প্রধানমন্ত্রীর সফর আজ

কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও অর্থনৈতিক অঞ্চল চাইবেন রাজশাহীবাসী

সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের ব্যানার, ফেস্টুন আর তোরণে সাজানো হয়েছে নগরী

প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

রাজশাহী অফিস
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর উপলক্ষে ব্যানার, ফেস্টুন আর তোরণে সাজানো হয়েছে রাজশাহী নগরী -যাযাদি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রাজশাহী সফরে আসছেন। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর দলীয় প্রধানের আগমন উপলক্ষে এ অঞ্চলের নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে দলীয় ও সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের ব্যানার, ফেস্টুন আর তোরণে সাজানো হয়েছে নগরীকে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে করা হয়েছে আলোকসজ্জা। প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠে প্রস্তুত করা হয়েছে দলীয় প্রতীক নৌকার আদলে মঞ্চ। প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে নগরীতে নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জানা গেছে, বিকালে দলীয় জনসভায় ভাষণ দেওয়ার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহীতে ১ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২৫টি প্রকল্প এবং ৩৭৬ কোটি টাকার ছয়টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। দলীয় নেতাকর্মীদের দেবেন দিকনির্দেশনা। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাজশাহীবাসী অর্থনৈতিক অঞ্চল, কৃষি ও আইটি বিশ্ববিদ্যালয় চাইবেন বলে জানা গেছে। রাজশাহীর সংরক্ষিত আসনের এমপি আদিবা আঞ্জুম মিতা বলেন, 'না চাইতে প্রধানমন্ত্রী আমাদের অনেক কিছু দিয়েছেন। এবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে অর্থনৈতিক অঞ্চলটা আমরা চাই। এছাড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চাই। আরেকটা জিনিস চাই, সেটা হলো হাটিকুমরুল থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত ফোরলেন সড়ক।' রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, 'এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় চেয়েছিল রাজশাহীবাসী। তা তিনি দিয়েছেন। রাজশাহী শিক্ষানগরী হিসেবে পরিচিত। এখানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে। শিক্ষানগরীকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে রাজশাহীতে এখন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেই দাবি তুলতে চাই।' বিএনপির সঙ্গে খেলে জিততে চাই এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা সফল করার লক্ষ্যে শনিবার রাজশাহী জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ডক্টর হাসান মাহমুদ বলেন, 'আমরা চাই সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে আসুক। বিএনপি যে ১২ দল, ২৪ দল, ৫৪ দল নিয়ে জোট করেছে, জোট করুক। আমরা চাই, তারা (বিএনপি) নির্বাচনে অংশ নিক। পৃথিবীর কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নেই। আছে শুধু পাকিস্তানে। বিএনপি তো পাকিস্তানকে অনুকরণ করে। আমাদের দেশে ভোট হবে সেইভাবে, যেভাবে হয় অস্ট্রিলিয়া, ইন্ডিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপানে।' বিএনপির সঙ্গে আমরা খেলে জিততে চাই উলেস্নখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'তারা (বিএনপি) ২০১৪ সালে (জ্বালাও পোড়াও) যেটি করেছিল সেটি করার সুযোগ পাবে না। ২০১৩-১৫ সালে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের মোকাবিলা করেছি। এবার তারা যদি চেষ্টা চালায়, তাহলে জনগণ তাদের সমুদ্রে নিক্ষেপ করবে।' তিনি আরও বলেন, 'আজকে বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়েছে। পৃথিবীর অন্য দেশেও ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে নির্বাচন হয়। ভোটের সময় জিয়ার এবং এরশাদের সেস্নাগান ছিল ১০টি হুন্ডা, ১০টি গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা। ইভিএম হলে এই সেস্নাগান থাকবে না। সেই জন্য আমরা ইভিএমের দাবি দিয়েছি। ইভিএমে যত আসনেই নির্বাচন হোক আমরা মেনে নেব।' সয়বাদ সম্মেলনে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার জনসভার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে বলেন, 'মাদরাসা মাঠ ছাড়াও তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শোনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এলইডি টিভি দিয়েছি বিভিন্ন পয়েন্টে, প্রায় ১৩০টি মাইক দিয়েছি। সাহেববাজার, লক্ষ্ণীপুর মোড় ও সিঅ্যান্ডবি মোড় থেকেও জনসভার ভাষণ শোনা ও এলইডিতে দেখা যাবে।' ৫-৭ লাখ মানুষের সমাগম ঘটবে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, 'জনসভার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পাঁচ থেকে সাত লাখ মানুষ এই জনসভায় অংশ নেবেন বলে আমরা আশা করছি।' খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ করতে চেয়েছিলেন তা হয়ে গেছে, তার সুফল পাওয়া যাচ্ছে। এবার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাচ্ছেন তরুণদের নিয়ে, সেটাও ইনশাআলস্নাহ হয়ে যাবে। এই জনসভায় দেশের উন্নয়ন তুলে ধরে আগামী নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীদের জন্য ভোট চাইবেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও দেশবাসীকে তিনি এক গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেবেন বলেও আমরা আশা করছি।' তিনি জানান, বিভিন্ন রঙয়ের পোশাক আর টুপিতে রঙিন হয়ে উঠবে জনসভার মাঠ। রাজশাহীর জন্য তিনি যা করেছেন তার জন্য জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই, ধন্যবাদ জানাতে চাই আমরা। এ সময় রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আলী কামাল, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারাসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বর্ণিল সাজে সারদা পুলিশ একাডেমি চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে চারঘাটের সারদা পুলিশ একাডেমি বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আজ বেলা ১১টায় সারদায় ৩৮তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করবেন। পরে তিনি প্রশিক্ষণে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী কর্মকর্তাদের মাঝে ট্রফি বিতরণ করবেন এবং নবীন এই পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। অনুষ্ঠানে সফরসঙ্গী হিসেবে শামসুল হক টুকু বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার, আমিনুল ইসলাম খান, সিনিয়র সচিব জননিরাপত্তা বিভাগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নূরুল ইসলাম সুজন মন্ত্রী রেলপথ মন্ত্রণালয়, শাহরিয়ার আলম পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।