স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে পুলিশ সংস্কার কমিশন। কমিশনের খসড়া সুপারিশ অনুযায়ী, পুলিশ পরিচালিত হবে এই কমিশনের মাধ্যমে। কমিশনে জাতীয় সংসদের সরকারি দল ও বিরোধী দলের দুজন করে সদস্য থাকবেন।
বুধবার এই কমিশনসহ চারটি সংস্কার কমিশন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন। বাকি তিন কমিশন হলো সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন।
সাবেক সচিব সফর রাজ হোসেনের নেতৃত্বাধীন এ কমিশন পুলিশ সংস্কারের জন্য সাধারণ মানুষের মত নিয়েছিল। সেই সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৮৮.৭ শতাংশ মানুষ এ বাহিনীকে 'রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত' করার ওপর জোর দেন। বাহিনীতে নিয়োগ, বদলি, বেতনভাতা ও পদোন্নতি, বৈষম্য নিরসনসহ নানা বিষয়ে সুপারিশ আছে।
বিশেষজ্ঞরাও বলেছেন, সব জায়গায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ রয়েছে। সেটা ঠিক করতে না পারলে কোনোভাবেই পুলিশ সংস্কার সম্ভব হবে না। রাজনৈতিক আমলাতন্ত্রের কারণে পুলিশ নিয়ন্ত্রিত হয়ে যায়। রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তির বাইরে গিয়ে পুলিশকে স্বতন্ত্র কমিশনের অধীনে রাখার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে সুপারিশে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জুলাই-অগাস্টে হতাহতের জন্য দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তির সুপারিশ এবং পুলিশ যেন রাজনৈতিক দলের বাহিনীতে পরিণত না হয় ও বল প্রয়োগ-সংক্রান্ত বিষয়েও সুপারিশ থাকতে পারে।
পুলিশ সংস্কার কমিশন সূত্র আরও জানায়, তাদের সুপারিশে স্বাধীন পুলিশ কমিশনের অধীন একটি পর্যালোচনা কমিটি রাখার কথা বলা হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ এলে তারা তা তদন্ত করবে। এ ছাড়া পুলিশে নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে যোগ্য কর্মকর্তাদের তালিকা বা 'ফিট লিস্ট' করা, পুলিশে আলাদা মেডিকেল কোর ও টেকনিক্যাল কোর করারও সুপারিশ করা হয়েছে।
জুলাই গণ-অভু্যত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের কথা বলেছে। এর অংশ হিসেবে দুই ধাপে মোট ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। এর মধ্যে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে গঠন করা হয় নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ও সংবিধান সংস্কার কমিশন।##