বিশ্ব ইজতেমা এবার ১৫ থেকে ১৭ ফেব্রæয়ারি

প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
গত বছরের বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত Ñফাইল ছবি
তাবলিগ জামাতের নেতৃত্ব নিয়ে কোন্দল মিটে যাওয়ায় এবারের বিশ্ব ইজতেমার তারিখ ঠিক হয়েছে ১৫ থেকে ১৭ ফেব্রæয়ারি। বৃহস্পতিবার ধমর্ মন্ত্রণালয়ে তাবলিগের দুই পক্ষের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে ধমর্ প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ এই তারিখ ঘোষণা করেন। গত কয়েক বছর দুই পবের্ ভাগ করে দেশের ৬৪ জেলার মানুষের জন্য ইজতেমার ব্যবস্থা করা হলেও এবার এক পবের্ই এই সম্মিলনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে সাংবাদিকদের জানান তিনি। তাবলিগের দুই পক্ষের প্রতিনিধিদের মধ্যে মাওলানা জুবায়েরুল হাসান, মাওলানা ওমর ফারুক, সৈয়দ ওয়াসিফ ইসলাম ও খান শাহাবুদ্দিন নাসিম এবং প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এক পবের্ ইজতেমা করতে গেলে ভিড় সামাল দিতে সমস্যা হবে কি না- এই প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ধাইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব কিছু সামাল দেবে।’ কয়েক লাখ লোকের জমায়েতের কারণে বিশ্ব ইজতেমাকে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম সম্মিলন বলা হয়। প্রতিবছর জানুয়ারি মাসে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন হলেও তাবলিগ জামাতের নেতৃত্বের দ্ব›েদ্ব এবার তা স্থগিত হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে দুই পক্ষের ‘মুরব্বিদের’ নিয়ে বুধবার আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ওই বৈঠকের পর দ্ব›দ্ব মিটে যাওয়ার খবর দিয়ে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাদের বিরোধ মীমাংসা হয়েছে, এখন আর কোনো বিরোধ নেই। ফেব্রæয়ারি মাসে একসঙ্গে ইজতেমা হবে।’ এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ধমর্ মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করে ইজতেমার তারিখ চূড়ান্ত করা হলো। উপমহাদেশে সুন্নি মতাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় সংঘ তাবলিগ জামাতের মূলকেন্দ্র ভারতের দিল্লিতে। মাওলানা সাদের দাদা ভারতের ইসলামি পÐিত ইলিয়াছ কান্ধলভি ১৯২০-এর দশকে তাবলিগ জামাত নামের এই সংস্কারবাদী আন্দোলনের সূচনা করেন। মাওলানা ইলিয়াছের মৃত্যুর পর তার ছেলে মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ এবং তারপর মাওলানা ইনামুল হাসান তাবলিগ জামাতের আমিরের দায়িত্ব পালন করেন। মাওলানা ইনামুলের মৃত্যুর পর একক আমিরের বদলে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার দেয়া হয় একটি শুরা কমিটির ওপর। মাওলানা জুবায়েরের মৃত্যুর পর মাওলানা সাদ আমিরের দায়িত্ব নেন এবং একক নেতৃত্বের নিয়ম ফিরিয়ে আনেন। কিন্তু মাওলানা জুবায়েরের ছেলে মাওলানা জুহাইরুল হাসান তখন নেতৃত্বের দাবি নিয়ে সামনে আসেন এবং তার সমথর্করা নতুন করে শুরা কমিটি গঠনের দাবি জানান। কিন্তু সাদ তা প্রত্যাখ্যান করলে বিরোধ বড় আকার ধারণ করে। নেতৃত্ব নিয়ে দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ এবং দেওবন্দ মাদ্রাসার অনুসারীদের মধ্যে এই দ্ব›দ্ব প্রকট আকার ধারণ করে গত বছর জানুয়ারিতে ঢাকায় বিশ্ব ইজতেমার সময়। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করে আসা সাদ কান্ধলভি বিরোধীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। শেষ পযর্ন্ত ইজতেমায় অংশ না নিয়েই তাকে ঢাকা ছাড়তে হয়। এরপর দুই পক্ষের কোন্দল চলতে থাকলে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে নিধাির্রত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পবর্ গত নিবার্চনের আগে স্থগিত করা হয়। কিন্তু তার মধ্যেই সাদপন্থিরা ডিসেম্বরের শুরুতে পঁাচ দিনের জোড় ইজতেমা করার ঘোষণা দিলে দেওবন্দপন্থিরা টঙ্গীর ইতজেমা মাঠ দখল করে পাহারা বসায়। ১ ডিসেম্বর ভোর থেকে সাদের অনুসারী শত শত মানুষ টঙ্গীর পথে রওনা হলে পরিস্থিতি বিস্ফোরণ¥ুখ হয়ে ওঠে। একপযাের্য় দুই পক্ষের লোকজন বঁাশ ও লাঠিসেঁাটা নিয়ে সংঘষের্ জড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে পড়ে প্রাণ যায় সত্তর বছর বয়সী এক বৃদ্ধের, দুই শতাধিক মানুষ আহত হন। পরে দুইপক্ষের অনুসারীদের বের করে দিয়ে ইজতেমা মাঠের নিয়ন্ত্রণ নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।