শাজাহান খানের সেই হাসি 'সাংবাদিকদের উসকানিতে'!

প্রকাশ | ১৬ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
গত বছর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃতু্যর পর তৎকালীন মন্ত্রী শাজাহান খানের যে হাসি ক্ষোভের আগুন জ্বালিয়েছিল, নয় মাস পর সেই হাসির ঘটনার ব্যাখ্যা দিলেন তিনি। সোমবার ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে ১৪ দলের আয়োজনে 'নিরাপদ সড়ক ও মাদকমুক্ত সমাজ' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় শাজাহান খান বলেন, তার ওই হাসির পেছনে 'সাংবাদিকদের উসকানি' ছিল। সভার সভাপতি ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম পাশে বসা শাজাহান খানকে বক্তব্য রাখোর অনুরোধ জানিয়ে বলেন, 'শাজাহান খান সাহেব, আপনি আরও বলার থাকলে বলতে পারেন। আপনার সবই ঠিক আছে, তবে হাসিটার জন্যই সমস্যা হয়েছিল।' বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খান শেখ হাসিনার গত সরকারে নৌমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। এবার নতুন সরকারে তার ঠাঁই না হলেও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল সম্প্রতি যে ১৫ সদস্যের কমিটি করেছে, তার প্রধান করা হয়েছে পরিবহন শ্রমিক নেতা শাজাহান খানকে। ১৪ দলের সভায় একবার বক্তব্য দেয়ার পর নাসিমের কথার পরিপ্রেক্ষিতে আবার মাইক হাতে নিয়ে নিজের সেই হাসির ব্যাখ্যা দেন শাজাহান খান। তিনি বলেন, 'আজকে আমি ওই দিনের হাসির ব্যাখ্যাটা দিতে চাই। আসলে ওই দিন আমি সাংবাদিকদের জন্য হেসেছিলাম।' '৬৮ বছর পর মোংলা বন্দরের জট ছুটতে যাচ্ছে- এই কথা বলার সময় হঠাৎ করে একজন সাংবাদিক আমাদের প্রশ্ন করল- 'আপনার আস্কারায় আজকে সড়কে দুই শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে'। 'আমার নাকি আস্কারা? এই কথায় আমি একটু হেসেছিলাম। তাছাড়া আমি একটু বেশি হাসি দেই। তবে এই হাসির জন্য উস্কানি দিয়েছে সাংবাদিকরা।' গত বছরের ২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসের চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী মারা গেলে সড়কে বিক্ষোভ দেখায় ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। ওই দিনই সচিবালয়ে মোংলাবন্দরের জন্য মোবাইল হারবার ক্রেন কেনার চুক্তিপত্র স্বাক্ষর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে হেসে ওঠেন শাজাহান খান। শাজাহান খানের হেসে হেসে উত্তর দেয়ার ভিডিও ইন্টারনেটে সামাজিকে যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পরদিন তার পদত্যাগসহ সড়কে নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সারাদেশের শিক্ষার্থীরা। নয় দিন প্রায় অচল ছিল ঢাকার সড়ক। ওই অবস্থায় পরে শাজাহান খান ক্ষমা চেয়ে বলেছিলেন, '২৯ তারিখে আমরা যে চুক্তিটা করলাম, এটা একটা আনন্দের ব্যাপারই ছিল। এবং আমি এ ঘটনা বলার আগেই হাসতেছিলাম যে আমরা এত সুন্দর একটা চুক্তি করছি।' 'আর ব্যক্তিগতভাবে আমার দোষ-গুণ একটা থাকতেই পারে যে, আমি সব সময় হাস্যোজ্জ্বল থাকি।'