খালেদা জিয়ার ১১ মামলা হাইকোর্টে বাতিল

প্রকাশ | ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
খালেদা জিয়া
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাজধানীর দারুস সালাম ও যাত্রাবাড়ী থানায় করা নাশকতার ১০টি এবং রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলা বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। এসব মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন জামিনে ছিলেন। মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়ার করা পৃথক ১১টি আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার রুল চূড়ান্ত (অ্যাবসলিউট) করে এ রায় দেন। আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ১১টি মামলার কার্যক্রমের বৈধতা নিয়ে ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন খালেদা জিয়া। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৭ সালের বিভিন্ন সময় হাইকোর্ট রুলসহ মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেন। এই রুলের ওপর শুনানি শেষে বুধবার রায় দেওয়া হয়। আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, আইনজীবী কায়সার কামাল, জাকির হোসেন ভূঁইয়া, এইচ এম সানজীদ সিদ্দিকী ও মাকসুদ উলস্নাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার। খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী, গাজী কামরুল ইসলাম, মোহাম্মদ সিদ্দিক উল্যাহ মিয়া ও আনিসুর রহমান রায়হান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, শুনানি নিয়ে আদালত ওই সব মামলায় রুল অ্যাবসলিউট করেছেন। এর অর্থ হলো, মামলাগুলো বাতিল হয়ে গেল। এই মামলাগুলো আর থাকল না। একটি ছিল রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা। এখানে খালেদা জিয়াকে সম্পৃক্ত করা হয়েছিল। সরকারে অনুমতি ছাড়া রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা যায় না। এ মামলা দায়েরে সরকারের কোনো অনুমতি ছিল না। অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও খালেদা জিয়াকে মামলায় সম্পৃক্ত করা হয়। অভিযোগপত্রও দেওয়া হয়। রুল শুনানি শেষে এই মামলার কার্যক্রমও বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। অর্থাৎ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে করা এসব মামলা থেকে তাকে বুধবার অব্যাহতি দেওয়া হলো। দুর্নীতির দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছিল। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রম্নয়ারি তিনি কারাবন্দি হয়েছিলেন। দুই বছরের বেশি সময় তিনি কারাবন্দি ছিলেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। এর পর ছয় মাস পরপর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছিল সরকার। ছাত্র-জনতার অভু্যত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৬ আগস্ট খালেদা জিয়াকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেওয়া হয়। যুক্তরাজ্য যেতে ভিসার বিষয়ে সহযোগিতা করবে সরকার এদিকে, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, চিকিৎসার উদ্দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া ও তার টিমকে যুক্তরাজ্য সফরে ভিসার বিষয়ে সরকার সহযোগিতা করবে। বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ৭ নভেম্বর যুক্তরাজ্যে যাবেন। সে ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কি ব্যবস্থা নিচ্ছে। সফরে সে দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার সুবিধা নিশ্চিত করবেন কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, জ্বি তিনি চিকিৎসার জন্য যাবেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যাচ্ছেন বলেই তো তাকে এবং তার টিমকে ভিসার ব্যাপারে সহযোগিতা করব। এটা আমরা করব। ওখানে যাওয়ার পরে আমার তো মনে হয় না ওখানে তার কোনো সমস্যা হওয়ার ব্যাপার আছে। সেখানে তার নিজস্ব সংগঠন আছে, আমাদের মিশন আছে। যেটুকু নিয়ম অনুযায়ী করার আমরা অবশ্যই করব।