টার্গেট বিশ্বের সব থেকে বড় বাংলা বস্নগ

প্রকাশ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
গত সপ্তাহে কর্তৃপক্ষ পর্নোগ্রাফির বিরুদ্ধে যে 'যুদ্ধ' ঘোষণা করেছে তার অংশ হিসেবে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৮ হাজার ওয়েবসাইট ও অ্যাপ বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে রয়েছে বাংলা ভাষার সব থেকে বড় বস্নগিং সাইট সামহোয়্যারইন বস্নগও। এছাড়া আছে গুগল বুকস, বিখ্যাত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাপ টিকটক ও বিগো। একই সঙ্গে বেশ কয়েকজন নামকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীকে পুলিশ স্টেশনে ডেকে নিয়ে তাদের তৈরি 'অমার্জিত' কনটেন্ট মুছে ফেলতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে গেস্নাবাল ভয়েজ। গত ১৮ ফেব্রম্নয়ারি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার তার ফেসবুক পাতায় লেখেন, 'আমি ১৫,৬০৬টি পর্নোসাইট ও ২২৩৫টি জুয়ার সাইট খুঁজে পেয়েছি। এর মধ্যে রয়েছে টিকটক ও বিগো। সবগুলোকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে অনেকেই এখন ভিপিএন বা ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এসব সাইটে ঢুকতে পারছেন।' বাংলাদেশে অনলাইন কনটেন্ট নিষিদ্ধ করা নতুন কিছু নয়। ২০১৬ সালে তৎকালীন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমও পর্নোসাইট বন্ধের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছিলেন। সে সময় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) প্রায় ৫ শতাধিক পর্নো সাইট বন্ধ করেছিল। তবে পরে কিছু সাইট এইচটিটিপিএস এ আপগ্রেড করলে তা পুনরায় চালু হয় এবং তা বন্ধ করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে সামহোয়্যারইন বস্নগের বিষয়ে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এসব ওয়েবসাইটের বিষয়ে রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ করেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি স্বীকার করেছেন ওয়েবসাইট যাচাইয়ে কিছু ভুল হয়তো হতে পারে। তবে তা ঠিক করে দেয়া হবে। সামহোয়্যারইন বস্নগ (বাঁধ ভাঙার আওয়াজ) বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম বস্নগিং সাইট। এটি ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং এটিই বাঙালি বস্নগারদের জন্য বিশ্বের সর্ববৃহত সাইট। প্রতিদিন এখানে গড়ে ৬০ হাজার বস্নগার সক্রিয় থাকেন। গত ১৮ ফেব্রম্নয়ারি বস্নগটির পাঠকরা জানান, তারা আর এতে প্রবেশ করতে পারছে না। এরপর বস্নগ থেকে জানানো হয় যে তাদের সিস্টেমটি ঠিকভাবেই কাজ করছে এবং কর্তৃপক্ষ থেকে তারা এ বিষয়ে কোনো নোটিস পায়নি। কিন্তু এরপর আনুষ্ঠানিক নিষিদ্ধ সাইটের তালিকায় সামহোয়্যারইন বস্নগের নাম পাওয়া যায়। গেস্নাবাল ভয়েসকে বস্নগটির একজন প্রতিষ্ঠাতা জানান, এই বস্নগে পর্নোগ্রাফি কিংবা আপত্তিকর কোনো কনটেন্ট দেয়া হলে কর্তৃপক্ষ দ্রম্নত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। বাংলাদেশে কয়েক বছর আগে বেশ কয়েকজন সেকু্যলার বস্নগার ও অধিকারকর্মী হত্যার শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন ফয়সাল আরেফিন দিপন, শফিউল ইসলাম, ওয়াশিকু রহমান বাবু, রাজিব হায়দার, অভিজিৎ রায় ও অনন্ত বিজয় দাস। এর আগেও বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় বস্নগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ১৭ই ফেব্রম্নয়ারি বাংলাদেশ পুলিশ সানাই মাহবুব নামের একজন অভিনেত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নেয়। পুলিশ তাকে তার ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টিকটক পাতা থেকে 'উত্তেজক' সকল ছবি মুছে ফেলতে বলে। এ বিষয়ে বস্নগার কুং থাং ফেসবুকে লিখেছেন, আমি বুঝতে পারছি না সানাই কি দোষ করেছে। স্বাধীন দেশের একজন নাগরিক কি তার মতো করে থাকতে পারবে না? কেউ চাইলেই ব্রেস্ট ইমপস্ন্যান্ট করে ফেসবুকে তা মানুষকে দেখাতে পারে। আমি যদি এটা পছন্দ না করি আমি কখনো তার পেজে যাব না। এর দুদিনের মাথায় জনপ্রিয় ইউটিউবার সালমান মুক্তাদিরকেও তার একটি মিউজিক ভিডিও নিয়ে পুলিশ একই আহ্‌বান জানায়। সালমান মুক্তাদির তার বিতর্কিত ওই ভিডিওটি প্রকাশ বন্ধ করে দেয় এবং ফেসবুকে ক্ষমা প্রার্থনা করে।