বছরের উষ্ণতম দিন পেল ঢাকা

প্রকাশ | ২০ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
গরমে নাভিশ্বাস উঠছে রাজধানীবাসীর
বৃষ্টি নেই। প্রচÐ রোদ। তীব্র গরম। ঘরে বৈদ্যুতিক পাখায়ও কমছে না গরম। বাইরে তো অবস্থা ভয়াবহ। ঘেমে একাকার। যেন নাভিশ্বাস উঠছে রাজধানীবাসীর। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের কারণে ঢাকায় বৃষ্টি হচ্ছে না। এ অবস্থা কাটতে লাগবে দু-একদিন। ঢাকার জিয়া কলোনিতে চায়ের দোকানি আল-আমীন। চা সিগারেট রুটি বিক্রি করছিলেন। লক্ষ করে দেখা গেল, তার শরীর থেকে ঘাম ঝরছে। তিনি বলেন, ‘আর কইয়েন না, মন চাচ্ছে মালমুল ফেলে ফ্রিজে ঢুকে বসে থাকি।’ একটি স্বনামধন্য গ্রæপের মাকেির্টং বিভাগে কমর্রত আলী আযম। গরমের এমন অবস্থা বণর্না দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘মারা যাচ্ছি। গরম কারে কয়, মরণদশা। ভাবছি, এখন আর কাজ করব না। বিকেল গড়ালে গরম কমলে আবার কাজ করব।’ কেবল আযমই নন, ঘর বা কমর্স্থলের বাইরে থাকা মানুষ তীব্র দাবদাহে যেন মরণদশায়। এই দাবদাহের বিষয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এখন বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ রয়েছে। লঘুচাপ হওয়ার কারণে সব মেঘ বঙ্গোপসাগরে চলে গেছে, আমাদের এখনকার (ঢাকার) মেঘের ফোকাসটা ওই জায়গায়। সেজন্য এখানে বৃষ্টিটা কম। লঘুচাপ পশ্চিমবঙ্গের দিকে উঠে যাবে দু-তিনদিন পরই।’ তিনি আরও বলেন, ‘লঘুচাপ উঠে গেলে আগামী দুদিন পর বৃষ্টি আবার শুরু হতে পারে। এখন এপ্রিল, মে মাস নয়, তারপরও গরম লাগছে, কারণ বষার্কাল। এ সময় বাতাসে জলীয়বাষ্প থাকে। বৃষ্টি না হয়ে যদি রোদ থাকে, তবে গরমের অনুভূতিটা বেশি হয়।’ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার ঢাকায় বছরের সবোর্চ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকডর্ করা হয়েছে। বুধবার এই তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ঢাকার তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। ২০১৪ সালের ২২ এপ্রিল ঢাকার সবোর্চ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা পাঁচ দশকের সবোর্চ্চ। বুধবার দেশের সবোর্চ্চ তাপমাত্রা ছিল সিলেটে ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভারতের মধ্যপ্রদেশ ও কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি মৌসুমি বায়ুর অক্ষের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর ও মধ্য প্রদেশ, বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূবর্ দিকে আসাম পযর্ন্ত বিস্তৃত। এর একটি বধির্তাংশ উত্তর বঙ্গোপাসাগর পযর্ন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর কম সক্রিয়। এটি উত্তর বঙ্গোপসাগরের মাঝারি অবস্থায় বিরাজমান। পরবতীর্ ৩৬ ঘণ্টার (বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে) মধ্যে উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল সকাল ৯টা থেকে পরবতীর্ ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূবার্ভাসে জানানো হয়েছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বষর্ণ হতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবতির্ত থাকতে পারে।