ব্রম্ননাইয়ের সঙ্গে ৭ চুক্তি

৫ দেশ নিয়ে নতুন জোট গড়ার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ | ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ব্রম্ননাইয়ের সুলতান হাজী হাসানাল বলকিয়া সোমবার তার সরকারি বাসভবন ইস্তানা নূরুল ইমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানান -ফোকাস বাংলা
ওআইসি (অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন) সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পাঁচটি দেশ নিয়ে একটি অর্থনৈতিক জোট গড়ার প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার ব্রম্ননাইয়ে দেশটির সুলতান হাসানাল বলকিয়ারের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ প্রস্তাব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সুলতান হাসানাল বলকিয়ার সরকারি বাসভবন ইস্তানা নুরুল ইমানের চেরাদি লায়লা কেনচানায় দ্বিপক্ষীয় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। ব্রিফিংয়ের সময় প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ও স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। পররাষ্ট্র সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ওআইসি সদস্য দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পাঁচটি দেশ নিয়ে একটি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ফোরাম গড়ে তোলার ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব দিয়েছেন। দেশগুলো হলো- বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, ব্রম্ননাই ও ইন্দোনেশিয়া। বৈঠকের রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনসহ দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক, ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। সকাল ১১টায় ব্রম্ননাইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়ার সরকারি বাসভবন ইস্তানা নুরুল ইমানে যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে দেশটির রাষ্ট্রীয় প্রথা ভেঙে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মান জানিয়ে প্রাসাদের করিডোরে এসে স্বাগত জানান সুলতান হাসানাল বলকিয়া এবং ক্রাউন প্রিন্স (যুবরাজ) আল-মুহতাদি বিলস্নাহ বলকিয়া। ইস্তানা নুরুল ইমান প্রাসাদের চেরাদি লায়লা কেনচানায় সুলতান বলকিয়া ও রাজ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতে মিলিত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্রম্ননাইয়ের সঙ্গে সাত চুক্তিতে স্বাক্ষর এদিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পেট্রোলিয়াম সমৃদ্ধ দেশ ব্রম্ননাইয়ের সঙ্গে সাতটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। কৃষি, মৎস্য, পশুসম্পদ, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া এবং এলএনজি সরবরাহের ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে এসব চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সোমবার ব্রম্ননাইয়ের সুলতানের সরকারি বাসভবন ইস্তানা নূরুল ইমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ব্রম্ননাইয়ের সুলতান হাজী হাসানাল বলকিয়ার মধ্যে আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর এ চুক্তিগুলো স্বাক্ষরিত হয়। সাতটি চুক্তির মধ্যে ছয়টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং একটি বিনিময় নোট। এগুলো হচ্ছে কৃষি ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ), মৎস্য ক্ষেত্রে সহযোগিতার সমঝোতা স্মারক, পশুসম্পদ ক্ষেত্রে সহযোগিতার সমঝোতা স্মারক, সাংস্কৃতিক ও শিল্প সহযোগিতা সম্পর্কিত সমঝোতা স্মারক, যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতার সমঝোতা স্মারক, এলএনজি সরবরাহে সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্পর্কিত সমঝোতা স্মারক এবং কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্ট হোল্ডারদের জন্য ভিসার ছাড়-সংক্রান্ত বিনিময় নোট। পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, দু'দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা এমওইউ এবং বিনিময় নোট স্বাক্ষর করেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ব্রনাইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়া উপস্থিত ছিলেন। কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক এবং ব্রম্ননাইয়ের প্রাথমিক সম্পদ ও পর্যটনমন্ত্রী হাজী আলী বিন আপং নিজ নিজ পক্ষে কৃষি ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি সহযোগিতা সম্পর্কিত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু ও ব্রম্ননাইয়ের প্রাথমিক সম্পদ ও পর্যটন মন্ত্রী হাজী আলী বিন আপং মৎস্য ক্ষেত্রের এবং প্রাণিসম্পদের ক্ষেত্রে সহযোগিতার সমঝোতা স্মারক দুটি স্বাক্ষর করেন। সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ ও ব্রম্ননাইয়ের সংস্কৃতি, যুবা ও ক্রীড়ামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) হাজী আমিনউদ্দীন ইহসান সাংস্কৃতিক ও শিল্প সহযোগিতাবিষয়ক এমওইউ স্বাক্ষর করেন। যুবা ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এবং ব্রম্ননাইয়ের সংস্কৃতি, যুবা ও ক্রীড়ামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) হাজী আমিনউদ্দীন ইহসান যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন। বিদু্যৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং ব্রম্ননাইর জ্বালানি, জনশক্তি ও শিল্পমন্ত্রী ড. আওয়াং হাজী মাত সানি এলএনজি সরবরাহে সহযোগিতার ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন। ব্রম্ননাইয়ের সুলতানের আমন্ত্রণে তিন দিনের সরকারি সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন ব্রম্ননাইতে রয়েছেন।