তিন ম্যাচের প্রথম ওয়ানডে

নিউজিল্যান্ডে আজ সকালে মাঠে নামছে বাংলাদেশ

প্রকাশ | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ঘরের মাঠে ২০১০ সালের পর নিউজিল্যান্ডের কাছে হারেনি বাংলাদেশ। তারাই আবার নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কখনোই জয়ের দেখা পায়নি। তবে ২০১৭ সালে দুই দলের সবশেষ দেখায় জিতেছিল টাইগাররা, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কাডিের্ফর সেই জয় স্মরণীয় হয়ে আছে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে। সেই সুখস্মৃতি সঙ্গী করেই আজ নেপিয়ারে বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে কিউইদের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে মাশরাফি বিন মতুর্জার দল। অনেকের মত, নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বিজয়কেতন উড়ানোর মোক্ষম সুযোগ এটাই। কিন্তু আঙুলে চোট পেয়ে সাকিব আল হাসানের ছিটকে যাওয়াÑ শঙ্কিত টাইগার শিবির। এরপরও প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূণর্ একটা সিরিজের প্রত্যাশা সবার। ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সম্প্রতি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ, সাকিবের অনুপস্থিতিও টাইগাররা বেশ আত্মবিশ্বাসী। তাছাড়া ৫০ ওভারের ম্যাচে নিজেদের শক্তির জানান বহুবারই দিয়েছে স্টিভ রোডসের শিষ্যরা। এই বাংলাদেশকে হারাতে নিউজিল্যান্ডকে মাঠে নিংড়ে দিতে হবে নিজেদের সেরাটা। দলটির তারকা ওপেনার মাটির্ন গাপটিল যেমন বলেছেন, ‘মানসম্পন্ন একটা দল বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই সেটা তারা দেখিয়েছে, যেখানে শেষ ম্যাচে আমাদের হারিয়ে দিয়েছিল তারা।’ ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড বরাবরই প্রবল প্রতিপক্ষ। ২০১৫ বিশ্বকাপের পর এখন পযর্ন্ত জয়-পরাজয়ের হিসেবে নিজেদের আঙিনায় সব থেকে সফল তারাই। তবে সবশেষ সিরিজে ভারতের কাছে নাস্তানাবুদ হয়েছে কেন উইলিয়ামসনের দল। পঁাচ ম্যাচের সিরিজ হেরেছে ৪-১ ব্যবধানে। হ্যামিল্টনে একমাত্র জয়টা তারা পেয়েছিল ভারতকে ৯২ রানে অলআউট করে। বাকি চার ম্যাচে ঠিকঠাক প্রতিদ্ব›িদ্বতাও গড়তে পারেনি কিউইরা। তবে ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দেই আছেন উইলিয়ামসন, রস টেলর আর টম লাথাম। টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট, ম্যাট হেনরিরা বল হাতেও খারাপ করেননি। ওয়ানডেতে ভরাডুবির পর কিউইরা ভালো করেছে টি২০ সিরিজে। ২-১ ব্যবধানে জয়ের টাটকা স্মৃতি নিয়েই বাংলাদেশের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে তারা। তাছাড়া নিজেদের মাঠ আর চেনা কন্ডিশনের বাড়িত সুবিধাও রয়েছে তাদের। তবে নেপিয়ারের ম্যাকলিন পাকের্র পেসসহায়ক পিচ নিয়ে কিছুটা অস্বস্তি আছে কিউই শিবিরে। বাড়তি পেসার হিসেবে লুকি ফাগুর্সনকে খেলাতে পারে স্বাগতিকরা। বাউন্সি আর গতিময় পিচে পেস বোলিংয়ের বিপক্ষে বরাবরই অস্বস্তিতে থাকে বাংলাদেশ। ম্যাকলিন পাকর্ তাই কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেতে পারে টাইগারদের জন্যও। এই ভেন্যুতে বাংলাদেশের অতীতও সুখকর নয়। এখানে এখন পযর্ন্ত দুটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে টাইগাররা। দু’দফায় নিউজিল্যান্ড রান তুলেছে তিনশ’র ওপরে। বাংলাদেশ হেরেছে ১০২ ও ১৪৬ রানের বড় ব্যবধানে। দুই ম্যাচেরই ফল জানাচ্ছেÑ একতরফা ভাবে হেরেছে বাংলাদেশ। অথার্ৎ নো কনটেস্ট ম্যাচ। এখানে এখন পযর্ন্ত অনুষ্ঠিত একমাত্র টি২০ ম্যাচেও বাংলাদেশ হেরেছে বড় ব্যবধানে, ৬ উইকেটে। এক তামিম ইকবাল ছাড়া এই মাঠে টাইগার শিবিরের কোনো ব্যাটসম্যানই আলো ছড়াতে পারেননি। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধ কন্ডিশন, আগের দুই সফরে নাস্তানাবুদ হয়ে ফেরা, ২১ ম্যাচের কোনোটিতেই জয় না পাওয়া; সবকিছু মিলিয়ে চ্যালেঞ্জটা টের পাচ্ছেন টাইগার কোচ রোডস। তবে এই ইংলিশম্যান আস্থা রাখছেন তার শিষ্যদের সামথের্্য, ‘আমরা জানি, নিউজিল্যান্ড সিরিজটা কঠিন হতে চলেছে। আমরা তাই আন্ডারডগ। তবে আমার মনে হয়, নিউজিল্যান্ড এটা জানেÑ আমাদের হারাতে খুব ভালো মানের ক্রিকেট খেলতে হবে তাদের।’ সাকিবের অনুপস্থিতিতে ব্যাটিংয়ে দলপতি মাশরাফির মূল ভরসা তামিম ইকবাল। দুরন্ত ছন্দে থাকা বাহাতি ওপেনারের সঙ্গে আজ ইনিংসের সূচনায় লিটন দাসকেই দেখা যাওয়ার কথা। সৌম্য সরকার আছেন তিন নম্বরের ভাবনায়। মিডল অডাের্র মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদই বড় ভরসার জায়গা। একাদশে সাকিবের জায়গাটা সম্ভবত নিতে যাচ্ছেন সাব্বির রহমান। পেস বোলিংয়ে মূল দায়িত্বটা মাশরাফির সঙ্গে সামলাবেন মুস্তাফিজুর রহমান আর রুবেল হোসেন। সিমিং অলআউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও আছেন। মেহেদী হাসান মিরাজ সামলাবেন স্পিন বিভাগ। নিজ নিজ জায়গা থেকে সবাই পারফমর্ করলে নিউজিল্যান্ডের কঠিন চ্যালেঞ্জটা জয় করা সম্ভব, এমনটাই মনে করছেন দলপতি মাশরাফি। সেই বিশ্বাস নিয়েই কিউইদের মাটিতে প্রথম জয়ের খেঁাজে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।