একক গ্রাহকের ঋণসীমা লঙ্ঘন না করার নির্দেশ
প্রকাশ | ১৬ মে ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
ব্যাংকের একক গ্রাহকের ঋণসীমা লঙ্ঘন না করার বিধান কঠোরভাবে পরিপালনের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বর্তমানে একটি ব্যাংক ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড মিলিয়ে এক গ্রাহককে মোট মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দিতে পারে।
জানা গেছে, কিছু ব্যাংক ঋণের ঊর্ধ্বসীমা শিথিল করার জন্য আবেদন জানিয়েছে। এ ধরনের আবেদনও আইনের পরিপন্থি বলে ব্যাংকগুলোকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং নীতি ও প্রবিধি বিভাগ (বিআরপিডি) থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। ওই সার্কুলারে ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি জারি করা পূর্বের সার্কুলারকে সূত্র হিসেবে উলেস্নখ করা হয়েছে।
ওই সার্কুলারে এক গ্রাহকের সর্বোচ্চ ঋণসীমা ৩৫ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছিল।
বর্তমানে একটি ব্যাংক ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড মিলিয়ে একজন গ্রাহককে মোট মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দিতে পারে।
বিআরপিডির ওই সার্কুলারে বলা হয়েছে, যে কোনো সময় একক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কিংবা গ্রম্নপকে দেওয়া ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড ঋণ সুবিধা আসল অংকের মোট পরিমাণ কোনোভাবেই সেই ব্যাংকের মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি হবে না। আর একক কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গ্রম্নপকে দেওয়া ফান্ডেড ঋণ সুবিধা আসল অংকের মোট পরিমাণ ব্যাংকের মোট মূলধনের
\হ১৫ শতাংশের বেশি হবে না।
তবে বেশকিছু ক্ষেত্রে একক গ্রাহক ঋণসীমা ও বৃহৎ ঋণসংক্রান্ত বিধান পরিপালনে অব্যাহতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে রয়েছে সরকার কিংবা সরকারের গ্যারান্টির বিপরীতে দেওয়া ঋণ সুবিধা এবং 'এএএ' রেটিং প্রাপ্ত বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংকগুলোর (এমডিবি) গ্যারান্টির ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা কার্যকর হবে না। এমডিবির মধ্যে রয়েছে বিশ্বব্যাংক গ্রম্নপের আইবিআরডি ও আইএফসি, এডিবি, এএফডিবি, ইবিআরডি, আইএডিবি, ইআইবি, ইআইএফ, এনআইবি, সিডিবি, আইডিবি ও সিইডিবি। এ ছাড়া আন্তঃব্যাংক মুদ্রা বিনিময়ে এক বছরের কম চুক্তির ক্ষেত্রেও এ নির্দেশনা কার্যকর হবে না বলে সার্কুলারে বলা হয়েছিল।
ওই সার্কুলারে বৃহৎ ঋণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণের সঙ্গে ব্যাংকের মোট ঋণ ও অগ্রিমের কত শতাংশ পর্যন্ত বড় আকারের ঋণ দেওয়া যাবে সেটি পুনর্নির্ধারণ করে দিয়েছিল। এক্ষেত্রে বিদ্যমান পাঁচটি স্স্ন্যাব থেকে বাড়িয়ে ছয়টি করা হয়েছে।
বর্তমানে শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ ৩ শতাংশ পর্যন্ত থাকলে বড় আকারের ঋণ দেওয়া যাবে মোট ঋণ ও অগ্রিমের ৫০ শতাংশ। একইভাবে ৩ শতাংশের বেশি কিন্তু ৫ শতাংশের কম বা সমপরিমাণ শ্রেণিকৃত ঋণ থাকলে সেক্ষেত্রে বৃহৎ ঋণের পরিমাণ হবে ব্যাংকের মোট ঋণ ও অগ্রিমের ৪৬ শতাংশ।
বর্তমান নিয়মানুসারে ৫ শতাংশের বেশি কিন্তু ১০ শতাংশের কম বা সমান শ্রেণিকৃত ঋণ থাকলে ব্যাংকের মোট ঋণ ও অগ্রিমের ৪২ শতাংশ পর্যন্ত বড় আকারের ঋণ দেওয়া যাবে। ১০ শতাংশের বেশি কিন্তু ১৫ শতাংশের কম বা সমপরিমাণ শ্রেণিকৃত ঋণ থাকলে বৃহৎ ঋণের পরিমাণ হবে ব্যাংকের মোট ঋণ ও অগ্রিমের ৩৮ শতাংশ।
আর ১৫ শতাংশের বেশি কিন্তু ২০ শতাংশের কম বা সমপরিমাণ শ্রেণিকৃত ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংকের বৃহৎ ঋণের পরিমাণ হবে তার মোট ঋণ ও অগ্রিমের ৩৪ শতাংশ। আর শ্রেণিকৃত ঋণ ২০ শতাংশের বেশি থাকলে সেক্ষেত্রে বড় আকারের ঋণ দেওয়া যাবে ব্যাংকের মোট ঋণ ও অগ্রিমের ৩০ শতাংশ পর্যন্ত। তবে যা-ই হোক মোট বৃহৎ ঋণের পরিমাণ যে কোনো সময় ব্যাংকের মূলধনের ৪০০ শতাংশের বেশি হবে না।