বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বের কোন দেশ বিদু্যৎ গ্যাসে ভর্তুকি দেয়

জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন
যাযাদি ডেস্ক
  ১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তব্য রাখেন -স্টার মেইল

বিশ্বের কোন দেশ বিদু্যৎ ও গ্যাসে ভর্তুকি দেয় সেই প্রশ্ন তুলে বুধবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'আমরা তো বিদু্যতে ভর্তুকি দিচ্ছি, গ্যাসে ভর্তুকি দিচ্ছি। আমার প্রশ্ন হলো পৃথিবীর কোন দেশ গ্যাস আর বিদু্যতে ভর্তুকি দেয়? কেউ দেয় না।'

তিনি বলেন, 'গ্যাস উৎপাদন ও বিতরণ; বিদু্যৎ উৎপাদন ও বিতরণে যদি ৪০, ৫০ ও ৬০ হাজার কোটি টাকা আমাকে ভর্তুকি দিতে হয় তাহলে সেটা কী করে দেব? এর ফলে দাম বাড়লে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার যে চেষ্টা সেটা করে কিছুটা সফলতা দেখাতে পেরেছি। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে।

বিদু্যতের দাম যদি বৃদ্ধি পায় তাহলে মানুষ যদি একটু সাশ্রয়ী হয়...। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনে বিদু্যতের ব্যবহার ৫০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছি। এভাবে যদি সবাই উদ্যোগ নেয়, তাহলে বিদু্যৎ ব্যবহার সাশ্রয়ী হতে পারে।'

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, 'যারা বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ী আছেন, এখানেও (সংসদে) আছেন, তাদের আমি তো স্পষ্ট বলেছি। গ্যাস আমি দিতে পারব। কিন্তু যে মূল্যে গ্যাস আমরা বাইরে থেকে কিনে নিয়ে আসলাম সেই মূল্য যদি আপনারা দেন আমরা গ্যাস দিতে পারব। আমরা বাল্কের যেটুকু বাড়ানোর বাড়িয়েছি। তারা যদি নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ চায় তাহলে যে মূল্যে কিনে আনব সেই মূল্য তাদের দিতে হবে। সেই মূল্যই তাদের দিতে হবে। এখানে ভর্তুকি দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।'

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এটা ভুলে যাবেন না ভর্তুকির টাকা তো জনগণেরই টাকা। যত মূল্য কম থাকে তাতে আমাদের বিত্তশালীরা লাভবান হন। যারা সাধারণ মানুষ তারা ঠিকমতো বিল দেয়। বিত্তশালীরা আরাম-আয়েশ করবে, আর স্বল্পমূল্যে পাবে তা কী করে হয়? সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা আমাদের পরিকল্পনা নিচ্ছি।

এর আগে জাতীয় পার্টির

মুজিবুল হক চুন্নু পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বলেন, আইএমএফের ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ দেশে আলোচিত। এই ঋণ পেতে কয়েকটি শর্ত পূরণ করতে হচ্ছে। এই ঋণের কারণে ইতোমধ্যে বিদু্যতের দাম বাড়ানো হয়েছে। ঋণের কারণে গ্যাসের দাম বাড়ানো হবে। এতে করে কৃষিপণ্যের দাম বেড়ে যাবে। সামগ্রিকভাবে উৎপন্ন পণ্যের মূল্য বেড়ে যাবে। বেড়ে গেছে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ। এই চাপ সরকার কীভাবে মোকাবিলা করবে?

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আইএমএফ তখনই ঋণ দেয় যখন ওই দেশ ঋণ পরিশোধের যোগ্যতা অর্জন করে। এখানে আমরা তেমন কোনো শর্ত দিয়ে ঋণ নেইনি।'

সংসদ নেতা বলেন, 'আমরা বিদু্যৎ উৎপাদন বাড়িয়েছি। বিদু্যৎ সরবরাহ বাড়িয়েছি। কিন্তু বিদু্যৎ ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে। ইংল্যান্ডে বিদু্যতের দাম ১৫০ ভাগ বাড়িয়েছে এই ইউক্রেন আর রাশিয়ার যুদ্ধের পর। আমরা তো মাত্র ৫ শতাংশ আজ বাড়ালাম। আর বাড়ছে বাল্কের কিছু গ্যাসের দাম। এলএনজি আমরা যেটা ৬ ডলারে স্পট প্রাইসে কিনতাম, সেটা এখন ৬৮ ডলারে। কত ভর্তুকি দেবে সরকার? সরকার যে ভর্তুকিটা দেবে সেটা তো জনগণেরই টাকা। আর দ্রব্যমূল্য আজ সারা বিশ্বেই বৃদ্ধি পেয়েছে।'

