ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে পবিত্র শবেবরাত পালিত

প্রকাশ | ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
রোববার রাতে বায়তুল মোকাররম মসজিদে মুসলিস্নদের ইবাদত-বন্দেগি
যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় রোববার সারাদেশে পবিত্র শবেবরাত পালিত হয়েছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহান আলস্নাহর রহমত ও নৈকট্য লাভের আশায় পবিত্র এ রজনীতে নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির, ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিলসহ এবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করেন। তবে এদিন সকালে শ্রীলংকায় কয়েকটি গির্জা ও হোটেলে সিরিজ বোমা হামলায় দুই শতাধিক ব্যক্তির মৃতু্য এবং অর্ধসহস্রাধিক আহত হওয়ার খবর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিস্নদের অনেকে বিগত সময়ের মতো সারারাত জেগে মসজিদে ইবাদত করার সাহস পাননি। তাই তারা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে বাসাবাড়িতেই নফল নামাজ আদায়, জিকির ও কুরআন তেলওয়াত সারেন। এ কারণে প্রতিবছরের চেয়ে এবার শবেবরাতের রাতে রাজধানীসহ সারা দেশের মসজিদগুলোতে মুসলিস্নদের ভিড় বেশকিছুটা কম ছিল। যদিও শ্রীলংকার গির্জা ও হোটেলে বোমা বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা পরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে এ ধরনের হামলার কোনো আশঙ্কা নেই বলে অবহিত করার পাশাপাশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা সর্বোচ্চ জোরদার করা হয়েছিল। শবেবরাত উপলক্ষে বাড়ি বাড়ি হালুয়া, ফিরনি, রুটিসহ হরেক রকমের উপাদেয় খাবার তৈরি এবং এসব খাবার আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ও গরিব-দুঃখীর মধ্যে বিতরণে কোনো ধরনের ঘাটতি দেখা যায়নি। এ ছাড়া বরাবরের মতো অনেকে রাতের বিভিন্ন সময় কবরস্থানে গিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত আপনজনদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন। এবারও আজিমপুর কবরস্থান, মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থান, মিরপুর ১০ নম্বর কবরস্থান, বনানী কবরস্থানে ধর্মপ্রাণ মুসলিস্নদের দলবেঁধে প্রার্থনা করতে দেখা গেছে। অনেকেই গভীর রাত পর্যন্ত ইবাদত-বন্দেগিতে মগ্ন থেকে শেষ রাতে সেহরি খেয়ে রোজা থেকেছেন। মুসলমানদের বিশ্বাস, এই মহিমান্বিত রাতে মহান আলস্নাহতায়ালা মানুষের ভাগ্য অর্থাৎ তার নতুন বছরের 'রিজিক' নির্ধারণ করে থাকেন। মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য এ রাতটি 'লাইলাতুল বরাত' হিসেবে পরিচিত। শবেবরাত উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে বাদ মাগরিব থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করা হয়। এসব কর্মসূচির মধ্যে ছিল কোরআন তেলাওয়াত, হামদ-নাত, ওয়াজ মাহফিল, মিলাদ ও বিশেষ মোনাজাত। জাতীয় মসজিদে ফজরের নামাজের পর আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও এ উপলক্ষে ধর্মীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে। এছাড়া দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে জাতীয় দৈনিকগুলোয় বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করা হয়। এদিকে আগের দিন রাতভর জেগে ইবাদত-বন্দেগি করায় এবং সোমবার সরকারি ছুটি হওয়ায় গতকাল দুপুর পর্যন্ত ব্যস্ততম ঢাকা মহানগরী ছিল অনেকটাই ফাঁকা। অন্যান্য দিন সকাল থেকে দিনভর যেসব রাস্তায় প্রচন্ড যানজট লেগে থাকে, সোমবার সেখানে হাতে গোনা দু'চারটে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে অধিকাংশ গণপরিবহনই ছিল অনেকটাই যাত্রীশূন্য।