প্রাথমিকের পেনশন সুবিধা ১৫ দিনেই

প্রকাশ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কমর্চারীদের পেনশন সুবিধা সহজীকরণ ও দ্রæত প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে কেউ অবসরে যাওয়ার দুই মাস আগেই সব ডকুমেন্ট প্রস্তুত হয়ে যাবে। এরপর পরবতীর্ ১৫ দিনের মধ্যে পেনশন সুবিধা প্রদান করা হবে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। শিক্ষকদের অভিযোগ, দীঘির্দন ধরে দালালদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের পেনশন প্রদান কাযর্ক্রম। এ কারণে সারা জীবন শিক্ষকতা করে অবসরে গিয়ে নিজের প্রাপ্ত অথর্ থেকে দালালদের ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পযর্ন্ত ঘুষ দিয়ে ফাইল ছাড়াতে হচ্ছে। টাকা না দিলে শিক্ষকদের পেনশন ফাইল চলে না। যেন লাল ফিতায় বন্দি থাকার উপক্রম হয়। একই রুমের এক টেবিল থেকে আরেক টেবিলে যেতেও নাকি মাস পেরিয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়েই উৎকোচ দিয়ে ফাইল ছাড়ান তারা। দেশের বিভিন্ন জেলার জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অবসরে যাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে সব সুবিধা বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও নানাভাবে সময়ক্ষেপণ করা হয়। অনেক সময় ছয় মাস থেকে এক বছর পরও পেনশন সুবিধা দেয়া হয়ে থাকে। শিক্ষকরা জানান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে অবসর সুবিধার ফাইল পাস করা হয়ে থাকে। কিন্তু এসব অফিসের হিসাব রক্ষকসহ তৃতীয়-চতুথর্ শ্রেণির কমর্চারীরা ঘুষ না পেলে ফাইল আটকে রাখেন। কতিপয় শিক্ষক এসব কমর্চারীর সঙ্গে যোগসাযোগে অবসর সুবিধা দ্রæত পাইয়ে দিতে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পযর্ন্ত আদায় করে উভয়ে ভাগবাটোয়ারা করে নেন। যারা টাকা দিচ্ছেন তাদের কাজ দ্রæত হচ্ছে, আর যারা টাকা দিতে আপত্তি জানাচ্ছেন তাদের ফাইল মাসের পর মাস টেবিলেই পড়ে থাকছে। এসব বিষয় আমলে নিয়ে শিক্ষকদের দ্রæত পেনশন সুবিধা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে পাইলট প্রকল্প হিসেবে একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে শিক্ষকদের সব তথ্য-উপাত্ত থাকবে। কোনো শিক্ষক অবসরে যাওয়ার দুই মাস আগেই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট তৈরি হয়ে যাবে। পেনশন তুলতে আর কোনো ভোগান্তি বা কারও দ্বারে ঘুরতে হবে না, অথবা কাউকে আর উৎকোচ দিতে হবে না। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে সব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে অবসরে যাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে শিক্ষকের সব সুবিধা বুঝিয়ে দেয়া হবে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে একটি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ কাযর্ক্রম বাস্তবায়নে পঁাচ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।