ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ভোট দিতে সন্তানের জন্ম পিছিয়ে দিলেন টিউলিপ

প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
টিউলিপ সিদ্দিক
ব্রেক্সিট ইস্যুতে পালাের্মন্টে ভোট দিতে চিকিৎসকের পরামশর্ উপেক্ষা করে সন্তানের জন্মদান দুইদিন পেছানোর ঝুঁকি নিয়েছেন ব্রিটেনের বিরোধী লেবার পাটির্র এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। ব্রিটিশ পালাের্মন্টে মঙ্গলবার ব্রেক্সিটের ওপর ভোট অনুষ্ঠিত হয়। টিউলিপ সেখানে ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ভোট দেন। চিকিৎসকের পরামশর্ ছিল সোম অথবা মঙ্গলবার সিজারিয়ান সেকশন করানোর। কিন্তু টিউলিপ সেই তারিখ বৃহস্পতিবারে পিছিয়ে দিয়েছেন। সন্তানের জন্মদানের চেয়েও ইইউতে যুক্তরাজ্যের থাকাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে টিউলিপ বলেন, ‘চিকিৎসকের দেয়া তারিখের এক থেকে দুইদিন পর আমার সন্তান পৃথিবীতে এলেও আমি খুশি যদি যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের মধ্যে শক্তিশালী সম্পকর্ দেখতে পায় বিশ্ব।’ তবে খুব বেশি সমস্যা হলে সন্তানের স্বাস্থ্যকেই বেশি গুরুত্ব দেবেন বলে জানান টিউলিপ। বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানার মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ। টিউলিপ সিদ্দিকের দেরিতে সন্তান জন্মদানের খবর ব্রিটিশ মিডিয়া বিবিসি ও ডেইলি মেইলসহ গুরুত্বপূণর্ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ডেইলি মেইল জানিয়েছে, হ্যাম্পস্টিড অ্যান্ড কিলবানের্র লেবার পাটির্র এমপি টিউলিপ। তার অ্যাজেলিয়া নামে দুই বছরের একটি কন্যা সন্তান আছে। কন্যার জন্ম দেওয়ার সময় তার গভর্কালীন জটিলতা দেখা দিয়েছিল। দ্বিতীয় সন্তান জন্মদানের মূল তারিখ ছিল ৪ ফেব্রæয়ারি। ওইদিন তার অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ডায়াবেটিসসহ কিছু জটিলতা দেখা দেওয়ায় হ্যাম্পস্টেডের রয়্যাল ফ্রি হাসপাতালের চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচারের তারিখ এগিয়ে সোমবার বা মঙ্গলবার করার পরামশর্ দিয়েছিলেন। পরে টিউলিপ চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে তারিখ দুইদিন পিছিয়ে বৃহস্পতিবার করার অনুরোধ জানান। ইভিনিং স্ট্যান্ডাডের্ক ৩৬ বছর বয়সী টিউলিপ বলেন, ‘রয়্যাল ফ্রি হাসপাতালের নিয়ম-কানুন খুবই কঠোর। গভার্বস্থায় বতর্মান পরিস্থিতি আমার জন্য ঝুঁকিপূণর্। কিন্তু চিকিৎসকদের পরামশর্ উপেক্ষা করে আমি সন্তান জন্মদানের তারিখ পিছিয়েছি।’ ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ বলেন, ‘আমি সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় আমার সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেছি।’ তিনি নারী তথা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষকে রাজনীতিতে সংশ্লিষ্ট করতে প্রক্সি বা ছায়া ভোটদানের নিয়ম করার আহŸান জানান। ভোট দিতে টিউলিপকে তার স্বামী ক্রিস পাসির্ হুইল চেয়ারে করে পালাের্মন্টে নিয়ে যান। ব্রিটিশ পালাের্মন্টে সাধারণত গভর্কালীন বা অন্য কোনো বড় সমস্যায় কেউ পড়লে তার পরিবতের্ বিরোধী পক্ষের একজন ভোটদানে বিরত থাকেন যাতে ভোটে কোনো প্রভাব না পড়ে। এটাকে ‘পেয়ার’ বলা হয়। কিন্তু গত বছর লিব ডেম এমপি জো সুইনসন গভর্বতী হওয়ার কারণে ভোট দিতে পারেননি। তার ‘পেয়ার’ হয়েছিলেন টোরি দলের চেয়ারম্যান ব্র্যান্ডন লুইসের সঙ্গে। কিন্তু লুইস নিয়ম ভঙ্গ করে ভোট দিয়েছিলেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে দুঃখও প্রকাশ করেছিলেন। টিউলিপ বলেছেন, ‘ওই নীতিতে তার আর আস্থা নেই। অতীতের দৃষ্টান্ত দেখে তিনি ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভোটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।’ জয়-পরাজয়ের ব্যবধান খুব সামান্যই থাকবে উল্লেখ করে টিউলিপ বলেন, ‘তাকে ভোট দেয়ার জন্য কেউ চাপ দেয়নি। কিন্তু এটি তার জীবনের সবচেয়ে বড় ভোট। আমি আমার স্বামীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। সে আমাকেই সিদ্ধান্ত নিতে বলেছে এবং আমার সিদ্ধান্তের প্রতি তার পূণর্ সমথর্ন আছে।’