শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

'রাষ্ট্রভাষা দিবস' পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়

যাযাদি ডেস্ক
  ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের কারণে বাঙালির জাতীয় জীবনে ১৯৫২ সালের ফেব্রম্নয়ারি মাসটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। বায়ান্ন'র ৬ ফেব্রম্নয়ারি ছিল ভাষা আন্দোলনের এক ঐতিহাসিক মাইলফলক। কারণ, 'রাষ্ট্রভাষা দিবস' পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এই দিনে। এর আগের দুদিন অর্থাৎ ৪ ও ৫ ফেব্রম্নয়ারি ঢাকাজুড়ে প্রতিবাদ মিছিলে যে গতি সঞ্চার করে, এরই রেশ ধরে ৫ ও ৬ ফেব্রম্নয়ারি ছিল ছাত্রদের জন্য ছিল প্রচন্ড ব্যস্ততার দিন। আহূত ২১ ফেব্রম্নয়ারির হরতাল সফল করতে ব্যস্ততা বেড়ে যায় ছাত্রনেতাদের।

রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে উত্তাল ১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রম্নয়ারি পূর্ববঙ্গ কর্মী শিবির অফিস ১৫০ মোগলটুলিতে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভা অর্থ সংগ্রহের প্রয়োজনে ১১ ও ১৩ ফেব্রম্নয়ারি ঢাকা শহরে পতাকা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। ১২ ফেব্রম্নয়ারি কোনো কর্মসূচি না থাকলেও টানা তিন দিন ধরেই চলে এই কর্মসূচি। এতে টাকা খুব বেশি সংগ্রহ না হলেও পতাকা দিবসকে সামনে রেখে আরও নতুন নতুন কর্মী এসে যুক্ত হতে

থাকে এই আন্দোলনে। সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভায় 'রাষ্ট্রভাষা দিবস' পালনের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

মূলত পূর্ব ঘোষিত ২১ ফেব্রম্নয়ারি বিক্ষোভের প্রস্তুতি শুধু ঢাকা শহরে নয়, চলতে থাকে সমগ্র পূর্ব বাংলাজুড়ে। আগের দিন নিখিল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সংসদের জরুরি অধিবেশনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আপসহীন সংগ্রাম পরিচালনার জন্য ছাত্রসমাজের প্রতি আবেদন জানানো হয়।

ভাষা ও সাংস্কৃতিক পার্থক্য আরও জোরালোভাবে প্রতীয়মান হচ্ছিল। ধর্ম নয়; বরং বাঙালি জাতীয়তাবাদের ধারণা স্পষ্ট হতে শুরু করেছিল। অন্যদিকে তখনকার ঊর্দুভাষীরা বাঙালির সংস্কৃতিকে 'হিন্দুয়ানী' বলে মনে করাটা বাংলা ভাষার প্রতি তাদের বিতৃষ্ণার আরেকটি কারণ।

জিন্নাহ'র মৃতু্যর পরও রাষ্ট্রভাষা নিয়ে নানা রকম প্রস্তাব, পাল্টা প্রস্তাব চলতে থাকে। দেশভাগের পর থেকে ১৯৫২ সালের শুরু পর্যন্ত বাঙালিরা জোরালোভাবে রাষ্ট্রভাষা ঊর্দু সম্পর্কে তাদের বিরুদ্ধ মনোভাব ব্যক্ত করে গেছেন।

প্রতিক্রিয়া হিসেবে থেমে থেমে আন্দোলন চললেও বায়ান্ন সালে পাকিস্তানের অ্যাসেম্বলিতে ঊর্দুকেই একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলে আন্দোলনে ফেটে পড়ে বাঙালি।

খাজা নাজিমুদ্দিনের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে পূর্ব-পাকিস্তানে শুরু হওয়া এই স্বতঃস্ফূর্ত ধর্মঘট ও বিক্ষোভ মিছিলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

অলি আহাদের এক লেখা থেকে জানা যায়, ওইদিনের সভার পর ৫০০ পোস্টার লেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল নাদিরা বেগম ও ডা. সাফিয়াকে। তারা তাদের বান্ধবী ও অন্য ছাত্রীদের নিয়ে পোস্টার লেখার ব্যবস্থা করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে