কারাগারে থাকা মানুষেরও স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার আছে :হাইকোর্ট

'দুর্নীতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে না পারলে দেশ টিকবে না' নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন স্বাস্থ্যের ডিজি

প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
কারাগারে থাকা মানুষেরও স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার আছে উলেস্নখ করে হাইকোর্ট বলেছেন, 'সেবাটা দেওয়া দরকার। আমাদের তো কাউকে ডাকতে মন চায় না। এটা শোভনীয় নয়। আমরা অনেক সময় দিয়ে থাকি। বার বার সময় দেওয়ার পরও যখন আদালতের আদেশ মানা হয় না, তখন আমরা বাধ্য হয়ে ডাকি। স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে হবে, দুর্নীতি সহনীয় পর্যায়ে আনতে না পারলে দেশ টিকবে না।' মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করার পর বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ ডিজিকে উদ্দেশ্য করে এ মন্তব্য করেন। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, 'এটা কনসিডার করেন। স্বাস্থ্য খাতের বিষয়টি কোভিডের কারণে হয়েছে।' এ সময় হাইকোর্ট বলেন, 'সরকার তো কোনো খাতেই টাকা কম দেয় না।' ফরিদপুর মেডিকেলে দুর্নীতির বিষয়টি উলেস্নখ করে আদালত বলেন, 'একটি জিনিসের দাম বাজারের তুলনায় ৪০০ গুণ হতে পারে না। বিদেশিরা দেশ চালায় না। আমরা নিজেরা দেশ চালাচ্ছি।' হাইকোর্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজিকে ডায়াসের সামনে ডেকে বলেন, 'এ দেশের মানুষ কিন্তু গরিব। মানুষ বিপদে পড়লেই ডাক্তারের কাছে যায়। এটা একটা মহান পেশা। ডাক্তাররাও সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেবা দেয়। তাদের ব্যক্তি জীবন আছে বলে মনে হয় না। তারপরও মানুষ সেবা পায় না। আপনি বিষয়টি দেখবেন। গরিব দেশ হিসেবে যথেষ্ট টাকা স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেয় সরকার। অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে কোনো কিছু গেলে আপনারা গুরুত্ব দেবেন।' এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আদালতকে বলেন, 'অনিচ্ছাকৃতভাবে আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে বিলম্ব হয়েছে। এ রকম ভুল আর হবে না। আমি ক্ষমাপ্রার্থী।' পরে আদালত এই মামলার পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২ মে দিন ধার্য করেন। এর আগে দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে ৪৮ জন চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশনা নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়ন না করায় হাইকোর্টের কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর বেঞ্চে লিখিতভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে ৪৮ জন চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায় তার ব্যাখ্যা দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তলব করেন হাইকোর্ট। ২৪ জানুয়ারি তাকে সশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। এর আগে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে ৪৮ জন চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। স্বাস্থ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব ও কারা কর্তৃপক্ষকে এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। ২০২২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দিয়ে জানানো হয়, দেশের ৬৮টি কারাগারে ১১২ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ১৪১টি পদের মধ্যে এই ১১২ পদে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাকি থাকা শূন্যপদে দ্রম্নত নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।