয়েছে। দেশের জনসংখ্যায় প্রতিবছর ২০-২৫ লাখ নতুন যুক্ত হচ্ছে। এটা একটি জেলার জনসংখ্যার সমান। বুধবার বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে এসব তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ২৯তম এই দিবসটি পালন করছে দেশ। ১৯৯০ সালের ১১ জুলাই প্রথমবারের মতো ৯০টি দেশে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উদযাপিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় একই সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ৪৫/২১৬ নম্বর প্রস্তাব পাসের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবছর এই দিনটিতে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালন অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ২০১৮ সালে দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘পরিকল্পিত পরিবার সুরক্ষিত মানবাধিকার’কে সামনে রেখে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, বাংলাদেশে নারী প্রতি গড় সন্তান জন্মগ্রহণের হার ৬.৩ থেকে কমে ২.১-এ দঁাড়িয়েছে। বিশ্বে এই গড় হার ২.৫। এই কমর্কাÐের সফলতা থাকার পরও কম আয়তনের এই দেশে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেশি। যে কারণে এই জনসংখ্যা উন্নয়ন কাযর্ক্রমে বাধা হয়ে দঁাড়াচ্ছে। প্রতিপাদ্য বিষয়টি এবারের বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস আগামী প্রজন্মকে মনে করিয়ে দিতে চায়, মানবাধিকার এবং উন্নয়নের সঙ্গে পরিবার পরিকল্পনার সম্পকের্ক। এ ছাড়া বাংলাদেশে বতর্মানে ৬২ শতাংশ দম্পতি আধুনিক পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহার করছে, যা তাদের প্রজনন অধিকারকে সুসংহত করছে। কিন্তু এখনো ৫৯ শতাংশ কিশোরীর বিয়ে হয়ে যাচ্ছে ১৮ বছর পূণর্ হওয়ার আগেই। আবার তাদের ৩১ শতাংশ প্রথম বা দ্বিতীয়বারের মতো গভর্বতী হন ৪৭ শতাংশ মাত্র পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহার করে। এসব দিক বিবেচনায় রেখে বাল্যবিয়ে ও কিশোরী বয়সে গভর্ধারণ হ্রাসের জন্য নানা কমর্সূচি গ্রহণ করেছে সরকার। ১৬৭৬৭ নম্বরে সপ্তাহের প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশু স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত তথ্য ও পরামশর্ দেয়ার জন্য একটি কল সেন্টার যোগ করেছে একটি নতুন মাত্রা। এই খাতে প্রধানমন্ত্রীর সাফল্যের কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, মা ও শিশুমৃত্যু হার হ্রাসের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে এমডিজি অ্যাওয়াডর্ অজর্ন করেছেন। তবে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পরও আমাদের ২০ শতাংশ জনগণ দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকার কারণে অপুষ্টি, অশিক্ষা ও পরিবার পরিকল্পনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না। যে প্রভাব পড়ছে জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং মা ও শিশুমৃত্যুর হার বৃদ্ধির ওপর। এই পরিস্থিতিতেও অপুষ্টির হার ২০ শতাংশে নেমে এসেছে এবং শিক্ষার হার ৬০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। মাতৃমৃত্যুর হারও আগের তুলনায় ৫০ শতাংশ হ্রাস পেয়ে বতর্মানে প্রতি লাখ জীবিত জন্মে ১৭৬ জন হয়েছে। উল্লেখযোগ্যহারে কমেছে শিশুমৃত্যুর হার। এদিকে দেশে বতর্মানে ৪০ ভাগ ডেলিভারি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে হচ্ছে। বাকি ৬০ ভাগ নিজ বাসাতেই হচ্ছে। আবার দেশের প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে ৮৫ ভাগ ডেলিভারি সিজারের মাধ্যমে হচ্ছে। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়মানুযায়ী, ১৫-২০ শতাংশের বেশি সিজার একটি দেশে হতে পারবে না। তবে তা সমাধানে বদ্ধপরিকর ও সফলতা রয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর।