দেশের নদনদী দখলদারদের তালিকা তৈরি করতে প্রকল্প নিয়েছিল জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন (এনআরসিসি)। গত ডিসেম্বরে শেষ হয় প্রকল্পের কাজ। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৭ হাজার ৩৯৬ জন দখলদারকে চিহ্নিত করে কমিশন। এ সংক্রান্ত তালিকা কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশও করা হয়। তবে ওই তালিকা ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। যা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে বিভিন্ন গণমাধ্যম।
এদিকে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরটি সঠিক সয় বলে দাবি করেছেন এনআরসিসির চেয়ারম্যান ডক্টর মনজুর আহমেদ চৌধুরী। বুধবার জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের কেন্দ্রীয় দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তিনি। এসময় কমিশনের অন্য কর্মকর্তারা ছিলেন।
এনআরসিসির চেয়ারম্যান বলেন, প্রকল্পটিতে অনেক ভুলত্রম্নটি রয়েছে। আরও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মন্ত্রণালয়, ডিসিসহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে আরও বিশ্লেষণের পরই আমরা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করব। যেটা এখন পর্যন্ত ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়নি। অনুমোদনের পরই তা প্রকাশ করা হবে। এমনকি প্রকল্পের 'পুরো টাকাটাই নদীতে গেছে' বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। সব প্রকল্পেই কিছু ত্রম্নটি থাকে, এ প্রকল্পেও আছে। তাছাড়া প্রকল্পটি শুধু পানি আইনের
ওপর ভিত্তি করেই তৈরি করা হয়েছিল। এটিকে আরও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে সংশোধনের জন্য সিদ্ধান্ত আসবে। আমরা ত্রম্নটি যাচাই-বাছাই করেই তালিকাটি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করব।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান আরও বলেন, পানি আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে দখলদার বলা যাবে না। এ কারণে আমরা প্রতিবেদন জমা নেইনি। যেহেতু নদী নিয়ে কাজ করা হয়েছে, তাই বলেছি 'প্রকল্পের পুরো টাকাটাই নদীতে গেছে।'
সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের অন্য এক সদস্য বলেন, হাইকোর্টের রায়ে সিএস রেকর্ডের ভিত্তিতে অবৈধ দখলদারদের চিহ্নিত করতে বলা হয়েছিল। প্রকল্পে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে পানি আইন ২০১৩-এর ভিত্তিতে। এতে প্রকল্পে চিহ্নিত ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের নাম ও তালিকা কমিশনে দেওয়া প্রতিবেদনে এবং ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। এ কারণে এটি প্রকাশও করা যাবে না।
প্রকল্পটি হাতে নেওয়ার সময় এনআরসিসির চেয়ারম্যান ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মুজিবুর রহমান হাওলাদার। দীর্ঘ পরিশ্রম শেষে ৩৭ হাজার ৩৯৬ দখলদারের তথ্য সংগ্রহ করে কমিশন।