গণভবনে মতবিনিময়

জঙ্গিদের কোনো ধর্ম, দেশ ও সীমানা নেই: প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে। সব ধর্মের মানুষ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান করতে পারে, তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের কর্তব্য

প্রকাশ | ২১ মে ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে গণভবনে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর ফটোসেশনে অংশগ্রহণ করেন -ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার বাংলাদেশ থেকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দূর করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে চায়। তিনি বলেন, 'এটা খুবই দুঃখজনক যে, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ এখন বিশ্বব্যাপী সমস্যা হয়ে উঠেছে। প্রকৃতপক্ষে যারা জঙ্গিবাদে জড়িত, তারা কেবল জঙ্গি। তাদের কোনো ধর্ম, দেশ ও সীমানা নেই। তারা কেবল জঙ্গি- এটাই সত্য। এই দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা বাংলাদেশকে এ সব থেকে মুক্ত রেখে এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে চাই।' বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বর্তমানে দেশ ক্ষুধা থেকে মুক্ত হয়েছে। দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে হবে। দেশে বর্তমানে ২১ শতাংশ দারিদ্র্য এবং ১১ শতাংশ অতি দারিদ্র্য রয়েছে। আমরা দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়তে চাই। সরকার সেই লক্ষ্যেই কাজ করছে।' সরকার ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবার উন্নয়ন করতে চায় উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এটাই আমাদের কর্তব্য এবং আমাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ।' শেখ হাসিনা বলেন, সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে। সব ধর্মের মানুষ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান করতে পারে, তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের কর্তব্য। এটাই ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িকতা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনটি ভালো আর কোনটি খারাপ এবং কোনটি ঠিক আর কোনটি ভুল, সেটা সৃষ্টিকর্তা নির্ধারণ করবেন। সৃষ্টিকর্তা মানুষকে সে দায়িত্ব দেননি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সরকার বাংলাদেশের সব জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় রীতিনীতি মর্যাদা ও আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করবে। সবার মধ্যে সেই সহিষ্ণুতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ থাকবে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আমার তার জন্য চেষ্টা করছি।' অবহেলিত না ভেবে সবাইকে নিজ নিজ ধর্ম পালনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বাংলাদেশ বিশ্বের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ভূমিকা পালন করছে, আমরা এমনটাই দেখতে চাই।' প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপস্নব বড়ুয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়াও বক্তব্য দেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুলস্নাহ, সাংসদ দিপঙ্কর তালুকদার, বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সভাপতি, আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ, শাক্যমুণি বৌদ্ধবিহারের অধ্যক্ষ, নব শালবন বিহারের অধ্যক্ষ, বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এবং বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন। জাপানি রাষ্ট্রদূতের \হসৌজন্য সাক্ষাৎ বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপান সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াশু ইজুমি। সোমবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে গিয়ে তার দেশের পক্ষ থেকে এই আশ্বাস শোনান রাষ্ট্রদূত। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম পরে সাংবাদিকদের বলেন, 'জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, আগামী পাঁচ বছর বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এ সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও এগিয়ে যাবে।' 'জাপান বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান রাষ্ট্রদূত,' বলেন এহসানুল করিম। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।