এমভি আবদুলস্নাহর নাবিকদের জন্য দুম্বা আনছে জলদসু্যরা

প্রকাশ | ৩০ মার্চ ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সোমালিয়ার উপকূলে ১৮ দিন ধরে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের নাবিকদের জন্য তীর থেকে দুম্বা ও ছাগল আনছে জলদসু্যরা। তাই খাবার নিয়ে খুব একটা দুশ্চিন্তা করছেন না জাহাজের নাবিকরা। তবে জাহাজে বিশুদ্ধ পানি কমে যাওয়া নিয়ে নাবিকরা কিছুটা দুশ্চিন্তায় আছেন। জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুলস্নাহর নাবিকরা এসব তথ্য জানিয়েছেন। তাদের বরাতে জাহাজটির মালিকপক্ষ ও নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিকসহ এমভি আবদুলস্নাহকে জিম্মি করে সোমালিয়ার দসু্যরা। পরে তারা জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলের কাছে নিয়ে যায়। চট্টগ্রামের কবির গ্রম্নপের মালিকানাধীন জাহাজটি বর্তমানে সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জিফল উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে আছে। প্রায় ১৩ বছর আগে ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর এমভি জাহান মণি নামে একই গ্রম্নপের মালিকানাধীন একটি জাহাজ জিম্মি করেছিল সোমালিয়ার জলদসু্যরা। জাহাজটি ১০০ দিন পর সব নাবিকসহ উদ্ধার করা হয়েছিল। জিম্মি অবস্থায় জাহাজটির খাবার ফুরিয়ে গেলে জলদসু্যরা সপ্তাহে দুটি দুম্বা নিয়ে আসত। সে সময় এমভি জাহান মণিতে থাকা দুজন নাবিক এ তথ্য জানান। বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন বলেন, সাধারণত জাহাজে হিমায়িত ও শুকনো- দুই ধরনের খাবার থাকে। যাত্রাপথে কত দিন সময় লাগবে, তার ওপর নির্ভর করে জাহাজে খাবার রাখা হয়। তবে শুকনো খাবার অনেক দিনের জন্য মজুত থাকে। জাহাজ জিম্মি করলে জলদসু্যরা সাধারণত খাবার সরবরাহ করে। তবে সুপেয় পানি নিয়ে সমস্যা হয়। সে ক্ষেত্রে রেশনিং করে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। এমভি আবদুলস্নাহকে জিম্মি করার সময় জাহাজটিতে নাবিকদের জন্য ২৫ দিনের খাবার ছিল। জিম্মি জাহাজটিতে থাকা নাবিকদের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যের বরাতে নাবিকদের সংগঠনের একজন নেতা বলেন, খাবার নিয়ে খুব একটা দুশ্চিন্তা নেই। কারণ, জলদসু্যরা জাহাজে দুম্বা ও ছাগল আনছে। তবে বিশুদ্ধ পানি নিয়ে দুশ্চিন্তা আছে। কারণ, জলদসু্যরা জাহাজে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে জাহাজে যা বিশুদ্ধ পানি আছে, তা রেশনিং করে চলতে হচ্ছে। সংকটের কারণে এখন সপ্তাহে দুই দিন এক ঘণ্টা করে জাহাজের বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করছেন নাবিকরা। অর্থাৎ সপ্তাহে মাত্র দুই ঘণ্টা বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছেন তারা। এমভি আবদুলস্নাহকে জিম্মি করার সময় জাহাজটিতে ২০০ টন বিশুদ্ধ পানি ছিল। এই পানি দিয়ে এক মাস পর্যন্ত চালানো যাবে বলে তখন নাবিকরা জানিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন, তবে রেশনিং করলে অনেক দিন চালানো যাবে। পানি বাঁচাতে এখন শুধু রান্না ও খাবারের জন্য বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করছেন নাবিকরা। জানতে চাইলে জাহাজের মালিকপক্ষ চট্টগ্রামের কবির গ্রম্নপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, খাবার নিয়ে আশা করি সমস্যা হবে না। নাবিকদের মুক্ত করার বিষয়ে মিজানুল ইসলাম বলেন, 'আলোচনা চলছে। এখনো চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি। আমাদের চেষ্টা হলো যত দ্রম্নত সম্ভব নাবিকদের ফিরিয়ে আনা।'