পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান
আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ১৯ কোটি পাউন্ডের দুর্নীতির এ মামলায় ইমরানকে ১৪ ও বুশরাকে ৭ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত।
আদিয়ালা কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতকক্ষে বিচারপতি নাসির জাভেদ রানা শুক্রবার এ রায় ঘোষণা করেন। এর আগে তিনবার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেও তা পেছানো হয়েছিল।
পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন জানিয়েছে, আদালত এই দম্পতিকে জরিমানা দন্ডও দিয়েছে। ইমরানকে ১০ লাখ পাকিস্তানি রুপি ও বুশরাকে পাঁচ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে তাদের যথাক্রমে ছয় মাস ও তিন মাসের অতিরিক্ত কারাদন্ড ভোগ করতে হবে।
এদিকে, এই মামলার রায়কে ঘিরে আদিয়ালা কারাগারে আশপাশে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। রায় ঘোষণার পর বুশরা বিবিকে আদালত কক্ষ থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়, তিনি জামিনে ছিলেন। ইমরান আগস্ট, ২০২৩ থেকেই আদিয়ালা কারাগারে বন্দি আছেন।
রয়টার্স লিখেছে, আর্থিক দুর্নীতির মামলাগুলোতে ইমরানের (৭২) পাওয়া সাজার মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড়। ইমরানের প্রধানমন্ত্রীত্বকালে ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এক আবাসন ব্যবসায়ীকে অবৈধ সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে সাবেক এই ক্রিকেট তারকা ও তার স্ত্রী জমি উপহার নিয়েছিলেন, এমন অভিযোগে গত বছরের ফেব্রম্নয়ারিতে অভিযুক্ত হন তারা।
আদালতে ইমরান ও বুশরা নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেন। ইমরানের রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-ইনসাফ পাকিস্তানের (পিটিআই) সঙ্গে দেশটির সরকারের আলোচনা চলার মধ্যে এই মামলার রায় তিনবার পেছানো হয়।
রায় ঘোষণার মূল তারিখ ছিল ২৩ ডিসেম্বর। কিন্তু শীতের ছুটির কারণে ইসলামাবাদের জবাবদিহিতা আদালত রায় ঘোষণা ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতুবী করে। ৬ জানুয়ারি মামলার বিচারক ছুটিতে থাকায় সেদিনও রায় ঘোষণা হয়নি।
পরবর্তী তারিখ ছিল ১৩ জানুয়ারি। এদিন ইমরান ও বুশরা আদিয়ালা কারাগারে উপস্থিত হতে পারেননি আর এর জন্য হওয়া দেরিকে কারণ দেখিয়ে আদালত রায় ঘোষণা আবার পিছিয়ে দেয়।
পিটিআই এক বিবৃতিতে বলেছে, 'আমরা রায়ের বিস্তারিত বিবরণের অপেক্ষায় আছি। তবে এটা লক্ষ্য করা গুরুত্বপূর্ণ যে ইমরান খান ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে আল কাদির ট্রাস্ট মামলার কোনো শক্ত ভিত্তি নেই, তাই এ মামলা টিকবে না।'
ইমরান ২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টের এক আস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা হারান। তারপর থেকে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কে দেওয়াসহ এক ডজনের বেশি মামলার মুখোমুখি হন তিনি। বেশিরভাগ মামলায় তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে অথবা তার সাজা স্থগিত করা হয়েছে।