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা নিম্ন-মধ্যম আয়ের যারা তাদের জন্য টিসিবির ফেয়ার প্রাইস কার্ড দিয়ে দিয়েছি। যেখানে ৩০ টাকা কেজিতে চাল কিনতে পারে। তেল, চিনি, ডাল সীমিত আয়ের মানুষ ন্যায্যমূল্যে কিনতে পারে। সেই ব্যবস্থাটা করে দিয়েছি। এর থেকে যারা নিম্নআয়ের তাদের জন্য আমরা ১৫ টাকায় চাল দিচ্ছি। সেই সঙ্গে তেল, ডাল ও চিনিও দেওয়া হচ্ছে। আর একেবারে হতদরিদ্র যারা কিছুই করতে পারে না, তাদের বিনাপয়সায় খাদ্য সরবরাহ করছি। স্বল্প আয়ের মানুষ যাতে কষ্টে না পড়ে সেদিকে দৃষ্টি রেখে এই ব্যবস্থা করছি। কৃষিতে আমরা ব্যাপকভাবে ভর্তুকি দিচ্ছি।'

তিনি বলেন, 'ইংল্যান্ডের মতো জায়গায় ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ হচ্ছে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি। এটা একটা উন্নত দেশের কথা বললাম। পৃথিবীর সব দেশে এই অবস্থা বিরাজমান। বাংলাদেশ এখনো সেই অবস্থায় পড়েনি।'

মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু'র বাংলাদেশ সফরের প্রসঙ্গ টেনে চুন্নু বলেন, 'মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু পাকিস্তান সফরের পর তেহরিক-ই ইনসাফ ক্ষমতাচু্যত হয়ে যায়। তিনি বাংলাদেশে আসার পরে অনেকে মনে করেছিলেন সরকারের কিছু একটা হবে। জানি না উনি যাওয়ার পরে সরকারকে মনে হয় খুব খুশি খুশি লাগছে। আবার একটি দল মনে হয় খুবই অখুশি। আমরা জাতীয় পার্টি এটাকে ওইভাবে নিচ্ছি না। এটাকে স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছি।'

সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার সংসদে এম আব্দুল লতিফের মৌখিক প্রশ্নের দীর্ঘ ১৭ পৃষ্ঠার জবাব দেন। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে উত্তর দিতে গিয়ে তিনি কিছুটা অসুস্থবোধ করেন। এক পর্যায়ে তিনি 'আমার অস্থির লাগছে' উলেস্নখ করে বসে উত্তর দেওয়ার জন্য স্পিকারের কাছে অনুরোধ করেন। এরপর তিনি বসে তার বক্তব্যের বাকি অংশ পঠিত বলে গণ্য করার অনুরোধ জানান।

পরে আব্দুল লতিফ একটি সম্পূরক প্রশ্ন করলে প্রধানমন্ত্রী দাঁড়িয়ে তার সংক্ষিপ্ত জবাব দেন। এ সময় স্পিকার সংসদ নেতাকে উদ্দেশ করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি বসেও বলতে পারেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা বলে শেষ করে দেব। ওই সময় তিনি ৩০ সেকেন্ডের মতো কথা বলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর শেষ হয়।

প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তরের পর জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ মনোযোগ আকর্ষণের নোটিশের কার্যক্রম স্থগিত করে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনার আগে চুন্নুকে পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্য দেওয়ার জন্য ফ্লোর দেন।

চুন্নু পয়েন্ট অব অর্ডারে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বক্তব্য দিয়ে তার জবাব চান। পরে প্রধানমন্ত্রী আবারও ফ্লোর নিয়ে বলেন, একটু সর্দি-কাশি হয়েছে বলে বেশি বলতে চাচ্ছিলাম না। আর ছাড়তেও চাই না। শুধু প্রশ্নের উত্তর দিতে এসেছিলাম। এই প্রশ্নের উত্তরটা না দিলেই নয়।

কমিউনিটি ভিশন সেন্টার উদ্বোধন

এদিকে সরকার বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্ধজনে আলো দেওয়া আমাদের কর্তব্য। সবাই যাতে আন্তর্জাতিক মানের স্বাস্থ্যসেবা পায় তার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। জনগণের জন্য কাজ করে কী পেলাম তা নিয়ে আওয়ামী লীগ কখনোই ভাবে না। বরং জনগণের কল্যাণে কী করতে পারে, তা বিবেচনা করে আওয়ামী লীগ। দেশের ১৩টি জেলায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে ৪৫টি কমিউনিটি ভিশন সেন্টার উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি।

বুধবার সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কমিউনিটি ভিশন সেন্টার উদ্বোধন করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, 'অন্ধজনে আলো দেওয়া আমাদের কর্তব্য। আশা করি সমগ্র বাংলাদেশেই পর্যায়ক্রমে আমরা এই ব্যবস্থা করে দেব। আমরা তৃণমূলে মানুষের দোরগোড়ায় চোখের মেডিকেয়ার পরিষেবা পৌঁছানোর ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। কমিউনিটি ভিশন সেন্টার থেকে চিকিৎসা নিয়ে অনেকেই অন্ধ হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছেন। একটি জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য বড় অর্জন। কারণ, এতে অনেক মানুষ অন্ধত্ব থেকে মুক্তি পেয়েছেন।'

