বদিকে দিয়ে মাদক ও শাজাহান খানকে দিয়ে দুর্ঘটনা রোধ কতটা সম্ভব, সংসদে প্রশ্ন

প্রকাশ | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সড়কে দুর্ঘটনারোধে সুপারিশমালা প্রণয়নে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানকে প্রধান করে গঠিত ১৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি নিয়েও সংসদে প্রশ্ন উঠেছে। সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) সংসদ সদস্য মো. ফখরুল ইমাম সম্পূরক প্রশ্নে বলেন, 'বদিকে দিয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ, শাজাহান খানকে দিয়ে সড়ক নিয়ন্ত্রণ। গতবার শাজাহান খানের একটা হাসি নিয়ে কতকিছু ঘটল। সেই শাজাহান খানকে প্রধান করে গঠিত কমিটি সরকারের প্রতিশ্রম্নতি বাস্তবায়নে কতটা সক্ষম হবে?' এই প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়ক দুর্ঘটনারোধে সুপারিশমালা প্রণয়নের জন্য শাজাহান খানকে প্রধান করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। রোববারের বৈঠকে যখন শাজাহান খানের নাম প্রস্তাব করা হয়, তখন কেউ কিন্তু বিরোধিতা করেননি। তার নেতৃত্বে আরও ১৪ জন সদস্য রয়েছেন। এখানে ব্যক্তি কোনো বিষয় নয়। অতীতে কোনো ব্যক্তির কারণে কোনো সমস্যার উদ্ভব হয়েছে কি না সেটা তিনি দেখবেন না। তিনি দেখবেন সড়কে শৃঙ্খলা আনয়নে ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কমিটি কি সুপারিশ তৈরি করে। সেই সুপারিশের ভিত্তিতে তারা পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করবেন। সোমবার বিকেলে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এই আলোচনা হয়। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে প্রশ্ন উত্থাপনকারী মো. ফখরুল ইমামের উদ্দেশে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, 'দেখুন না, আপনি যতটুকু আশা করছেন তার চেয়েও ভালো রিপোর্ট আসতে পারে।' পরে সম্পূরক প্রশ্ন করতে গিয়ে সরকারদলীয় এমপি শামীম ওসমান এই প্রসঙ্গে বলেন, 'শাজাহান খান একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তার হাসির জন্য ঘটনা ঘটেছে নাকি ঘটনা ঘটানো হয়েছিল, সেটা দেখার বিষয়।' সরকারি দলের সদস্য সাইফুজ্জামানের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ডিভাইডারই একমাত্র সমাধান নয়। এখানে চালক, পথচারী ও যাত্রীদের সচেতনতাও জরুরি। কারণ রাস্তায় দেখা যায় ফুটওভার ব্রিজ থাকার পরও ডিভাইডার দিয়ে লাফ দিয়ে মানুষ রাস্তা পার হচ্ছেন। মহিলারা বাচ্চা কোলে নিয়ে রাস্তা পার হয়। এমনকি ফ্লাইওভারের এপাশ থেকে ওপাশে হামাগুড়ি দিয়ে মানুষ পার হচ্ছে। মানুষ সড়কে শৃঙ্খলা মানছে না। মানুষের বিবেকটা এখানে খুব জরুরি। সড়কে শৃঙ্খলা ও নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে একটি কমিটিও করা হয়েছে। একই প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্য যারা ঢাকার রাস্তায় চলাচল করেন তারা দেখবেন মানুষ মোবাইলে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হচ্ছেন। এর মধ্যে গাড়ি এসে চাকায় পিষ্ট করে দিচ্ছে। এখানে কী শুধু চালককে দায়ী করবেন? অনেক গাড়িচালক ট্রাফিক সিগন্যাল মানেন না। ভিআইপি হয়ে অনেকে রং সাইডে গাড়ি নিয়ে যান। এটা ঠিক নয়। ভিআইপিরা তো অসাধারণ, তারা যদি রং সাইডে চলেন তাহলে সাধারণ মানুষ কেন রং সাইডে যাবে না! মন্ত্রী জানান, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে তার মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন যে, সকল মহাসড়কে ফোরলেনের পাশাপাশি বাইলেন ও ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে। সড়ক মন্ত্রণালয় সেভাবেই কাজ করছে। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য শহিদ ইসলামের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বিশেষ উদ্যোগে চলমান ঢাকা ম্যাসর্ যাপিড ট্রান্সজিট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের উত্তরা ৩য় পর্ব থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশ এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত সম্পূর্ণ অংশ ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের নিমিত্ত সংশোধিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সংশোধিত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এগিয়ে চলছে।