গ্রগতি সরণিতে কিছু শিক্ষার্থীর মানববন্ধন

প্রকাশ | ২২ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বাসের ধাক্কায় বিইউপি ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরীর মৃতু্যর প্রতিবাদে ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্রগতি সরণির যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে মানববন্ধন করেন একদল শিক্ষার্থী -যাযাদি
বাসের ধাক্কায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরীর মৃতু্যর প্রতিবাদে ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজধানীর প্রগতি সরণির যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে মানববন্ধন করেছেন কিছু শিক্ষার্থী। গত মঙ্গলবার যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে রাস্তা পার হতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান আবরার। বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে এই মানববন্ধন শুরু হয়। এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে বিইউপি ও আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) এই শিক্ষার্থীরা প্রগতি সরণি থেকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ঢোকার মুখে সড়কে এসে জড়ো হন। এ সময় সেখানে দায়িত্ব পালনরত পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তারা কথা বলেন। সেখানে উপস্থিত একজন শিক্ষার্থী রায়হানুল বলেন, পুলিশ তাদের সড়কে অবস্থান না নেয়ার অনুরোধ করেছেন। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রাখার কথা বলেছেন। ওই শিক্ষার্থী বলেন, 'আমরা পুলিশকে বলেছি, আমাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ। এরপর আমরা মানববন্ধন করার সিদ্ধান্ত নিই।' এআইইউবির একজন ছাত্র বলেন, 'আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আন্দোলন না থাকলে কোনো দাবি আদায় হবে না। কর্তৃপক্ষ চাপ অনুভব করবে না।' নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি অংশ সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে কর্মসূচি স্থগিত করেছে। তবে একটি অংশের এই স্থগিতাদেশ নিয়ে আপত্তি আছে। তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে। অবশ্য গতকাল প্রগতি সরণিতে মানববন্ধন ছাড়া আর কোনো কর্মসূচি চোখে পড়েনি। মানববন্ধনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের হাতে জাতীয় পতাকা এবং বিভিন্ন দাবি লেখা সংবলিত পস্ন্যাকার্ড ছিল। অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা আবরারকে চাপা দেয়া বাসের চালকের মৃতু্যদন্ড দাবি করেন। তারা সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। টেলিফোনে বাড্ডা থানায় যোগাযোগ করা হলে সেখানকার দায়িত্বরত কর্মকর্তা (ডিউটি অফিসার) বলেন, ৫০ থেকে ৬০ জনের মতো শিক্ষার্থী যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে ফুটপাতে মানববন্ধন করছেন। সেখানকার সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক। নির্মাণ শুরু 'আবরার ওভারব্রিজ' এদিকে বাড্ডা প্রগতি সরণির সড়কে এখনও রক্তের দাগ শুকায়নি। সাদা রঙে আঁকা জেব্রা ক্রসিং এখনও আবরারের রক্তে লাল। ঘিরে রাখা হয়েছে জায়গাটি। এরই মধ্যে আশ্বাস অনুযায়ী ঘটনার দু'দিন পেরুতে না পেরুতেই শুরু হয়েছে সুপ্রভাত বাসের চাপায় নিহত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী (২০) নামে ফুটওভার ব্রিজের নির্মাণ কাজ। বৃহস্পতিবার সকালে আবরারকে যেখানে বাসটি চাপা দেয় ঠিক তার কয়েক গজ দূরে রাস্তার পাশে কাজ শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। বুধবার আবরারের বাবা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আরিফ আহমেদ চৌধুরীর পক্ষে এ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন শেষে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, এখানকার জনগণ ও ছাত্রছাত্রীদের দাবি, এখানে একটি ফুটওভার ব্রিজ হোক। এখানে ফুটওভার ব্রিজ হবে। আগামী দুই মাসের মধ্যে এ ব্রিজের কাজ শেষ হবে। এ ব্রিজ আবরারের নামে হবে, আর এর উদ্বোধক হবেন তার বাবা। বৃহস্পতিবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, পুরোদমে নির্মাণ কাজ চলছে। কাজের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে জোয়ার সাহারা বাজারের দিকে যাওয়ার সড়কটি। সেখানে ওভারব্রিজের পাইলিংয়ের কাজ চলছে। লেগে আছে উৎসুক জনতার ভিড়। অনেককে বলতে শোনা গেল, জায়গাটিতে দীর্ঘদিন যাবৎ একটি সড়কের দরকার ছিল। শেষ পর্যন্ত আবরারের জীবনের বিনিময়ে জনগণ ওভারব্রিজটি পাচ্ছে।