৯ বছর পর মধুর ক্যানটিনে ছাত্রদল, পুনঃতফসিল দাবি

প্রকাশ | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে বুধবার ডাকসু নিবার্চন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান -যাযাদি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নিবার্চন সামনে রেখে প্রায় নয় বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে যান জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকমীর্রা। বুধবার সকালে ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতাকমীর্ মধুর ক্যানটিনে যান। পরে সেখানে যান সংগঠনটির কেন্দ্রীয় দুই শীষর্ নেতাও। সকাল ১০টা ৪০ মিনিট থেকে দুপুর ১২টা ৪৭ মিনিট পযর্ন্ত মধুর ক্যানটিনে অবস্থান করেন তারা। ডাকসু নিবার্চনের সবের্শষ পরিস্থিতি ও তাদের অবস্থান জানাতে মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদল। ডাকসু নিবার্চনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নিমাের্ণ নিবার্চন তিন মাস পিছিয়ে দেয়া, হলের পরিবতের্ একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র করাসহ যে সাত দফা দাবিতে তারা উপাচাযের্ক স্মারকলিপি দিয়েছিল, সেগুলোই পুনব্যর্ক্ত করে সংগঠনটি। এ ছাড়া ডাকসু নিবার্চনের ঘোষিত তফসিল বাতিল করে পুনঃতফসিল দাবি করে ছাত্রদল। সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে মধুর ক্যানটিনে ঢোকেন ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ। ছাত্রদলের মধুর ক্যানটিনে যাওয়ার খবর পেয়ে আগে থেকেই মধুর ক্যানটিনে জড়ো হতে শুরু করেন ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল পযাের্য়র নেতাকমীর্রা। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ছাত্রদলের নেতাকমীের্দর মধুর ক্যানটিনে স্বাগত জানান। মধুর ক্যানটিনে তখন ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, সহসভাপতি তুহিন কান্তি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রগতি বমর্ণ তমা। তাদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেন ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দুই শীষর্ নেতা। এরপর কয়েকটি টেবিল একসঙ্গে করে নেতাকমীের্দর নিয়ে মধুর ক্যানটিনে বসেন তারা। এ সময় তাদের তিন দিক থেকে ঘিরে বিরতিহীনভাবে ¯েøাগান দিতে থাকেন ছাত্রলীগের নেতাকমীর্রা। বেলা ১১টা ২০ মিনিটে মধুর ক্যানটিনে যান ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান। আর ১২টার দিকে যান কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় পযাের্য়র চার শীষর্ নেতাকে উদ্দেশ করে ছাত্রলীগের নেতাকমীর্রা ‘অছাত্রদের আস্তানা, ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘ক্যাম্পাসে রাজনীতি, ছাত্ররাই করবে’, ‘বয়স যাদের পঁয়তাল্লিশ, ক্যাম্পাসে কেন ঘুরিস?’ ইত্যাদি বলে ¯েøাগান দিতে থাকেন। ছাত্রদলের নেতাকমীর্রাও ‘খালেদা জিয়া, জিয়া খালেদা’ বলে পাল্টা ¯েøাগান দেন। একপযাের্য় ছাত্রদলের এক নেতা ছাত্রলীগ নেতাকমীের্দর উদ্দেশ করে ‘আমাদের ক্যাম্পাস, আমরাই থাকব’ বলে ¯েøাগান দিতে গেলে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান তাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘চুপ করে বসে চা খাও।’ সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদলের সাত দফা দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান। সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, আজ থেকে তঁাদের নতুন যাত্রা শুরু হলো। এখন থেকে ক্যাম্পাসে তাদের অবস্থান অব্যাহত থাকবে। আর রাজিব আহসান বলেন, তাদের দাবি মানতে তারা প্রশাসনকে বাধ্য করার চেষ্টা করবেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আন্তরিকতা দেখেই তারা সিদ্ধান্ত নেবেন নিবার্চনে যাবেন কি না। ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার বলেন, ‘মধুর ক্যানটিন আমাদের আবেগের জায়গা। অনেক দিন পর এখানে এলাম। প্রতিপক্ষের কাছ থেকে কিছুটা সহযোগিতার মনোভাব আমরা পেয়েছি। তবে আমাদের প্রতি যেসব আক্রমণাত্মক বক্তব্য তারা রেখেছেন, সেগুলো না হলে আরও ভালো হতো। এখন থেকে আমরা নিয়মিত ক্যাম্পাসে, মধুর ক্যানটিনে আসব।’