গণঅভু্যত্থানে নিহত অজ্ঞাত ৬ মরদেহের সন্ধান!

প্রকাশ | ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
গণআন্দোলনে শিক্ষার্থীরা -ফাইল ছবি
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) মর্গে অশনাক্ত ৬ মরদেহ পেয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই অভু্যত্থান বিষয়ক সেল। প্রাথমিকভাবে শাহবাগ থানা বলছে, মরদেহগুলো বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময়ের। তবে মরদেহগুলোর পরিচয়, মৃতু্যর সময়, তারিখ জানা যায়নি। শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সেল সম্পাদক হাসান ইনাম। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই গণঅভু্যত্থান বিষয়ক বিশেষ সেল তাদের অনুসন্ধানে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে গণঅভু্যত্থানে শহীদ হওয়া ৬টি অশনাক্তকৃত মরদেহ আছে বলে জানতে পারে। আজ সকালে সেলের একটি টিম এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করার জন্য শাহবাগ থানায় যায় এবং শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর ছয়টি মরদেহ এখনও হিমাগারে থাকার তথ্য নিশ্চিত করে। মরদেহগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক মর্গে আছে বলে তিনি জানান। বিশেষ সেল টিম ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক মর্গে গিয়ে সরেজমিনে মরদেহগুলো পরিদর্শন করে। হাসান ইনামের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মরদেহগুলোর কেবল বয়স নিশ্চিত হওয়া গেছে। একজনের নাম জানা গেছে। মরদেহগুলোর মধ্যে অজ্ঞাতনামা পুরুষ (২০), অজ্ঞাতনামা পুরুষ (২৫), অজ্ঞাতনামা পুরুষ (২২), অজ্ঞাতনামা মহিলা (৩২), অজ্ঞাতনামা পুরুষ (৩০), এনামুল (২৫) রয়েছেন। লিখিত বক্তব্যে হাসান ইনাম বলেন, মরদেহগুলোর ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তে ৫ জনের মৃতু্যর কারণ হিসেবে লেখা হয়েছে 'আঘাত জনিত কারণে মৃতু্য'। এনামুলের মৃতু্যর কারণ হিসাবে 'ডিজিস্ট ওপর থেকে নিচে পড়ে মৃতু্য' লেখা হয়েছে। তিনি বলেন, মরদেহগুলোর ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে। মরদেহের পরিহিত আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। এ মুহূর্তে সবগুলো মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক হিমাগারে রক্ষিত আছে। শাহবাগ থানার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মরদেহগুলো বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের। তবে কবে এবং কত তারিখে তারা মরদেহগুলো এনেছে সেটা স্পষ্ট করেনি। অজ্ঞাত এসব মরদেহ পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে অন্তর্বতী সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একই সঙ্গে এ বয়সের কেউ যদি নিখোঁজ থাকেন, তাহলে তার পরিবারকে জুলাই গণঅভু্যত্থান বিষয়ক বিশেষ সেলে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করেছে এ সেল। শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর সংবাদ সম্মেলনে উলেস্নখিত তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমরা তাদের তথ্যগুলো দিয়েছি। এবং ৬টি মরদেহ থাকার বিষয়ে নিশ্চিত করেছি। আগামীর বাংলাদেশে সত্যকে সত্য মিথ্যাকে মিথ্যা বলতে হবে \হ- সারজিস আলম যাযাদি রিপোর্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম জনগণের উদ্দেশে বলেছেন, আগামীর বাংলাদেশে আপনারা সত্যকে সত্য বলবেন ও মিথ্যাকে মিথ্যা বলবেন, ভালোকে ভালো ও খারাপকে খারাপ বলবেন। আর যদি খারাপকে খারাপ না বলেন, তাহলে কয়েক বছর পরে সেই খারাপ লোকই আপনার গলা চেপে ধরবে। তিনি আরও বলেন, তরুণ প্রজন্মের সবাই ঐক্যবদ্ধ হলে কোনো অপশক্তিই তাদের আটকে রাখতে পারবে না। শুক্রবার ভোলা শহরের বিভিন্ন সড়কে জুলাই অভু্যত্থানে শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিসহ সাত সাত দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির জনসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ শেষে এক পথসভায় এসব কথা বলেন সারজিস আলম। দুপুরের দিকে ভোলা বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ সংলগ্ন ইলিশা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ পথসভার আয়োজন করা হয়। সারজিস আলম বলেন, সাধারণ মানুষ সবাই ঘোষণাপত্রে প্রথমেই শেখ হাসিনার ফাঁসি দেখতে চায়। তিনি দেশে গোপালগঞ্জের যে সিন্ডিকেট বসিয়েছেন, তার শেষ করে সমতার একটি সিস্টেম চায় মানুষ। তিনি আরও বলেন, অভু্যত্থানে আমরা রক্ত দিয়েছি, জীবন দিয়েছি। যে শব্দগুলো আমরা ধারণ করি বাংলাদেশকে নিয়ে, যে শব্দগুলো আমরা দেখি; সেই শব্দগুলো একটি ঘোষণাপত্রে লিখিত আকারে থাকা প্রায়োজন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সারজিস আলম ভোলায় আন্দোলনে শহীদ জসিম উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের খোঁজখবর নেন এবং তার কবর জিয়ারত করেন। পরে জুলাই অভু্যত্থানে শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিসহ সাত সাত দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির জনসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ শুরু করেন। বাংলা স্কুল মোড়, সদর রোড, চক বাজার, নতুন বাজারে হেঁটে হেঁটে জনসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেন সারজিস আলম। পথসভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, সদস্য আরিফুল রহমান তুহিন, আব্দুল আল মামুন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এম এ নাঈম ও ভোলা সমন্বয়ক ইসরাফিল হোসাইন জাবির।