ছয় ঘণ্টায় ২০ লাখ সিম বন্ধ

এসব সিমের মধ্যে গ্রামীণফোনের চার লাখ ৬১ হাজার ২৬১, বাংলালিংকের চার লাখ ৫৫ হাজার ৮৩১, রবির চার লাখ ১৯ হাজার ২০২, এয়ারটেলের ২ লাখ ২৫ হাজার ৭৪১ এবং টেলিটকের চার লাখ ৮৭ হাজার ৮৯২

প্রকাশ | ২৬ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে একজন গ্রাহকের নিবন্ধনকৃত ১৫টির অতিরিক্ত সিম নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় চারটি মোবাইল অপারেটরের মোট ২০ লাখ ৪৯ হাজার ৮৫৫টি সিম নিষ্ক্রিয় করা হয় বলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি জানিয়েছে। সংস্থার সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন খান বৃহস্পতিবার বলেন, ২৬ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার রাত) মধ্যরাত ১২টা থেকে ভোর ৬টার মধ্যে এক এনআইডির বিপরীতে অতিরিক্ত সিম নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। তিনি জানান, অতিরিক্ত সিমের মধ্যে গ্রামীণফোনের চার লাখ ৬১ হাজার ২৬১, বাংলালিংকের চার লাখ ৫৫ হাজার ৮৩১, রবির চার লাখ ১৯ হাজার ২০২, এয়ারটেলের ২ লাখ ২৫ হাজার ৭৪১ এবং টেলিটকের চার লাখ ৮৭ হাজার ৮৯২টি সিম বন্ধ করা হয়। এ বিষয়ে বিটিআরসি প্রধান জহুরুল হক বলেন, 'নিরাপদে মোবাইল সিম ব্যবহারে এ প্রচেষ্টা আরও গ্রাহকবান্ধব হবে এবং এ খাত অধিকতর সুশৃঙ্খল হবে। আশা করছি, এর ফলে জনসাধারণ নির্বিঘ্নে উন্নত টেলিযোগাযোগ সেবা গ্রহণ করতে পারবে।' এ বিষয়ে বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন 'অ্যামটব' এক ই-মেইলে বলেছে, 'গ্রাহকদের অসুবিধার কথা তুলে ধরে বিটিআরসির কাছে সময় বাড়ানোর জন্য আমরা আবেদন করেছিলাম। কারণ অনেক সিম অনলাইন বা আর্থিক কাজে ব্যবহৃত হয়। আমরা আশা করেছিলাম, নিয়ন্ত্রক সংস্থা গ্রাহকদের কথা বিবেচনা করে আমাদের আবেদনে সাড়া দেবে।' ২০১৬ সালের ২০ জুন গ্রাহক প্রতি সর্বোচ্চ ২০টি সিম রাখার সীমা বেঁধে দিয়েছিল বিটিআরসি। তা আরও কমিয়ে ২০১৭ সালের আগস্টে সর্বোচ্চ পাঁচটি সিম রাখার অনুমতি দেয়া হয়। এরপর ওই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর গ্রাহক প্রতি সর্বোচ্চ ১৫টি সিম বা রিম রাখার সুযোগ দেয় বিটিআরসি। কোনো গ্রাহকের পাসপোর্ট, এনআইডি, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা জন্ম নিবন্ধন সনদের বিপরীতে কতটি সিম রয়েছে তা দুটি পদ্ধতিতে জানা যাবে। ০ গ্রাহক *১৬০০১# নম্বরে ডায়াল করলে ইউএসএসডি কোডে তার কাছে এনআইডির শেষ চার ডিজিট জানতে চাওয়া হবে। তা লিখে সেন্ড করলে ফিরতি এসএমএসে জানিয়ে দেয়া হবে তার নামে থাকা সিমের সংখ্যা। ০ এনআইডি নম্বরের শেষ চার ডিজিট লিখে ১৬০০১ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ওই এনআইডির বিপরীতে সিম সংখ্যা জানতে পারবেন গ্রাহক। বিটিআরসি জানায়, করপোরেট গ্রাহকের ক্ষেত্রে সিম সংখ্যা নির্ধারণ করে দেয়া বাস্তব সম্মত নয়। তাই কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সিম বা রিম কেনার জন্য অনুমোদিত ব্যক্তি এ সীমার আওতামুক্ত থাকবেন। বিটিআরসির সর্বশেষ মার্চের হিসাবে মোট ১৫ কোটি ৯৭ লাখ ৮০ হাজার সিমের মধ্যে গ্রামীণফোনের ৭ কোটি ৪০ লাখ ৫৩ হাজার, রবির ৪ কোটি ৭৩ লাখ ৪১ হাজার, বাংলালিংকের ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৭২ হাজার এবং টেলিটকের ৪০ লাখ ১৪ হাজার গ্রাহক রয়েছে। যেভাবে বন্ধ হয় সিম বিটিআরসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের পর সব গ্রাহকের তথ্য বিটিআরসির কাছে রক্ষিত আছে। কেন্দ্রীয় তথ্য ভান্ডারের মাধ্যমে জানা যায়, কার কাছে কতটি সিম রয়েছে। তথ্য প্রক্রিয়া করে অপারেটরদের এসব নম্বর দেয়া হয়েছে এবং অপারেটররা গ্রাহকের সঙ্গে অতিরিক্ত সিম বন্ধের বিষয়ে ফোন দিয়ে জানিয়েছে। অপারেটরদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কোনো গ্রাহকের যদি ১৫টির বেশি সিম থাকে তাহলে তার নামে নিবন্ধিত সবচেয়ে পুরনো সিমগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। সম্প্রতি যে সিমগুলো তার নামে রয়েছে তা সচল থাকবে। যদি কারও ২০টির বেশি সিম থাকে তাহলে দেখা হয়েছে তার পুরনো ৫টি সিম কোনগুলো সেগুলোই বিটিআরসি বন্ধ করতে অপারেটরদের নির্দেশনা দিয়েছে।