রক্তাক্ত মার্চ

গ্রাম-মহলস্নায় সংগ্রাম পরিষদ গঠন শুরু

প্রকাশ | ১৫ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
আজ অগ্নিঝরা মার্চের ১৫ তারিখ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী গ্রাম ও মহলস্নায় শুরু হয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন। এদিকে দেশরক্ষা বিভাগের বেসামরিক কর্মচারীরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নির্দেশ উপেক্ষা করে কর্মবিরতি পালন করেন। অফিস-আদালতেও চলে পূর্ণ কর্মবিরতি। এমন এক উত্তাল দিনের বিকেল বেলায় পাকিস্তান বাহিনীর প্রায় সকল জেনারেলকে নিয়ে কঠোর সামরিক প্রহরায় ঢাকায় আসেন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। সামরিক বাহিনীর নয়া বিধি জারির প্রতিবাদে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ সমাবেশের ডাক দেয়। বায়তুল মোকাররমের পাশে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নূরে আলম সিদ্দিকী। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আ স ম আবদুর রব, আবদুল কুদ্দুস মাখন, শাজাহান সিরাজ প্রমুখ। জনসমাবেশ থেকে আহ্বান জানানো হয় সর্বাত্মক যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার। ওই সমাবেশে বক্তারা সমস্বরে ঘোষণা দেন, বাংলাদেশ আজ স্বাধীন। বাঙালির ওপর সামরিক বিধি জারি করার ক্ষমতা কারও নেই। দেশের জনগণ তাদের মুক্তির আন্দোলনের নেতা, পরম বন্ধু জাতির জনক শেখ মুজিবের নির্দেশ মেনে চলবে। পৃথিবীর কোনো শক্তিই বাঙালির স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করতে পারবে না. উলেস্নখ করে বলেন, গত ২৩ বছর যারা সোনার বাংলাকে শ্মশানে পরিণত করেছে, তাদের সঙ্গে আর কোনো আপস করা হবে না। এ দিন নগরীর মোড়ে মোড়ে উদীচী ভ্রাম্যমাণ ট্রাকযোগে গণসংগীত ও পথনাটক পরিবেশন করে। সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেতার ও টেলিভিশনের শিল্পীরা পরিবেশন করেন দেশাত্মবোধক গান। কবি সুফিয়া কামাল ডাক দেন নারী সমাবেশের। তোপখানা রোডে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সুফিয়া কামাল নিজেই। মিছিল শোভাযাত্রা বের করে বেসামরিক কর্মচারী ও চিকিৎসকরা। অন্যদিকে খুলনার শহীদ হাদিস পার্কের জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বাংলা জাতীয় লীগপ্রধান আতাউর রহমান খান অবিলম্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা এবং জাতীয় সরকার গঠন করার আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধুকে উদ্দেশ করে আতাউর রহমান খান বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ আজ বঙ্গবন্ধুর পেছনে একই সঙ্গে রেডিও, ইপিআর, পুলিশ বাহিনী, সেক্রেটারিয়েট প্রভৃতি আওয়ামী লীগের আজ্ঞাবাহী।