একই সময় কর্মসূচি রংপুরে গণ অধিকার ও জাপা মুখোমুখি নগরীতে উত্তেজনা

রংপুরে গণ অধিকার পরিষদের বিভাগীয় সমাবেশ আজ শুক্রবার বিকাল ৩টায় জিলা স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। একই সময় নগরের সেন্টাল রোডে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়ের সামনে কর্মী সমাবেশের ডাক দিয়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। এ নিয়ে দল দুটির নেতাকর্মীরা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন। কর্মসূচিকে ঘিরে নগরীতে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা- এমন আশঙ্কা করছেন নগরবাসী। সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ সদস্যরাও। সম্প্রতি গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ ও কটূক্তিমূলক বক্তব্য প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার জন্য এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির নেতাদের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিল দলটি। সেই সঙ্গে ক্ষমা প্রার্থনাসহ বক্তব্য প্রত্যাহার না করা হলে রংপুরসহ সারাদেশে জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে গণবিপস্নব এবং আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। অন্যদিকে, রাজধানীতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাসহ গণ অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে সারাদেশে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রংপুরে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের অসন্তোষ দেখা দেয়। এ নিয়ে স্থানীয় জাপা নগরীতে বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগর সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা এক বিক্ষোভ সমাবেশে বলেন, ভিপি নুরের গণ অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে গোটা দেশে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলের টাকায় চলা গণ অধিকার পরিষদকে হিসাবের খাতায় রাখেন না বলেও তিনি হুঁসিয়ারি দেন। এর পাশাপাশি সব ষড়যন্ত্রকে রাজপথে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন তিনি। জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে আমরা প্রস্তুত বলেও তিনি জানান। এরই ধারাবাহিকতায় আজ শুক্রবারের কর্মসূচি সফল করতে মাঠে প্রচার-প্রচারণায় নামে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। নগরজুড়ে মাইকিংয়ের পাশাপাশি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পার্টির নেতারা কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে সমন্বয় করছেন। এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির জানান, শুক্রবার জাতীয় পার্টি রংপুর মহানগর ও জেলার যৌথ কর্মিসভা পার্টির কার্যালয়ের সামনে বিকাল ৩টায় শুরু করবে। এতে পার্টির রংপুর মহানগর ও জেলা নেতারা ছাড়াও মহানগরের ৩৩টি ওয়ার্ড এবং আট উপজেলা কমিটির সব নেতা উপস্থিত থাকবেন। পাশাপাশি পার্টির মহানগর ও জেলার সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনে গণ অধিকার পরিষদের নেতারা বলেছেন, রংপুরে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে পরিচিত জাতীয় পার্টির নেতারা বিক্ষোভ মিছিল করেন। যেখানে ফ্যাসিবাদ পতনের অন্যতম রূপকার ডাকসুর সাবেক ভিপি গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও গণ অধিকার পরিষদ সম্পর্কে অত্যন্ত বাজে ভাষায় কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও কটূক্তিমূলক সেস্নাগানসহ বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। গণ অধিকার পরিষদ ফ্যাসিস্ট হাসিনার অবৈধ ক্ষমতার সহযোগী জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের এমন অসভ্য আচরণ ও জঘন্য কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। জুলাই বিপস্নবের শহীদ আবু সাঈদের রক্তস্নাত রংপুরের মাটিতে গণহত্যাকারী খুনি হাসিনার ফ্যাসিস্ট ও তার সহযোগীদের রাজনীতির স্থান হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন দলটির নেতারা। গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য হানিফ খান সজীব বলেন, তার দল শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করবে। প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে। পোস্টার, ব্যানার-ফেস্টুন সাঁটানো হয়েছে নগরীর বিভিন্ন স্থানে। বিভাগীয় সমাবেশের প্রস্তুতি ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীরা বেশ উজ্জীবিত। তিনি তাদের কর্মসূচি সফল করতে জাতীয় পার্টি নিয়ে ভাবছেন না বলে জানান। রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী জানান, তার বাহিনীর সদস্যরা নগরজুরে সতর্ক অবস্থানে থাকবে। যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে না পারে।