প্রতিরক্ষা চুক্তি সংবিধানসম্মত নয় : সংসদে মেনন

প্রকাশ | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:২৫

অনলাইন ডেস্ক
এদিকে সৌদি আরবের সঙ্গে সরকারের প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪দলীয় জোটের শরিক দল ওয়াকার্সর্ পাটির্র সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তাকে সমথর্ন জানিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন জাতীয় পাটির্র ফখরুল ইমাম। বৃহস্পতিবার সংসদে পয়েন্ট অব অডাের্র দঁাড়িয়ে তারা এই প্রশ্ন তোলেন। এ সময় সংসদে সভাপতির আসনে ছিলেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। রাশেদ খান মেনন বলেন, এই চুক্তি সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘষির্ক। তার এই বক্তব্যের প্রতি সমথর্ন জানিয়ে বিরোধী দল জাতীয় পাটির্র সাংসদ ফখরুল ইমাম বলেছেন, সংসদ চলমান রয়েছে। অথচ এই চুক্তির বিষয়ে সংসদকে অবহিত করা হয়নি। এর মাধ্যমে সংসদকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। তারা এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে সংসদে ৩০০ বিধিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যাখ্যা ও স্পিকারের রুলিং দাবি করেন। রাশেদ খান মেনন তার বক্তব্যে সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে বলেন, এই চুক্তির আওতায় ইয়েমেন সীমান্তে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাইন অপসারণের কাজ করবেন। এটি বিরোধপূণর্ এলাকা। সবাই জানে ইয়েমেনে সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র মিলে প্রতিমুহূতের্ আক্রমণ চালাচ্ছে হুতি বিদ্রোহীদের প্রতিহত করতে। জাতিসংঘের মহাসচিব স্পষ্ট করে বলেছেন, ইয়েমেনের ঘটনা এখন পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ মানবিক বিপযর্য়। সেখানে আমাদের সেনাবাহিনী সীমান্তে মাইন অপসারণ করবে কার জন্য? যারা একদিন কুয়েতে মাইন অপসারণ করে সুনাম কুড়িয়েছিল, তারা কেন আজ মাইন অপসারণের নামে সেখানে জীবন দেবে। বাংলাদেশের সংবিধান যেটাকে অনুমোদন করে না। কেবল তাই নয়, ইয়েমেনের সীমান্তে যখন আমাদের সেনাবাহিনী থাকবে, তখন স্বাভাবিকভাবেই একটি বিরোধপূণর্ সম্পকর্ সৃষ্টি হবে। সংবিধানে বলা আছে, কোনো বিরোধপূণর্ অবস্থানে বাংলাদেশ অংশ নেবে না। সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘জাতীয় সাবের্ভৗমত্ব ও সমতার প্রতি শ্রদ্ধা অন্যান্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, আন্তজাির্তক বিরোধের শান্তিপূণর্ সমাধান এবং আন্তজাির্তক আইনের ও জাতিসংঘের সনদে বণির্ত নীতিসমূহের প্রতি শ্রদ্ধাÑ এই সকল নীতি হইবে রাষ্ট্রের আন্তজাির্তক সম্পকের্র ভিত্তি এবং এই সকল নীতির ভিত্তিতে রাষ্ট্র (ক) আন্তজাির্তক সম্পকের্র ক্ষেত্রে শক্তিপ্রয়োগ পরিহার এবং সাধারণ ও সম্পূণর্ নিরস্ত্রীকরণের জন্য চেষ্টা করিবেন; (খ) প্রত্যেক জাতির স্বাধীন অভিপ্রায় অনুযায়ী পথ ও পন্থার মাধ্যমে অবাধে নিজস্ব সামাজিক, অথৈর্নতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিধার্রণ ও গঠনের অধিকার সমথর্ন করিবেন; এবং (গ) সাম্রাজ্যবাদ, ঔপনিবেশিকতাবাদ বা বণৈর্বষম্যবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বের সবর্ত্র নিপীড়িত জনগণের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামকে সমথর্ন করিবেন।’ মেননের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে ফখরুল ইমাম বলেন, টেলিভিশনে দেখেছি একটা সামরিক চুক্তি হচ্ছে। এটা সংসদে আলোচনা করলে কী অসুবিধা ছিল? পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগেই জানতেন এই চুক্তি হবে। সংসদে না জানিয়ে, সংসদকে পাশ কাটিয়ে এগুলো করা কতটুকু যুক্তিযুক্ত?