নিবার্চনকে ‘কলঙ্কিত’ বলল বামজোট

প্রকাশ | ১২ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
বাম গণতান্ত্রিক জোট বলেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন এক কলঙ্কিত নিবার্চন। এমন কলঙ্কজনক নিবার্চন দেশের ইতিহাসে আর হয়নি। নজিরবিহীন ভুয়া ভোটের এই নিবার্চনের আগের দিনই বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রশাসনের সহায়তায় ভোট ডাকাতি হয়েছে। অথচ নিবার্চনের দিন প্রশাসন এ সব অনিয়ম ঠেকাতে নিষ্ক্রিয় ছিল। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাম গণতান্ত্রিক জোট আয়োজিত ‘ভোট ডাকাতি, জবর দখল ও অনিয়মের নানা চিত্র’ শীষর্ক গণশুনানিতে এ সব কথা বলেন বাম দলগুলোর প্রাথীর্রা। একাদশ জাতীয় নিবার্চনে অংশ নেয়া বাম দলগুলোর প্রাথীর্রা এই শুনানিতে তাদের অভিজ্ঞতা ও অভিযোগ তুলে ধরেন। গণশুনানির শুরুতে সূচনা বক্তব্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পাটির্র সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বরের নিবার্চন নিয়ে বহু অভিযোগ আছে। এটি নজিরবিহীন একটি ভুয়া ভোটের নিবার্চন। বাম গণতান্ত্রিক জোট এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে ১৩১টি আসনে ১৪৭ জন প্রাথীর্ অংশ নেয়। দিনব্যাপী এই গণশুনানি অনুষ্ঠানে বাম দল থেকে নিবার্চনে অংশ নেয়া ১৩০ জন প্রাথীর্ তাদের নিবার্চনী ষ ছবি পৃষ্ঠা-২ এলাকায় ভোটের সময়কার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি এবারের জাতীয় নিবার্চনে ঢাকা-১২ আসন থেকে কোদাল মাকার্য় দঁাড়ান। গণশুনানিতে তিনি বলেন, ‘নিবার্চনের আগের দিন রাতেই কেন্দ্রভেদে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ ভোট সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরে ফেলা হয়েছে। আমরা যারা প্রাথীর্ ভোট দিতে গিয়েছিলাম, দেখেছি, একটা ভোটকেন্দ্রে ভোটারের তেমন কোনো ভিড় নেই অথচ নয়টা বা সাড়ে নয়টার মধ্যেই ব্যালট বাক্স ভরে গেছে।’ জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে এর মতো কলঙ্কজনক নিবার্চন আর নেই। এটা আমাদের উপলব্ধি করার কথা। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে একটা নিবার্চন হলো, কিন্তু সেই নিবার্চনে জনগণকে অংশ নিতে দেয়া হলো না। সম্পূণর্ভাবে প্রশাসনের কতৃর্ত্ব কাজ করেছে।’ তিনি আরও বলেন, নিবার্চনের আগে থেকেই পুরো একটা একতরফা পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল। বিরোধী প্রাথীের্দর ওপর হামলা-মামলা-গ্রেপ্তার করে এই পরিবেশ তৈরি করা হয়। মানুষ যাতে ভোটকেন্দ্রে আসতে না পারে, ভয় পায় সে জন্য আগে থেকেই একটা পরিবেশ তৈরি করা ছিল। এটাই তাদের লক্ষ্য ছিল। নরসিংদী-৪ আসনে কাস্তে মাকার্ নিয়ে নিবার্চনে দঁাড়িয়েছিলেন সিপিবির কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন। গণশুনানিতে তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমার নিবার্চনী এলাকায় একটি ভোটকেন্দ্রের এক প্রিসাইডিং কমর্কতার্ নিবার্চনের আগের দিন আমার কাছে স্বীকার করেন, প্রশাসনের নিদের্শ ৩৫ শতাংশ ভোটের সিল যেন নিবার্চনের আগের রাতেই দেয়া হয়। আওয়ামী লীগের চাপে পরে তা ৪৫ শতাংশ হয়ে যায়। সেই প্রিসাইডিং কমর্কতার্ নিবার্চনের আগের দিন রাতে আমাকে বলছিলেন, ‘এখন আমি কীভাবে এই বাড়তিটুকু ম্যানেজ করব’। ঢাকা-৮ আসনের প্রাথীর্ শম্পা বসু মই মাকার্য় নিবার্চনে অংশ নেন। তিনি গণশুনানিতে অভিযোগ করেন, ‘সকালে সেগুনবাগিচা হাইস্কুল ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখি, কেন্দ্রে কোনো ভোটার নেই। অথচ ব্যালট বাক্স ভোটে ভতির্ হয়ে আছে। প্রিসাইডিং কমর্কতাের্ক জিজ্ঞেস করতেই বললেন, মাত্র ১০০টি ভোট পড়েছে। কিন্তু ব্যালট বাক্স ভতির্ এত ভোট কোথা থেকে এল?’ রাজশাহী-১ আসনের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের প্রাথীর্ আলফাজ হোসেন বলেন, ভোটের নানা অনিয়ম রিটানির্ং কমর্কতার্সহ প্রশাসনকে সুনিদির্ষ্ট অভিযোগ আনা হলেও তার কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। রাঙামাটি জেলা থেকে নিবার্চনের দঁাড়িয়েছিলেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়াকার্সর্ পাটির্র জুঁই চাকমা। তিনি বলেন, ভোটের দিন আমার নিবার্চনী এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে বঁাধা দেয় আওয়ামী লীগের কমীর্রা। আমার দলের লোকেরাই তাদের ভোট দিতে পারেননি। ভোটকেন্দ্র দখলের প্রতিবাদ করায় উল্টো আমার এজেন্টদের মারধর করা হয়। আমার কোদাল মাকার্র এজেন্টরা প্রশাসনের সাহায্য চেয়েও পায়নি। আমি ১৫টি ভোটকেন্দ্র ঘুরে অনিয়ম পেয়েছি।