করোনা টিকার জন্য নোবেল পেলেন দুই বিজ্ঞানী

প্রকাশ | ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
করোনা টিকার প্রযুক্তি আবিষ্কার করে এবার দুই বিজ্ঞানী চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। নোবেল বিজয়ী দুই বিজ্ঞানী হলেন- হাঙ্গেরিয়ায় জন্মগ্রহণকারী কাতালিন কারিকো এবং যুক্তরাষ্ট্রের ড্রু ওয়াইজম্যান। সোমবার সুইডেনের নোবেল অ্যাসেমবিস্ন অ্যাট ক্যারোলিনস্কা ইন্সটিটিউট তাদের নাম ঘোষণা করেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এপি এ তথ্য জানিয়েছে। নোবেল কমিটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এই দুই গবেষক করোনা টিকার বিকাশে অভূতপূর্ব অবদান রেখেছেন। তারা আধুনিক সময় মানব-স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকির মধ্যে ভ্যাকসিন বিকাশে কাজ করেছেন। তাদের নিউক্লিওসাইড বেস পরিবর্তন-সংক্রান্ত আবিষ্কারের জন্য (যা কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে কার্যকর এমআরএনএ ভ্যাকসিনের কার্যক্ষমতা বিকাশকে সক্ষম করেছে) নোবেল পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করা হয়। ওয়েবসাইটে আরও বলা হয়েছে, ২০২০ সালের গোড়ার দিকে শুরু হওয়া মহামারি চলাকালীন কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে কার্যকর এমআরএনএ ভ্যাকসিন তৈরির জন্য এই দুই গবেষকের আবিষ্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এমআরএনএ কীভাবে মানুষের ইমিউন সিস্টেমের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে, সে সম্পর্কে জানা-বোঝায় মৌলিক পরিবর্তন এসেছে তাদের যুগান্তকারী গবেষণার মাধ্যমে। প্রতি বছর বিজ্ঞান, সাহিত্য ও শান্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য ছয়টি ক্যাটাগরিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়ে থাকে। প্রতিবছর অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার চিকিৎসা বিজ্ঞান ক্যাটাগরি দিয়ে জয়ীদের নাম ঘোষণা করে নোবেল কমিটি। নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা করা হয় নরওয়ে থেকে। সাহিত্য ও অর্থনীতির মতো অন্য পুরস্কারগুলো সুইডেন থেকে ঘোষণা করা হয়। আজ মঙ্গলবার পদার্থবিজ্ঞান আর বুধবার রসায়নবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। এরপর ৫ অক্টোবর সাহিত্যে আর ৬ অক্টোবর শান্তিতে নোবেল বিজয়ীদের নাম জানা যাবে। দুই দিন বিরতি দিয়ে ৯ অক্টোবর ঘোষণা করা হবে অর্থনীতির নোবেল। ১৮৯৫ সালের নভেম্বরে আলফ্রেড নোবেল নিজের মোট উপার্জনের ৯৪ শতাংশ (৩ কোটি সুইডিশ ক্রোনার) দিয়ে তার উইলের মাধ্যমে নোবেল পুরস্কার প্রবর্তন করেন। এই বিপুল অর্থ দিয়েই শুরু হয় পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সাহিত্য ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান। ১৯৬৮ সালে তালিকায় যুক্ত হয় অর্থনীতি। পুরস্কার ঘোষণার আগেই মৃতু্যবরণ করেছিলেন আলফ্রেড নোবেল। ১৯০১ সাল থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। গত বছর চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল জিতেছিলেন সুইডিশ বিজ্ঞানী সুভান্তে প্যাবো। আদিম মানুষের জিনোম উদ্ঘাটন ও মানব বিবর্তনের জিনোম সম্পর্কিত আবিষ্কারের জন্য তাকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। এর আগের বছর ২০২১ সালে তাপমাত্রা ও স্পর্শের রিসেপ্টর আবিষ্কারের জন্য চিকিৎসা বিজ্ঞানে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পান মার্কিন বিজ্ঞানী ডেভিড জুলিয়াস ও আর্ডেম প্যাটাপৌসিয়ান। এ বছর অর্থমূল্য বাড়ছে নোবেল পুরস্কারের। গত বছরের চেয়ে এ বছরের বিজয়ীরা ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা বেশি পেতে চলেছেন। নোবেল ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, ২০২৩ সালে নোবেল পুরস্কারের অর্থমূল্য বাড়িয়ে এক কোটি ১০ লাখ ক্রোনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি ৯০ লাখ টাকা। প্রতিবছর আলফ্রেড নোবেলের মৃতু্যদিবস ডিসেম্বরের ১০ তারিখে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারের অর্থ তুলে দেওয়া হয়। এ সময় তাদের একটি করে সনদ ও স্বর্ণপদক দেওয়া হয়। তবে এ বছর থেকে পুরস্কারের অর্থমূল্য ৮৯ হাজার মার্কিন ডলার বাড়িয়ে ৯ লাখ ৮৯ হাজার ডলার করা হয়েছে (১১ লাখ ক্রোনা)।