কয়লা সংকটে বন্ধ হলো বাঁশখালীর বিদু্যৎকেন্দ্র
প্রকাশ | ১০ জুন ২০২৩, ০০:০০
রিয়াদুল ইসলাম রিয়াদ, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম)
কয়লার মজুত শেষ হয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামের বাঁশখালীর এস এস পাওয়ার পস্ন্যান্ট পরীক্ষামূলক উৎপাদনে আসার চতুর্থ দিনেই বন্ধ হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিট থেকে বিদু্যৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। তবে কবে নাগাদ ফের উৎপাদন চালু হবে তা জানাতে পারেননি কর্তৃপক্ষ।
পিডিবি চট্টগ্রাম বিতরণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম বলেন, 'কয়লার মজুত শেষ হয়ে যাওয়ায় বাঁশখালী এসএস পাওয়ার পস্ন্যান্ট বিদু্যৎকেন্দ্রটি গত বৃহস্পতিবার বন্ধ হয়ে যায়। আপাতত বিদু্যতের ঘাটতি খুব হবে না। গরম অনেকটা কমে গেছে। ১৩ জুনের পর যেকোনো দিন এই বিদু্যৎকেন্দ্রে উৎপাদন শুরু হতে পারে।'
এদিকে ৫ জুন দুপুরে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের পায়রা বিদু্যৎকেন্দ্রের উৎপাদন কয়লা সংকটে পড়ে বন্ধ হয়ে যায়। এর আগেই বিদু্যৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) বাঁশখালী এসএস পাওয়ার পস্ন্যান্ট কর্তৃপক্ষকে বিদু্যৎ উৎপাদন শুরু করতে অনুরোধ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৪ জুন দিবাগত মধ্যরাতে উৎপাদনে আসে এসএস পাওয়ার পস্ন্যান্ট। এরপর এই বিদু্যৎকেন্দ্র থেকে ৩০০-৩৭৫ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদু্যৎ সরবরাহ করা হয়েছে। এদিকে এসএস পাওয়ার পস্ন্যান্ট বিদু্যৎকেন্দ্র দুটি ইউনিটের উৎপাদন সক্ষমতা মোট ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। এর মধ্যে ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ইউনিট পিডিবির অনুরোধে চালু করা হয়েছিল।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশ (পিজিসিবি) জানায়, এসএস পাওয়ার পস্ন্যান্ট বিদু্যৎকেন্দ্রটি বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হতে এখনো দুই মাস লাগবে। এর প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের মদুনাঘাট সাবস্টেশন থেকে মেঘনাঘাট সাবস্টেশন পর্যন্ত যে ২১৪ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন তৈরি হচ্ছে, সেটির এখনো ৭ কিলোমিটার কাজ বাকি আছে। এই সঞ্চালন লাইন পুরোপুরি তৈরি না হওয়া পর্যন্ত পিডিবি এসএস পাওয়ারকে বাণিজ্যিক উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া হবে না।'
এ বিষয়ে এসএস পাওয়ারের ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর মো. মোস্তাফিজুর রহমান
বলেন, 'পিডিবির অনুরোধে আমরা গত ৪ তারিখ মধ্যরাত থেকে বিদু্যৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করে আসছিলাম। কিন্তু কয়লার জোগান শেষ হয়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার রাত ১০-১১টার মধ্যে বিদু্যৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। চালু করার পর এই বিদু্যৎকেন্দ্র থেকে সর্বোচ্চ ৩৭৫ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদু্যৎ সরবরাহ করা হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের বিদু্যৎকেন্দ্রের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু না হলে কোনো লাভ নেই। বিদু্যৎ উৎপাদনের জন্য আমরা কয়লা পোড়ালে একই সঙ্গে অন্যান্য আনুষঙ্গিক যে খরচ হচ্ছে- সেটা আমরা পাব না। আমরা বাণিজ্যিক উৎপাদনে না আসা পর্যন্ত বিদু্যৎকেন্দ্র চালাতে চাচ্ছি না। কিন্তু পিডিবির অনুরোধে তীব্র লোডশেডিং সামাল দিতে চালিয়েছিলাম। তা ছাড়া আমাদের এখন কয়লার মজুতও শেষ হয়ে গেছে। এই মাসের ১৮ তারিখের মধ্যে কয়লার প্রথম চালান আসতে পারে। প্রাথমিকভাবে ৬০ হাজার টন কয়লা আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।'