বগুড়া উপনির্বাচন

নাখোশ খালেদা জিয়া মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করেননি

প্রকাশ | ২৩ মে ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ২৩ মে ২০১৯, ০০:১৬

যাযাদি রিপোর্ট
বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী হবেন না বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। উপনির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্তে তিনি নাখোশ হওয়ার পাশাপাশি মনোনয়নপত্রেও স্বাক্ষর করেননি। তাই বুধবার গুলশান কার্যালয় থেকে বেগম জিয়ার জন্য সংগ্রহ করা মনোনয়ন ফরম নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে সংশ্লিষ্টদের বারণ করেছে বিএনপি। বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব আবদুস সাত্তার জানিয়েছেন, বেগম জিয়ার কাছে মনোনয়নপত্র পাঠানো হলেও তিনি স্বাক্ষর করেননি। তিনি নির্বাচনে করতে রাজি নন। অবশ্য বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, বাকি চার নেতা জি এম সিরাজ, মাহবুবুর রহমান, রেজাউল করিম বাদশা এবং জয়নুল আবেদীন চাঁন মনোনয়পত্র জমা দেবেন আজ। বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, বুধবার সকালে বিএনপি চেয়াপারসনের একান্ত সচিব আবদুস সাত্তার কারাবিধি অনুযায়ী মনোনয়নপত্র কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন। সেখান থেকে তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পাঠানো হয়। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া মনোনয়নপত্র দেখেই ক্ষুব্ধ হন। জানা গেছে, একজন অরাজনৈতিক দূত মারফত খালেদা জিয়া নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি এও বলেছেন, নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত কে নিলো তা তিনি জানেন না। খালেদা জিয়া সম্মত না হওয়ায় এই নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কারণ, যেখানে চেয়ারপারসন নির্বাচন করতে আগ্রহী নন, সেখানে দলের নির্বাচনে যাওয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জানা গেছে, জ্যেষ্ঠ নেতাদের অধিকাংশই বগুড়া নির্বাচনে যাওয়ার বিপক্ষে। তারা মনে করেন, ৩০ ডিসেম্বরের বিতর্কিত নির্বাচনের পর যেখানে দল উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি, সেখানে একটি উপনির্বাচনে কীভাবে অংশগ্রহণ করে? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের এক নেতা বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর খালেদা জিয়া তার দলের নেতাদের সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণের বিষয়ে রাজি ছিলেন না। এ সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তও তিনি দিয়েছেন কারাগার থেকে। এদিকে মঙ্গলবার বিকালে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বগুড়া জেলা বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান উপনির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত দেন। খালেদা জিয়াসহ দলের ৫ নেতা মনোনয়নপত্র জমা দেবেন বলেও সিদ্ধান্ত হয়। অবশ্য গতকাল নয়া পল্টনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ জানিয়েছেন, নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সপ্তাহ খানেক ধরে স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলেন তারেক রহমান। বগুড়া উপনির্বাচনে অংশগ্রহণ করা ঠিক হবে কি না তা জানতে চান। তবে জ্যেষ্ঠ নেতাদের অধিকাংশ নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে ছিলেন। তারপরও দলের গুরুত্বপূর্ণ এক নেতার সঙ্গে পরামর্শ করে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তারেক রহমান। প্রসঙ্গত, ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনে এ আসন থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচিত হন। সংসদের প্রথম অধিবেশনের প্রথম দিন থেকে ৯০ দিনের মধ্যে শপথ গ্রহণ না করায় তার আসন শূন্য হয়ে যায়। আগামী ২৪ জুন এ আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।