আন্তঃনগর ট্রেনের চাকা ঘুরল ২৮ দিন পর

প্রকাশ | ১৬ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
কোটা আন্দোলনে সহিংসতায় বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয় আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল। ছবিটি কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে তোলা -ফোকাস বাংলা
কোটা আন্দোলন ঘিরে ব্যাপক সহিংসতার জেরে বন্ধ থাকার পর ফের ঘুরল আন্তঃনগর ট্রেনের চাকা। বন্ধের ৪ সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয় ট্রেন চলাচল। তবে এদিন সব ট্রেন চলেনি। ঢাকার কমলাপুর স্টেশনের মাস্টার আনোয়ার হোসেন বৃহস্পতিবার বলেন, 'ঢাকা থেকে প্রথম ট্রেন ছেড়েছে দুপুর ১টার পর। আমাদের এখান থেকে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন প্রথম ছেড়ে যায় ১টার দিকে। সকালে যেসব ট্রেন ছেড়ে যায়, সেগুলোর রেক ঢাকায় নেই। সেগুলো ঢাকার বাইরের বিভিন্ন স্টেশনে আছে। যেমন- চট্টগ্রাম থেকে বা অন্য স্টেশন থেকে সকালে আন্তঃনগর ট্রেন ছেড়ে আসবে। ঢাকা থেকে সেগুলো বিকালে যাবে বা কাল সকালে যাবে। কাল থেকে সবগুলো ট্রেন নির্ধারিত সময়ে চলাচল করবে।' এর আগে গত সোমবার থেকে মালবাহী এবং মঙ্গলবার থেকে লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। অনলাইনে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে সোমবার বিকাল ৫টা থেকে। কোটা আন্দোলন ঘিরে ব্যাপক সহিংসতার জেরে গত ১৮ জুলাই থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১৩ দিন বন্ধ থাকার পর ১ আগস্ট স্বল্প দূরত্বে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। দু'দিন চলার পর ৩ আগস্ট শনিবার ফের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পুলিশহীন নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। আমাদের চট্টগ্রাম বু্যরো জানায়, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর চট্টগ্রাম থেকে শুরু হয়েছে আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল। নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী চট্টগ্রাম রেল স্টেশন থেকে ছেড়ে গেছে ট্রেনগুলো। এছাড়া দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় ট্রেনগুলোতে ছিল যাত্রীর চাপ। বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যেতে পস্নাটফর্মে দাঁড়িয়ে আছে বিকাল ৩টার মহানগর গোধুলি ও বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটের সোনার বাংলা এক্সপ্রেস। একে একে যাত্রীরা এসে ঢুকছেন ট্রেনের বগিতে। এই ট্রেনের বেশিরভাগ যাত্রীই পরিবার নিয়ে ঢাকা যাচ্ছেন। ট্রেনের বগিগুলো যাত্রীপূর্ণ থাকলেও তাদের চোখে-মুখে ছিল উচ্ছ্বাস। মুস্তাফিজুর নামে এক যাত্রী পস্নাটফর্মে অপেক্ষা করছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন পরিবারের ৪ সদস্য। তিনি যায়যায়দিনকে বলেন, 'পরিবার নিয়ে শুক্রবার ঢাকা যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ট্রেন চালু হওয়ায় আজই পরিবার নিয়ে রওনা দিচ্ছি। এ ছাড়া সড়কপথ থেকে রেলপথে ভ্রমণে নিরাপত্তা বেশি।' রেলওয়ের পরিবহণ বিভাগ থেকে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে প্রতিদিন ১০টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করলেও বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম থেকে ৭টি আন্তঃনগর ট্রেন ঢাকা-সিলেট-চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যায়। সুবর্ণ এক্সপ্রেস, পাহাড়িকা ও বিজয় এক্সপ্রেসের রেক চট্টগ্রামে না থাকায় এই ৩টি ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যায়নি। রেলওয়ে সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম-চাঁদপুর রুটে চলাচলকারী সাগরিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছেড়ে গেছে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে গেছে। বিকাল ৩টায় মহানগর গোধুলি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বিকাল ৪টায় কক্সবাজার এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা ও ময়মনসিংহগামী নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিকাল ৪টা ১০ মিনিটে চট্টগ্রামে স্টেশন ছেড়ে যায়। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ৪টা ৪৫ মিনিটে চট্টগ্রাম স্টেশন ছেড়ে গেছে। চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিকাল সাড়ে ৫টায় নাজিরহাট লোকাল ট্রেন ছেড়ে গেছে। সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশে মেঘনা এক্সপ্রেস ছেড়ে যায়। সিলেটগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনটি রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে যায়। ১১টা ১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী পর্যটন এক্সপ্রেস ট্রেন ছেড়ে যায়। এরপর রাত ১১টা ৩০ মিনিটে তূর্ণা নিশীতা ও ১১টা ৪৫ মিনিটে ঢাকাগামী মেইল ট্রেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে গেছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে দুপুর ১২টার দিকে হাটহাজারী ও দোহাজারীর উদ্দেশে দুটি মালবাহী ট্রেন ছেড়ে গেছে। এদিকে গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম থেকে লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ওইদিন সকালে দুটি লোকাল ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যায়। বিকালে দুটি ও রাতে আরও একটি ট্রেন ছেড়ে যায়।