আমরা যা যা করার তাই করব: ড. কামাল

প্রকাশ | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহŸায়ক ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ৩০শে ডিসেম্বরের নিবার্চন প্রতারণামূলক। এটি জনগণের সাথে প্রতারণা। জনগণ এই নিবার্চন গ্রহণ করেনি। জাতীয় সংসদ নিবার্চনের নামে জনগণের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়াদীর্র পুত্র পরলোকগত রাশেদ সোহরাওয়াদীর্র মৃত্যুতে আয়োজিত এক স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। ড. কামাল হোসেন বলেন, নিবার্চনের পরের দিন ‘আমরা ৫ বছরের জন্য নিবাির্চত হয়েছি’ এটা বলা প্রতারণামূলক। দেশের ১৬ কোটি মানুষ এই ফলাফল মেনে নেয়নি। এখন আমাদের যা যা করার আমরা তাই করব। ৩০ ডিসেম্বরের নিবার্চনকে জনগণ ভঁাওতাবাজি বলছে বলেও উল্লেখ করেন ড. কামাল হোসেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত স্মরণসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ, ড. মইনুল হোসেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, গণফোরাম নেতা মোস্তফা মহসীন মন্টু, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও মোকাব্বির খান প্রমুখ। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, জনগণকে সঙ্গে না নিলে দেশে সুষ্ঠু রাজনীতি থাকতে পারে না। কিছু দিন আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ১২ লাখ রোহিঙ্গার যাওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই। তাদের মধ্যে ৫ লাখ তরুণ-তরুণী, তাদের কোনো ইচ্ছা আকাক্সক্ষা নেই, লেখাপড়া নেই। সুতরাং এটাই জঙ্গিবাদ উত্থানের একটা জায়গা হতে পারে। তিনি আরও বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি পশ্চিমের দিকে তাকিয়ে পূবের্ যান, ভারত যদি না চায় তাহলে সমস্যার সমাধান হবে না। আজকে ভারতপ্রীতি করে লাভ নাই, ভারত আমাদের কাছ থেকে শুধু নেবে। আপনিই তো বলেছেন ‘ভারতকে আর কত দেব?’ কিন্তু আপনি তো দিয়েই যাচ্ছেন, এখন পাঠাচ্ছেন ১৮০০ কমর্কতার্।’ শোকসভায় জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব বলেন, ‘যারা কারাগারে আছে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া তাদের মুক্ত করা যাবে না। আজকে যারা ক্ষমতায় আছে তাদের মধ্যে সেই মনুষ্যত্ব নেই।’ তিনি বলেন, ‘১৬ কোটি মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। কিন্তু কোথাও কেউ প্রতিবাদ করল না। এটা কি শুধু কোনো রাজনৈতিক নেতা করবে, কোনো রাজনৈতিক দল করবে? এটা হয় না।’ জনগণের প্রতি আহŸান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সারা দেশে বতর্মানে এক লাখ লোক কারাগারে আছে। এদেরকে মুক্ত করতে আসুন ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করি।’ সদ্য কারামুক্ত ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন বলেন, ‘আমলাতান্ত্রিক সহযোগিতায় আওয়ামী লীগ জনগণকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। আসলে তারা এটা করে নিজেরা নিজেদের বঞ্চিত করেছে। এটা স্বাধীন দেশের মানুষের জন্য লজ্জার।’ তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক এ উপদেষ্টা বলেন, ‘রাজনীতি এখন ব্যবসা হয়ে গেছে। এটা রাজনীতি নয়। দেশের রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের রাজনীতিতে নেয়া হয় না। এখানে পুলিশও জড়িত হয়েছে। তারা দেশের মানুষ পেটায়। আজকে তারা মনে করে তাদের ছাড়া ড. কামালরা কি দেশ চালাতে পারবে? এখন দেশে যা চলছে তা আমলাতান্ত্রিকতা। শেখ হাসিনার কিছু করার নেই।’ রাশেদ সোহরাওয়াদীর্র লাশ দেশে না আনা প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার মঈনুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার এখন ক্ষমতায়। চাইলে রাশেদের লাশ দেশে আনতে পারত। কেন যে আনা হলো না- খুব কষ্ট হচ্ছে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান বলেন, ‘দেশে উদার গণতন্ত্র অনুপস্থিত। রাজনীতির নামে এখন চারদিকে হিংসা আর বিদ্বেষ।’ সবার প্রতি আহŸান জানিয়ে বিএনপির সাবেক এই মন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশের কল্যাণে আসুন রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ভুলে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনি।’