কবিরহাটের ঘটনা

ধষের্ণর আলামত পাননি চিকিৎসক গ্রেপ্তার আরও ১

প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় মা ও সন্তানদের জিম্মি করে নারীকে (২৯) ধষের্ণর আলামত পায়নি মেডিকেল বোডর্। বুধবার ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদন জেলা পুলিশ সুপারের কাযার্লয়ে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষায় আলামত না পাওয়ার খবরে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন নিযার্তনের শিকার নারী। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে জামাল উদ্দিন (২৮) নামে আরও এক ব্যক্তিকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুনবতি ইউনিয়নের দশবাহা এলাকার একটি বাড়ি থেকে জামাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার তদন্ত কমর্কতার্ ও গোয়েন্দা পুলিশের পরিদশর্ক জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এই মামলার প্রধান আসামি জাকের হোসেন ওরফে জহির আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে যে পঁাচজনের নাম বলেছিলেন, জামাল তাদের একজন। ঘটনার পর থেকে জামাল আত্মগোপনে ছিলেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ধষের্ণর আলামত না পাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক মো. খলিল উল্যাহ বলেন, গত এক বছরে তারা এক শর বেশি ধষের্ণর ডাক্তারি পরীক্ষা করেছেন। এর মধ্যে আলামত পেয়েছেন মাত্র একটিতে। সেটি গত ৩০ ডিসেম্বর ভোটের রাতে সুবণর্চরের গণধষের্ণর ঘটনাটি। মামলার বাদী নিযার্তনের শিকার নারী তিনজনের দ্বারা ধষের্ণর শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন। এ মামলার প্রধান আসামি জাকের হোসেন ওরফে জহিরও আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে তিনিসহ চারজন ধষের্ণর ঘটনায় জড়িত বলে উল্লেখ করেছেন। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ নিযাির্তত নারীর দেবরসহ তিন আত্মীয়কেও গ্রেপ্তার করেছে। ডাক্তারি পরীক্ষায় আলামত না পাওয়ার খবরে নিযার্তনের শিকার নারী বুধবার সন্ধ্যায় বলেন, তিন ব্যক্তি তার মুখে কম্বল চাপা দিয়ে ধষর্ণ করেছেন, এটা নিশ্চিত। তার শরীরে এখনো নিযার্তনের যন্ত্রণা, ঠিকমতো হঁাটতেও পারেন না। ওই নারী বলেন, ঘটনার সময় তার পরনে যে কাপড় ছিল, তা থানায় মামলার পর ওই দিনই কবিরহাট থানার ওসির কাছে জমা নিয়েছেন। হাসপাতালে ডাক্তার দুই দফায় তার কাছ থেকে আলামত সংগ্রহ করেছেন। ওই নারীর স্বামী বলেন, একজন নারী ধষের্ণর শিকার না হয়ে কখনো জনসমক্ষে এ ধরনের ঘটনা প্রকাশ করেন না। তার স্ত্রীকে ধষর্ণসহ যে নিযার্তন চালানো হয়েছে, এখনো তিনি তা বয়ে বেড়াচ্ছেন। স্ত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সুযোগ থাকলে প্রয়োজনে তাকে পুনরায় পরীক্ষা করে দেখা হোক। বাদীপক্ষের আইনজীবী রবিউল হাসান বলেন, ডাক্তারি পরীক্ষায় ধষের্ণর আলামত পাওয়া না গেলেও কোনো সমস্যা নেই। ধষের্ণর ঘটনায় অসুস্থতার বিষয়টি প্রমাণিত। এজাহারভুক্ত আসামি জাকেরও দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ছাড়া এ-সংক্রান্ত আরও বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণও এরই মধ্যে সংরক্ষণ করা হয়েছে। তিন আত্মীয় রিমান্ডে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার নিযাির্তত নারীর তিন আত্মীয়কে বুধবার চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে ডিবি। মামলার তদন্ত কমর্কতার্ ও ডিবির পরিদশর্ক জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিন আসামিকে কারাগার থেকে ডিবি কাযার্লয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ১৮ জানুয়ারি দিবাগত রাতে ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে তিন সন্তান ও মাকে জিম্মি করে এক গৃহবধূকে (২৯) গণধষর্ণ করে দুবৃর্ত্তরা। ধষের্ণর শিকার নারীর বণর্না অনুযায়ী, পুলিশ এ ঘটনায় জাকের হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। জাকের ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়াডর্ যুবলীগের নেতা হিসেবে পরিচিত। যদিও আওয়ামী লীগ দাবি করেছে, তার সঙ্গে দলের কোনো সম্পকর্ নেই।