বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এক মাসে সড়কে ঝরল ৫৮৫ প্রাণ

যাত্রীকল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে
যাযাদি ডেস্ক
  ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ৫৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৫ জন নিহত ও ৮৯৯ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ২১৪টি মোটর সাইকেল দুর্ঘটনায় ২০৫ জন নিহত ও ১১৪ জন আহত হয়েছেন।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। শনিবার সকালে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

এদিকে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে মোট ৬৫০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ৬৪২ জন নিহত ও ৯৭৮ জন আহত হয়েছেন।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানিয়েছে, বিপজ্জনক অভারটেকিং, বেপরোয়া গতি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ যানবাহন উঠে আসা, ছোট যানবাহন ক্রমেই বৃদ্ধি, বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে সার্ভিস লেন না থাকায় ইজিবাইক, রিকশা, অটোরিকশা মহাসড়কে নেমে আসা, গুরুত্বপূর্ণ

জংশনে, রাস্তার মোড় ও বাস স্টপেজগুলোতে যানজট তৈরি করায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেকাংশ বাড়িয়ে দিচ্ছে।

এ ছাড়া যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চালকের বেপরোয়া মনোভাব, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেডফোন ব্যবহার, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও ট্রাফিক আইন অমান্য করা, ছোট যানবাহনের ব্যাপক বৃদ্ধি, সড়কে চাঁদাবাজি ও রাস্তার পাশে হাট-বাজারও বাড়িয়েছে দুর্ঘটনার পরিমাণ।

এদিকে প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জানুয়ারি মাসে রেলপথে ৪৪টি দুর্ঘটনায় ৪৬ জন নিহত ও ৭৮ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ১৩টি দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত, ১ জন আহত ও ৬ জন নিখোঁজ হয়েছেন। এ ছাড়া মোট দুর্ঘটনার মধ্যে পথচারীকে গাড়িচাপা দেওয়ার ঘটনাই ৫১ দশমিক ৬০ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, বিগত ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের চেয়ে বিদায়ী ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে সড়কে দুর্ঘটনা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। আহতের সংখ্যা বেড়েছে ১০.০৪ শতাংশ। তবে প্রাণহানী ৪ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে।

সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ২০৬ জন চালক, ১০৯ জন পথচারী, ৩৫ জন পরিবহণ শ্রমিক, ৫৩ জন শিক্ষার্থী, ১০ জন শিক্ষক, ১৩ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১১৫ জন নারী, ৬২ জন শিশু, ৫ জন সাংবাদিক, ১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ২ জন আইনজীবী ও ৩ জন প্রকৌশলী এবং ১৪ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।

এ সময়ে সংগঠিত দুর্ঘটনায় মোট ৮১৬টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৩২ শতাংশ মোটর সাইকেল, ১২ দশমিক ৫ শতাংশ বাস, ২৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান ও লরি, ৫ দশমিক ০২ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস, ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৫১ দশমিক ৬০ শতাংশ পথচারীকে গাড়িচাপা দেওয়ার ঘটনা, ২২ দশমিক ২৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১২ দশমিক ৪৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যাওয়া, বিবিধ কারণে ১১ দশমিক ৯৭ শতাংশ, শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ যানবাহনের চাকায় ওড়না পেছিয়ে এবং ১ দশমিক ১ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এই বছর মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ২৯ দশমিক ৫১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩৮ দশমিক ৬১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫ দশমিক ২২ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১ দশমিক ১৮ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ১ দশমিক ১ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।

বিদায়ী মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ১৭ জানুয়ারি, এই দিনে ৩৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত ও ৩১ জন আহত হয়েছে। আর সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ২ জানুয়ারি। এই দিনে ১২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও ২১ জন আহত হয়েছেন।

সড়ক দুর্ঘটনায় একদিনে সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছে ১১ জানুয়ারি। এই দিনে ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত ও ১৭ জন আহত হয়েছেন।

সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি আহত হয়েছে ৫ জানুয়ারি। এই দিনে ১৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত ও ৭১ জন আহত হয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে