পদত্যাগের প্রস্তাব রাহুলের কংগ্রেসের প্রত্যাখ্যান

প্রকাশ | ২৬ মে ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ২৬ মে ২০১৯, ০০:১৮

যাযাদি ডেস্ক
শনিবার দিলিস্নতে ভারতীয় কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী ও মনমোহন সিংহ -ইন্টারনেট


নির্বাচনে ভরাডুবির দায় নিয়ে ভারতের কংগ্রেস-দলীয় সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন রাহুল গান্ধী, কিন্তু দলটির ওয়ার্কিং কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছে।
এর বদলে তারা ‘এই কঠিন সময়ে তাদের নেতৃত্ব দেয়ার জন্য’ রাহুলকে অনুরোধ করেছেন বলে কংগ্রেসের মুখপাত্রের বরাতে জানিয়েছে এনডিটিভি।
শনিবার ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পর কংগ্রেসের মুখপাত্র রনদীপ সুরজেওয়ালা বলেছেন, ‘এই কঠিন সময়ে পথ দেখানোর জন্য রাহুল গান্ধীকে আমাদের প্রয়োজন।’
এবারের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস মাত্র ৫২টি আসন পেয়েছে। এর আগে ২০১৪ সালে দলটি তাদের ইতিহাসের সর্বনিম্ন ৪৪টি আসন পেয়েছিল। এবার মাত্র আটটি আসন বেড়েছে।  
ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে চার ঘণ্টা ধরে দলের এই ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে দলটির শীর্ষ নেতারা রাহুলের প্রশংসা করেন এবং তাকে পার্টি ঢেলে সাজানোর দায়িত্ব দেন।
নির্বাচনে রাহুল গান্ধী ও তার বোন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী ভদ্র ভারতজুড়ে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছিলেন। কিন্তু সবশেষ ফলাফল কংগ্রেসের জন্য বড় ধরনের বিপর্যয় বয়ে আনে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপি ও এর মিত্র দলগুলো লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ৩৫০টিরও বেশি আসন পেয়ে বিপুল জয় ছিনিয়ে নেয় এবং টানা দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত করে। 
মোদিকে লক্ষ্য করে ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লেøাগান তুলে দেশব্যাপী নির্বাচনী প্রচারণা চালান রাহুল গান্ধী, কিন্তু তার প্রচারণার এ কৌশল কাজে লাগেনি। 
ভারতের ১৭টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে কংগ্রেস একেবারে মুছে গিয়েছে। এমনকি ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় অঞ্চলের যে তিনটি রাজ্যের বিধানসভার নির্বাচনে কংগ্রেস জয় পেয়েছিল সেগুলোতেও দলটি সুবিধা করতে পারেনি। দলটি ছত্তিশগড়ে দুটি আসনে, মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে একটি করে আসনে জয় পায়।
দলের তুরুপের তাস হিসেবে বিবেচিত প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকে প্রচারণায় নামিয়েও কাক্সিক্ষত ফল পায়নি কংগ্রেস। উত্তর প্রদেশে তার আক্রমণাত্মক প্রচারণা ও প্রধানমন্ত্রী মোদিকে সরাসরি আক্রমণ করে কথা বলার পরও রাজ্যটিতে কংগ্রেস মাত্র একটি আসন পেয়েছে। সেটি রায়বারেলির আসন, সেখানে সোনিয়া গন্ধী জয়ী হয়েছেন।
এই রাজ্যে গান্ধী পরিবারের ঐতিহ্যবাহী আসন আমেথিতে পরাজিত হয়েছেন স্বয়ং কংগ্রেস সভাপতি রাহুল। কেরালার ওয়ানাডের আসন থেকে জয় পেয়ে রাহুল লোকসভায় যাওয়ার সুযোগ ধরে রাখতে পেরেছেন।
বৃহস্পতিবার তিনি নির্বাচনের ফল বিপর্যয়ের ‘শতভাগ’ দায় গ্রহণ করছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন। পদত্যাগ করবেন কি নাÑ এমন প্রশ্নে ‘আমি ও দলের ওয়ার্কিং কমিটির ওপর নির্ভর করছে’ বলে উত্তর দিয়েছিলেন।
নির্বাচনের ফল বিপর্যয়ের বিষয়ে মহারাষ্ট্র কংগ্রেসের প্রধান অশোক চাবন বলেছেন, ‘এই হারের জন্য রাহুল গান্ধী একা দায়ী নন। প্রত্যেক রাজ্য সভাপতির উচিত তাদের পদত্যাগ পত্র দলের সভাপতির কাছে পেশ করা। নতুন টিম যেন দায়িত্ব নিতে পারে তার জন্য আমিও পদত্যাগে প্রস্তুত আছি।’