তাবলিগে দ্ব›দ্ব

ইজতেমার তারিখ ঠিক করতে কাল আবার বৈঠক

প্রকাশ | ২২ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
তাবলিগের এক পক্ষ না আসায় অন্য পক্ষের মতামত নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এবারের ইজতেমার তারিখ নিধার্রণে বুধবার দুই পক্ষকে নিয়ে বসবেন তারা। সোমবার বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বৈঠকে তাবলিগের দিল্লি মারকাজের মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা উপস্থিত হয়েছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান কামাল ও ধমর্ প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহর সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন এই পক্ষের নেতা কাকরাইল মারকাজের শূরা সদস্য ওয়াসিফুল ইসলাম। কিন্তু দেওবন্দ অনুসারীরা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “আরেকটি পক্ষ সময়মতো জানতে না পেরে আসতে পারেনি। আমরা বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় উভয়পক্ষকে নিয়ে একসঙ্গে বসব এবং তাদের (উভয়পক্ষ) ইজতেমার তারিখ ঠিক করতে বলব।” এই দুই পক্ষের দ্ব›দ্ব সংঘাতে গড়ানোর পর এবারের বিশ্ব ইজতেমা স্থগিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের টঙ্গিতে এই ইজতেমা হয়ে আসছে। ধমর্ প্রতিমন্ত্রী আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, “সরকারের পক্ষ থেকে একটি দাবি আছে, তাহলো একসাথে ইজতেমা হতে হবে।” উপমহাদেশে সুন্নী মতাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় সংঘ তাবলিগ জামাতের মূল কেন্দ্র ভারতের দিল্লিতে। মাওলানা সাদের দাদা ভারতের ইসলামী পÐিত ইলিয়াছ কান্ধলভি ১৯২০ এর দশকে তাবলিগ জামাত নামের এই সংস্কারবাদী আন্দোলনের সূচনা করেন। মাওলানা ইলিয়াছের মৃত্যুর পর তার ছেলে মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ এবং তারপর মাওলানা ইনামুল হাসান তাবলিগ জামাতের আমিরের দায়িত্ব পালন করেন। মাওলানা ইনামুলের মৃত্যুর পর একক আমিরের বদলে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার দেওয়া হয় একটি শূরা কমিটির উপর। মাওলানা জুবায়েরের মৃত্যুর পর মাওলানা সাদ আমিরের দায়িত্ব নেন এবং একক নেতৃত্বের নিয়ম ফিরিয়ে আনেন। কিন্তু মাওলানা জুবায়েরের ছেলে মাওলানা জুহাইরুল হাসান তখন নেতৃত্বের দাবি নিয়ে সামনে আসেন এবং তার সমথর্করা নতুন করে শূরা কমিটি গঠনের দাবি জানান। কিন্তু সাদ তা প্রত্যাখ্যান করলে বিরোধ বড় আকার ধারণ করে। নেতৃত্ব নিয়ে দিল্লির মারকাজ এবং দেওবন্দ মাদ্রাসার অনুসারীদের মধ্যে এই দ্ব›দ্ব প্রকট আকার ধারণ করে গত বছর জানুয়ারিতে ঢাকায় বিশ্ব ইজতেমার সময়। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করে আসা সাদ কান্ধলভি বিরোধীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। শেষ পযর্ন্ত ইজতেমায় অংশ না নিয়েই তাকে ঢাকা ছাড়তে হয়। তারপর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। সোমবার বৈঠকের পর সাদের অনুসারী সৈয়দ আশরাফ আলী সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা একসাথে ইজতেমা করতে রাজি আছি। তবে আমাদের কিছু দাবি রয়েছে।” তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে, আগের মতো নিজামুদ্দিন (নিজামুদ্দিন আউলিয়া) মারকাজের তত্ত¡াবধানে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হতে হবে। তাদের প্রথম ইজতেমা করার সুযোগ দিতে হবে। পছন্দমতো বিদেশি মেহমান আনার সুযোগ দিতে হবে। শতার্ধীনে একসঙ্গে ইজতেমায় রাজি হওয়ার কথা জানালেও সাদের অনুসারী আশরাফ আলী বলেন, “এখন যে অবস্থা দঁাড়িয়েছে, তাতে একসাথে ইজতেমা হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি না।”