স্বাস্থ্যের শক্তিশালী ‘দুর্নীতি চক্র’ ভাঙতে দুদকের সুপারিশ

শেখ হাসিনার নতুন সরকার দুনীির্তর বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে জোর দেয়ার পর চলতি বছরের শুরু থেকে স্বাস্থ্য খাতের দুনীির্তর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে দুদক

প্রকাশ | ২৪ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:১০

যাযাদি রিপোটর্

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ২৩ কমর্কতার্-কমর্চারীর বিরুদ্ধে ‘দুনীির্তর মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক’ হওয়ার অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়েছে দুনীির্ত দমন কমিশন-দুদক। এই কমর্কতার্-কমর্চারীরা দীঘির্দন একই কমর্স্থলে থেকে ‘দুনীির্তর শক্তিশালী বলয়’ তৈরি করেছেন জানিয়ে তাদের ‘জরুরি ভিত্তিতে’ বদলি করার পাশাপাশি বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে দুদকের পক্ষ থেকে। বুধবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবকে দুদকের পাঠানো এক চিঠিতে এই সুপারিশ করা হয়। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হলো, তা দুদককে জানাতেও অনুরোধ করা হয় কমিশনের সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে। দুদকের তালিকায় থাকা স্বাস্থ্যের ২৩ কমর্কতার্-কমর্চারীর মধ্যে আছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কাযার্লয়ের সহকারী প্রধান (পরিসংখ্যান বিদ) মীর রায়হান আলী, প্রশাসনিক কমর্কতার্ ফারুক হাসান, প্রধান সহকারী আশরাফুল ইসলাম, প্রধান সহকারী সাজেদুল করিম, উচ্চমান সহকারী তৈয়বুর রহমান, উচ্চমান সহকারী সাইফুল ইসলাম। চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের কাযার্লয়ের প্রধান সহকারী ফয়জুর রহমান, প্রধান সহকারী মাহফুজুল হক, কম্পিউটার অপারেটর আজমল খান, ময়মনসিংহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের কাযার্লয়ের প্রশাসনিক কমর্কতার্ মোস্তাফিজুর রহমান, প্রধান সহকারী-কাম হিসাবরক্ষক আব্দুল কুদ্দুসের বিরুদ্ধেও অভিযোগ পাওয়ার কথা বলেছে দুদক। সিলেটের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের কাযার্লয়ের প্রধান সহকারী নুরুল হক, প্রশাসনিক কমর্কতার্ গৌস আহমেদ, উচ্চমান সহকারী আমান আহমেদ, অফিস সহকারী-কাম কম্পিউটার অপারেটর নেছার আহমেদ চৌধুরী, খুলনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের কাযার্লয়ের ব্যক্তিগত সহকারী ফরিদ হোসেন, অফিস সহকারী মো. মাসুম, প্রধান সহকারী আনোয়ার হোসেনের নাম রয়েছে ওই তালিকায়। এছাড়া বরিশাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের কাযার্লয়ের প্রধান সহকারী মো. রাহাত খান, উচ্চমান সহকারী জুয়েল, রংপুর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের কাযার্লয়ের উচ্চমান সহকারী আজিজুর রহমান, স্টেনোগ্রাফার সাইফুল ইসলাম এবং প্রশাসনিক কমর্কতার্ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে দুদক। কমিশনের একজন কমর্কতার্ বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে দুদকে বহু অভিযোগ জমা হয়েছে। কমিশনের গোয়েন্দা ইউনিট সেসব অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান করছে।’ শেখ হাসিনার নতুন সরকার দুনীির্তর বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে জোর দেয়ার পর চলতি বছরের শুরু থেকে স্বাস্থ্য খাতের দুনীির্তর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে দুদক। এর অংশ হিসেবে গত ২১ জানুয়ারি রাজধানীসহ দেশের ১১টি সরকারি হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে দুদক জানায়, হাসপাতালগুলোর ৪০ শতাংশ চিকিৎসকই কমর্স্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। দুদকের মহাপরিচালক মুনীর চৌধুরী সেদিন বলেন, ‘স্বাস্থ্য সেক্টরে এ অবক্ষয় অত্যন্ত দুঃখজনক। মানবসেবার চেতনা না থাকলে চিকিৎসা সেবা পরিত্যাগ করা উচিত। তবে দায়িত্বে অবহেলার বিষয়ে দুদক কঠোর অবস্থান নেবে। সারা দেশের স্বাস্থ্য সেক্টর দুদকের নজরদারিতে থাকবে।’ এরপর মঙ্গলবার অভিযান চালিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব রক্ষণ কমর্কতার্ আবজাল হোসেন ও তার স্ত্রী রুবিনা খানমের নামে থাকা ২৫টি বাড়ি-প্লট ও জমি জব্দ করে দুদক। দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে আবজাল দম্পতির নামে দেশে-বিদেশে ‘বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের’ তথ্য পাওয়ার পর আদালতের অনুমতি নিয়ে ওই অভিযান চালানো হয় বলে দুদকের জনসংযোগ কমর্কতার্ প্রণব কুমার ভট্টাচায্যর্ জানান।