২০২৫ সালের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা

যক্ষ্ণায় মৃতু্যহার নিয়ন্ত্রণ

প্রকাশ | ২৮ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
দেশে এখনো মৃতু্যর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে উলেস্নখযোগ্য হচ্ছে টিউবারকিউলোসিস বা যক্ষ্ণা রোগ। প্রতি বছর এ রোগে ৪২ হাজার মানুষ মারা যান। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যক্ষ্ণা রোধে বাংলাদেশ উলেস্নখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। ২০২০ সাল পর্যন্ত যক্ষ্ণায় মৃতু্যহার আগের তুলনায় ৩৫ শতাংশ কমিয়ে আনা গেলেও যক্ষ্ণা রোগে মৃতু্যহার আরও বাড়িয়ে দিয়েছে করোনাভাইরাস। ফলে ২০২৫ সালের মধ্যে যক্ষ্ণায় মৃতু্যহার ৭৫ শতাংশ কমিয়ে আনতে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কতটুকু সম্ভব হবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। রোববার আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি) মিলনায়তনে আয়োজিত টিবি প্রাইভেট-পাবলিক মিক্স (পিপিএম) স্টেক হোল্ডারসদের নিয়ে আয়োজিত এক সভায় বক্তারা এ শঙ্কার কথা জানান। সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও টিবির প্রোগ্রাম পরিচালক আফজালুর রহমান বলেন, 'এসডিজি গোল অর্জনে ২০৩০ সালের মধ্যে টিবির মৃতু্যহার ৯০ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ২০৩৫ সালের মধ্যে টিবির মৃতু্যহার ৯৫ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এছাড়া ২০২০ সালের মধ্যে টিবিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২০ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। আর ২০২৫ সালের মধ্যে টিবিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ শতাংশে কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।' তিনি বলেন, '২০২৫ সালের মধ্যে মৃতু্যহার ৭৫ শতাংশে কমিয়ে আনা ও ৫০ শতাংশ আক্রান্ত কমিয়ে আনার যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে তা পূরণে হাতে আছে আর মাত্র ২ বছর। এই সময়ের আমাদের এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আরও কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে।' অনুষ্ঠানে দেওয়া তথ্যমতে, ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী দেশে টিবি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩ লাখ ৭৫ হাজার। এর মধ্যে ৩ লাখ ৭ হাজার ৫৬১ জনকে শনাক্ত করা সম্ভব হলেও ৬৭ হাজার ৪৩৯ জন শনাক্তকরণ পরীক্ষায় অংশ নেননি। টিবি আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত পুরুষ ৫৪ শতাংশ। এছাড়া মহিলা আক্রান্ত হয়েছেন ৪৬ শতাংশ ও শিশু আক্রান্ত হয়েছে ৮ শতাংশ। এর বাইরে ৪ হাজার ৫০০ জন রোগী মেডিসিন প্রতিরোধযোগ্য টিবিতে আক্রান্ত আছেন বলেও জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, 'প্রতি বছর ৩ লাখ যক্ষ্ণা রোগী শনাক্ত হয়। সরকার তাদের বিনামূল্য ওষুধ দেয়। ফলে মৃতু্যর সংখ্যা অনেক কমেছে। তবে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে আরও দূর যেতে হবে। এখানে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা রয়েছে। যারা প্রশাসনের দায়িত্বে আছে তাদের বুঝতে হবে স্বাস্থ্যের জন্য, চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মীদের কী প্রয়োজন।' বিএমএ মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী বলেন, যক্ষ্ণা নিয়ন্ত্রণে সরকার একটি বড় সফলতা দেখিয়েছে। তবে সব কৃতিত্বের দাবিদার এককভাবে সরকারের নয়। সরকারি, বেসরকারি ও এনজিওগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টায় এটা সম্ভব হয়ছে। আমরা প্রান্তিক পর্যায়ে সেবা পৌঁছাতে পেরেছি। ভারতের নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেন একবার বলেছিলেন, ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উচিত বাংলাদেশ ঘুরে আসা। বাংলাদেশ কীভাবে প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করছে, তা দেখে শেখার রয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বে চিকিৎসকদের রাখার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, 'চিকিৎসককে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন। এতে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন হবে। যে বা যারা স্বাস্থ্য খাতের পরিকল্পনা করবেন তাদের এই বিষয়ে ভালো ধারণা থাকা প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত আমরা যা পেয়েছি তা সম্পূর্ণই প্রধানমন্ত্রীর কৃতিত্ব।'