রংপুরের ভাষাসৈনিক মজিবর রহমান মাস্টার আর নেই

প্রকাশ | ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

রংপুর প্রতিনিধি
একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মোহাম্মদ মজিবর রহমান মাস্টার আর নেই (ইন্না লিলস্নাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। শনিবার সকাল ৯টার দিকে রংপুর নগরীর একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছিলেন। বদরগঞ্জ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মলিহা খানম মৃতু্যর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ১৯৩৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের খিয়ারপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন মজিবর রহমান মাস্টার। তার বাবার নাম সেরাজ উদ্দিন ও মায়ের নাম আলিমন নেছা। ১৯৪৮ সালে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় ভাষা আন্দোলনে যুক্ত হন তিনি। ১৯৫২ সালে দশম শ্রেণির ছাত্রাবস্থায় ভাষার দাবিতে আন্দোলনে যুক্ত থাকায় তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার সময় মজিবর মাস্টার শ্যামপুর হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। ১৯৭১ সালে গঠিত বদরগঞ্জের সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক হন। মজিবর রহমান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ৬ নম্বর সেক্টরের অধীনে যুদ্ধে অংশ নেন। ১ এপ্রিল সৈয়দপুর সেনানিবাস থেকে ক্যাপ্টেন আনোয়ারের নেতৃত্বে ৩ শতাধিক আনসার, পুলিশ ও সেনা সদস্য বদরগঞ্জে আসেন। তিনি ওই বহরে অংশ নেন। তারপর বদরগঞ্জ থেকে তারা দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে যান। সেখানে তাদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ৬নং সেক্টরের কমান্ডার ক্যাপ্টেন নোয়াজেসের সঙ্গে তিনি নীলফামারীর চিলাহাটির তিনটি স্থানে গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেন। পরে তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনের সঙ্গে কলকাতায় দেখা করেন। তার নির্দেশে তিনি ভারতের কুচবিহারের টাপুরহাট যুব ক্যাম্পে সহকারী রিক্রুটিং অফিসার হিসেবে যোগ দেন। মজিবর রহমান ১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বদরগঞ্জের কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়া কয়েক বছর বিসিআইসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্কাউটস আন্দোলনে যুক্ত থেকে রাষ্ট্রপতি পদকও লাভ করেন মাস্টার মজিবর রহমান। ভাষা আন্দোলনে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদক-২০২৩ পান রংপুরের কৃতি সন্তান ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মো. মজিবর রহমান মাস্টার। মজিবর রহমান মাস্টারের দুই ছেলে মোস্তাফিজার রহমান মজনু ও মোস্তাকুর রহমান শিক্ষক ও প্রকৌশলী। মেয়ে মোনসেফা খানম গৃহিণী।