সংলাপ নিয়ে আ’লীগে দুই কথা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার সহযোগিতা চান। সেজন্য তিনি আবার সংলাপ করবেন: এইচ টি ইমাম সংলাপ কেন হবে: প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের

প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
রাজনৈতিক দলগুলোকে আবারও গণভবনে ডাকার খবর নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ধূম্রজাল কাটছেই না। দলটির শীষর্ পযাের্য়র দুইজন মঙ্গলবারও এ বিষয়ে দুই রকম কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছেন ‘সংলাপ হবে’, আর দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন করেছেন- ‘সংলাপ কেন হবে’। ওবায়দুল কাদেরই রাজনৈতিক দলগুলোকে গণভবনে নিবার্চন-পরবতীর্ ‘সংলাপে ডাকার’ খবর গত রোববার সাংবাদিকদের দিয়েছিলেন। কিন্তু একদিন বাদে নিজের কথা উল্টে তিনি বলেন, নিবার্চন নিয়ে সংলাপের কোনো বিষয় ‘এখন নেই’। ‘কেবল শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য’ রাজনৈতিক দলগুলোকে ডাকা হবে। কাদের তার কথা পাল্টে ফেললেও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম মঙ্গলবার আবার সংলাপের কথাই বলেছেন। নতুন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার দায়িত্ব পাওয়া পঁাচজন ধানমÐি ৩২ নম্বরে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগের নিবার্চন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচটি ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার সহায়তা চান, সে কারণেই তিনি আবার একটি সংলাপ করবেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সবার প্রধানমন্ত্রী। কাজেই অন্যান্য দল, তারা যদি মেনে নেন, আমার মনে হয়, নিশ্চয়ই মেনে নেবেন যে, প্রধানমন্ত্রীকে সহায়তা তাদের করতে হবে। এ কারণে প্রধানমন্ত্রী আবার বলেছেন, উনি আরেকটি সংলাপ করবেন। ‘সেই সংলাপে সব পাটির্ যারা এর আগের সংলাপে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাদেরও উনি আমন্ত্রণ করেছেন।’ তবে বিএনপি পুননির্র্বার্চনের যে দাবি তুলেছে, তাকে ‘অত্যন্ত অবাস্তব এবং হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘বিএনপির তরফ থেকে যেটি বলা হচ্ছে, যে নতুন নিবার্চন, এটি তো সম্ভব না। পঁাচ বছর পরই নিবার্চন হবে। অতএব এখন মেনে নিয়ে, বাস্তবতা মেনে নিয়ে সবাই যদি সহায়তা করেন, আমাদের দিক থেকে বলতে পারি, আমরা পঁাচজন অথবা আমাদের মন্ত্রিপরিষদের সদস্য অথবা সরকারে যারা আছেন, আমরা সবাই সবার সহায়তা চাইব। প্রধানমন্ত্রী বললে আমরা অন্যদের সঙ্গে (বিরোধী রাজনৈতিক দল) কথাও বলব- আপনারা আসুন, সহায়তা করুন। বাংলাদেশ তো সবার, দেশকে গড়ে তুলি।’ এইচটি ইমামের বক্তব্যের আধ ঘণ্টার ব্যবধানে মাইলখানেক দূরে ধানমÐি ২৭ নম্বর রোডের হোয়াইট হলে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের বধির্তসভায় ওবায়দুল কাদের বলেন ভিন্ন কথা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দাবি করেন, রোববার আওয়ামী লীগের যৌথসভায় সংলাপ শব্দটি তিনি উচ্চারণই করেননি। ‘সংলাপ নিয়ে আমরা তো কিছুই বলিনি। কেউ যদি মনগড়া খবর পরিবেশন করেন, তাহলে তো কিছু করার নেই। আমি যে বক্তব্য রেখেছি, এর অডিও ভিডিও ক্লিপ রয়েছে, সেখানে সংলাপের কোনো বিষয় নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের আগে ঐক্যফ্রন্ট, যুক্তফ্রন্ট, বিএনপি, বাম গণতান্ত্রিক জোট, ইসলামী জোট সব মিলিয়ে মোট ৭৫টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছিলেন। সেই দলগুলোর নেতাদের আমাদের নেত্রী আবারও গণভবনে আমন্ত্রণ জানাতে চান শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য।’ এবার সংলাপ হবে না মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘এখানে সংলাপ নিয়ে ধূম্রজাল কোথা থেকে এল? আমি তো সংলাপ শব্দটি উচ্চারণ করিনি। বলা হয়েছে, গণভবনে নেত্রী আমন্ত্রণ জানাবেন, শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন; একটু আপ্যায়নের ব্যবস্থাও থাকবে। এই ছিল আমাদের কথা। এখানে ধূম্রজাল কেন হবে, সংলাপ কেন হবে?’ নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী একবারও সংলাপের কথা বলেননি। আমি বলেছি, তিনি আমন্ত্রণ জানাবেন। আমি তো সংলাপের কথা বলিনি! কাজেই এই শব্দটি কোথা থেকে এল আমি জানি না।’