এ সময় দেশের সব মানুষকে বিনামূল্যে আধুনিক ও উন্নত চক্ষু চিকিৎসার আওতায় আনার জন্য পর্যায়ক্রমে সারা দেশে কমিউনিটি ভিশন সেন্টার নির্মাণে সরকারের পরিকল্পনা এবং স্বাস্থ্য খাতের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিতে সব বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সরকারের পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে (ডিএমসি) ৫ হাজার শয্যার হাসপাতালে উন্নীত করার পরিকল্পনাও তার সরকারের রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মানোন্নয়ন সংক্রান্ত কাজ এখনো শুরু করতে পারিনি। আশা করছি শিগগিরই কাজ শুরু করব।'

শেখ হাসিনা বলেন, 'দীর্ঘ ২১ বছর পর '৯৬ সালে প্রথমবারের মতো সরকারে এসে তার সরকার দলমত নির্বিশেষে সবার চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে সারা দেশে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করে। পরে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার তা বন্ধ করে দেয়।'

'তাদের বক্তব্য খুব স্পষ্ট ছিল। তারা বলেছিল যে, এই কমিউনিটি ক্লিনিক চালু থাকলে এখান থেকে যারা চিকিৎসা সেবা নেবে তারা সবাই আওয়ামী লীগকেই ভোট দেবে। তারা ভোট পাবে না, সেই ভয়ে এগুলো বন্ধ করে দেয়' উলেস্নখ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

'কী অদ্ভুত চিন্তা, আপনারা একটু বিবেচনা করেন, আমরা কিন্তু সেগুলো চিন্তা করিনি। কমিউনিটি ক্লিনিকের ক্ষেত্রে সবাই চিকিৎসা পাবে। যে আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে সেও যেমন চিকিৎসা পাবে, যে দেবে না সেও পাবে। কারণ, এটা আমি জনগণের জন্য করেছি। আর জনগণের জন্য যে সেবা সেটা জনগণের হাতে পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য' যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, '২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার সরকারে আসার পর থেকে তার সরকারের প্রচেষ্টায় এখন পর্যন্ত সারা দেশে গড়ে ওঠা ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মানুষ চিকিৎসা সেবাসহ ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে পাচ্ছে। পাশাপাশি সে সময় চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ছিল মাত্র ৩৮ হাজার, কিন্তু তার সরকার ৬৭ হাজারে উন্নীত করেছে। ২২ হাজার চিকিৎসক ও ৪০ হাজার নার্স নিয়োগ দিয়েছে এবং স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সাইন্স হাসপাতাল, বিভিন্ন আধুনিক হাপাতাল, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি শিশু হাসপাতালগুলোকে উন্নতকরণের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবাকে যুগোপযোগী করে দিচ্ছি।'

দেশের প্রতিটি বিভাগে শিশু হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তার কথা উলেস্নখ করে শেখ হাসিনা জানান, বিভাগীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালগুলোতে শিশুদের বিশেষ যত্ন ও চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এ সময় তিনি বেসরকারি হাসপাতাল গড়ে তোলার প্রতিও গুরুত্ব দেন।

দেশের জনসংখ্যা বেশি হওয়ায় সবাইকে নিয়ম মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'সবাই যদি নিয়ম মেনে চলে তাহলে আমরা সবারই যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারব।'

তার সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকারে ছিল বলে বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত হয়েছে উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'একটা বেজ হাসপাতাল রেখে সেখান থেকে এসব সেন্টারগুলোতে টেলিকমিউনিকেশনের মাধ্যমে তাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আর ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে বলেই এই সুযোগ আমরা তৈরি করতে পেরেছি।'

আমরা চাই আমাদের মানুষ অন্ধত্বসহ এ ধরনের নানা সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা লাভে যেন ব্যর্থ না হয়। সে জন্যই তার সরকারের প্রচেষ্টার উলেস্নখ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের এবং সহযোগিতার জন্য ভারতের অরভিন্দু আই কেয়ার সেন্টারকেও এ সময় প্রধানমন্ত্রী ধন্যবাদ জানান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ডক্টর মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন। পরে কমিউনিটি আই ভিশন সেন্টার থেকে বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসা সেবা প্রদান সংক্রান্ত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে ভোলার চরফ্যাশন, বরগুনার আমতলী, চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও কক্সবাজারের পেকুয়ার কমিউনিটি ভিশন কেন্দ্র ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিল। সেখানে উপকারভোগীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মতবিনিময়ও করেন।

প্রধানমন্ত্রী এ অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের নবনির্মিত প্রধান কার্যালয়ও উদ্বোধন করেন। কার্যালয়টি তার দলের নীতি ও আদর্শ জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

নতুন চালু হওয়া কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ২০টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২০টি, রাজশাহী বিভাগে চারটি এবং খুলনা বিভাগে একটি রয়েছে।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগে দুই ধাপে ৯০টি সেন্টার উদ্বোধন করেন। এ নিয়ে দেশে মোট কমিউনিটি ভিশন স্টোরের সংখ্যা দাঁড়াল ১৩৫টি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে