ডাকসু নিবার্চন

‘কোটা’র ইমেজ কাজে লাগাতে চায় অন্যরা

‘মিনি পালাের্মন্ট’ খ্যাত ডাকসু নিবার্চনে বড় ফ্যাক্টর এবার কোটা আন্দোলনকারীরা। সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল হওয়ায় শিক্ষাথীের্দর মধ্যে তাদের গ্রহণযোগ্যতাও রয়েছে

প্রকাশ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
দীঘর্ প্রতীক্ষার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সংসদ (ডাকসু) নিবার্চনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ছাত্রসংগঠনগুলোতে চলছে এখন নিবার্চনের প্রস্তুতি। মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করার সময় ঘনিয়ে আসায় প্রাথির্তার প্যানেল চ‚ড়ান্ত করতে চলছে জোর চেষ্টা। জোটবদ্ধ নিবার্চনের মাধ্যমে জয়লাভ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলো। তবে ‘মিনি পালাের্মন্ট’ খ্যাত ডাকসু নিবার্চনে বড় ফ্যাক্টর হয়েছে কোটা আন্দোলনকারীরা। সাম্প্রতিক সময় আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল হওয়ায় সাধারণ শিক্ষাথীের্দর মধ্যে গ্রহণযোগ্যতাও রয়েছে তাদের। সাধারণ শিক্ষাথীের্দর এই জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে ডাকসু নিবার্চনে জয়ী হতে তৎপরতা শুরু করেছে অধিকাংশ ছাত্রসংগঠন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফমর্ বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহŸায়ক হাসান আল মামুন বলেন, ‘নিবার্চনের ব্যাপারে অধিকাংশ ছাত্রসংগঠনগুলো আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। আমরা এখনো চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেইনি।’ ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ডাকসুতে মোট ২৫টি পদ সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহ-সাধারণ সম্পাদক, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক, কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক, আন্তজাির্তক বিষয় সম্পাদক, সাহিত্য সম্পাদক, সংস্কৃতি সম্পাদক, ক্রীড়া সম্পাদক, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক, সমাজসেবা সম্পাদক এবং ১৩ সদস্যপদে এবার নিবার্চন অনুষ্ঠিত হবে। মনোয়ন ফরম বিক্রি শুরু হবে ১৯ ফেব্রæয়ারি। চলবে ২৫ ফেব্রæয়ারি পযর্ন্ত। সূত্র জানায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া কয়েকজন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় পযার্য় থেকে যোগাযোগ করা হয় জোটবদ্ধ নিবার্চনের জন্য। যদিও আলোচনা থেকে চ‚ড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকের ঘটনায় ছাত্রলীগের একটি অংশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। শহীদ সাজের্ন্ট জহরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের আহŸায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল লিখেন, ‘ভোটে জেতার জন্য যদি শিবির নুরু-রাশেদের সঙ্গে আপস করা লাগে, তাহলে সংগঠন হিসেবে আমাদের আর কি বাকি থাকল? এতে আমাদের সংগঠনের অভ্যন্তরীণ দেউলিয়াত্ব প্রমাণিত হয়। যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কারও সঙ্গে অঁাতাত করে নিবার্চনে জিততে হয়, তাহলে এমন ডাকসু নিবার্চন আমি চাই না। আশা করি, এমনটি হবে না। যদি এমনটি হয় তাহলে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্মরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি নামে আলাদা প্যানেল দেবে।’ অন্যদিকে ছাত্রদল, ছাত্র ফেডারেশনসহ প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকমীর্রাও আন্দোলন ও প্যানেল নিয়ে কোটা আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন স্তরের নেতাকমীের্দর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। ছাত্র ফেডারেশনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির বলেন, ‘আমরা জোটবদ্ধভাবে প্রগতিশীল জোটের ব্যানারে নিবার্চন করব। সেখানে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নিয়েও আলোচনা চলছে। তবে কোনো কিছুই চ‚ড়ান্ত হয়নি।’ কোটা আন্দোলনকারীদের যুগ্ম-আহŸায়ক নূরুল হক নূর বলেন, ‘নিবার্চন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের জন্য পরিবেশ সৃষ্টির আন্দোলনে আমরা বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। প্রাথির্তা প্যানেল নিয়ে অধিকাংশ সংগঠন আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে।’ আহŸায়ক হাসান আল মামুন বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ভোট কেন্দ্র বাইরে করাসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়েছি। কিন্তু আমাদের দাবি মানা হয়নি। আমরা দ্রæত দাবি মেনে নেয়ার আহŸান জানাই। আর নিবার্চনে আমাদের প্যানেল থাকবেÑ এটা চ‚ড়ান্ত। জোট করা নিয়ে আলোচনা চলছে।’