সহিংসতা যারাই করুক প্রশ্রয় দিই না : জাতিসংঘ

প্রকাশ | ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশে সংঘটিত নাশকতা নিয়ে এক প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোকে আগের মতোই সহিংসতা পরিহার করে মানবাধিকার রক্ষা ও আইনের শাসনের প্রতি সম্মান জানাতে বলেছে জাতিসংঘ। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ দপ্তরে সোমবার এক ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন ও সহিংসতার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে আগের অবস্থানই তুলে ধরেন জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিভেন ডুজারিক। ব্রিফিংয়ে সাংবাদিক লাভলু আনসার এক জিজ্ঞাসায় বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের সময় 'বিএনপির সন্ত্রাসী কার্যক্রম' নিয়ে মুখপাত্রের ভাষ্য কী। জবাবে ডুজারিক বলেন, "নির্বাচন বিষয়ে আগেও আপনার এক সহকর্মীর প্রশ্ন পেয়েছি। আগে যেমনটি বলেছি, আমি আবারও সেটিই বলব সকল দলকে আমরা সহিংসতা পরিহার করে মানবাধিকার রক্ষা ও আইনের শাসনের প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানাই।" 'গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে' বাস-ট্রেনে আগুন ও মানুষ হত্যাকে জাতিসংঘ মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে মনে করে কিনা, জানতে চাওয়া হয় আরেক প্রশ্নে। জবাবে ডুজারিক বলেন, "কোনো ধরনের সহিংসতাকে আমরা প্রশ্রয় দিই না, সেটা যারাই করুক।" গত ৭ জানুয়ারির ভোটে ২২৩টি আসনে জিতে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। সংসদে গত দুইবারের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি পেয়েছে ১১টি আসন। এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬২টি আসনে জিতে এবার চমক দেখিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এর বাইরে আরও তিনটি দল পেয়েছে একটি করে আসন। এই নির্বাচন নিয়ে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের একাংশ সন্তোষ প্রকাশ করলেও ভোট সুষ্ঠু হয়নি বলে বিবৃতিতে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। আর নির্বাচনের পরদিন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ভোট পরবর্তী পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার কথা জানান। পাশাপাশি নির্বাচনের আগে-পরের সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। হ পৃষ্ঠা ২ কলাম ২ সেদিন এক ব্রিফিংয়ে মহাসচিবের সহযোগী মুখপাত্র ফ্লোরেন্সিয়া সোতোর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল- বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে কিনা। জবাবে তিনি বলেছিলেন, "আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। সেখানে যা ঘটছে, তার দিকে মহাসচিবেরও নজর আছে। বিরোধী দল যে ভোট বয়কট করেছে, সে বিষয়ে তিনি অবগত আছেন আমি বলতে চাই, ভিন্নমত ও সমালোচনাকে দমন এবং বিরোধী দলের নেতাদের গ্রেপ্তারের অভিযোগের বিষয়ে। "তিনি (মহাসচিব) স্পষ্টতই ভোটের আগে-পরের সহিংস ঘটনায় উদ্বিগ্ন এবং তিনি সহিংসতা পরিহার এবং মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে সব দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গণতন্ত্র সুসংহত ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য এটি জরুরি।" বাংলাদেশে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে জাতিসংঘ নির্বাচনের আগেও একই অবস্থান তুলে ধরে বক্তব্য দেয়। গত ২১ ডিসেম্বর ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র ডুজারিক এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, "আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বান জানাই, যেখানে মানুষ কোনো ভয়ভীতি ছাড়া স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবে। অবশ্যই নির্বাচনের পর হয়তো আমরা কিছু বলব, তবে এখন আমাদের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে।" সবশেষ সোমবারের ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি গাজা পরিস্থিতির আলোকপাত করে অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধ বিরতির আহ্বান জানান।