আবজালের 'তামান্না ভিলা' ক্রোক

প্রকাশ | ১৯ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সোমবার দুদক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেনের রাজধানীর উত্তরা মডেল টাউনে ১৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর সড়কের বাড়িটি ক্রোক করে -যাযাদি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেন ও তার স্ত্রী রুবিনা খানমের সম্পদ ক্রোক করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার সকালে দুদক রাজধানীর উত্তরা মডেল টাউনে ১৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর সড়কে আবজালের বাড়িটি ক্রোক করে। বাড়িটির নাম 'তামান্না ভিলা'। আবজাল হোসেন ওই বাড়ির পাঁচতলায় থাকতেন। অভিযানের সময় বাড়িটি তালাবদ্ধ ছিল। আবজাল হোসেন কোথায় আছেন, তাও কেউ জানাতে পারেননি। দুদকের উপ-পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৫ জনের দল অভিযান চালাচ্ছে। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন। বাড়ির কেয়ারটেকার মামুন হোসেন বলেন, আবজাল তার স্ত্রী ও পরিবারসহ থাকতেন। ২১ জানুয়ারিতে নোটিশ জারির পর তারা এখান থেকে চলে গেছেন। ওই বাড়িতে মোট আটটি পরিবার ভাড়া থাকে। তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ভাড়াটেদের কী হবে, সে ব্যাপারে পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। দুদক কর্মকর্তা তৌফিকুল আরও বলেন, সারাদিন ওই এলাকায় অভিযান চলবে। গত ২১ জানুয়ারি দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আবজাল হোসেন ও তার স্ত্রী রুবিনা খানমের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক অর্থাৎ হস্তান্তর বা লেনদেন বন্ধ এবং ব্যাংক হিসাবগুলোর লেনদেন জব্দ (ফ্রিজ) করার আদেশ দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত। আবজাল হোসেনের বাড়ি ফরিদপুরে। ১৯৯২ সালে তৃতীয় বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর আর পড়াশোনা করা হয়নি তার। ১৯৯৫ সালে তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের সুপারিশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঁচটি মেডিকেল কলেজ স্থাপন প্রকল্পে অফিস সহকারী পদে অস্থায়ীভাবে যোগ দেন তিনি। ২০০০ সালে প্রকল্পটি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত হলে তিনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে অফিস সহকারী হিসেবে যোগ দেন। সেখান থেকে কুমিলস্না মেডিকেল কলেজে ক্যাশিয়ার পদে বদলি হন। এই ধারাবাহিকতায় তিনি বর্তমান পদে যোগ দেন। সম্প্রতি সাতক্ষীরায় বদলি করা হলেও দুই মাসের মধ্যেই ঢাকা ফিরে আসেন আবজাল। আবজাল হোসেনের স্ত্রী রুবিনা খানম একই প্রকল্পে স্টেনোগ্রাফার হিসেবে কুমিলস্না মেডিকেল কলেজে যোগ দেন ১৯৯৮ সালে। ২০০০ সালে স্বেচ্ছায় অবসরে গিয়ে রহমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে প্রতিষ্ঠান গড়ে ব্যবসা শুরু করেন। মূলত স্বামী-স্ত্রী মিলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে একচেটিয়া ব্যবসা করার জন্য তারা প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। অফিস সহকারী বা কেরানি হিসেবে চাকরি নিলেও আবজাল হোসেন অল্প সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্যমতে, বিএনপি আমলে নিয়োগ পেলেও সব আমলেই সমানভাবে প্রভাবশালী ছিলেন তিনি। নিয়োগ, বদলি-বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, কাজ না করে বিল তুলে নেয়ার মতো কাজগুলো করেছেন আবজাল। এর মাধ্যমে বিপুল বিত্ত-বৈভব গড়ে তুলেছেন বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ।