ফেব্রম্নয়ারিতে আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে ফিরছে বিএনপি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত

প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

বিশেষ প্রতিনিধি
আগামী ফেব্রম্নয়ারিতে ্‌আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে ফিরছে বিএনপি। দুই ধাপে হবে এই কর্মসূচি। রমজানকে সামনে রেখে দ্রব্যমূল্য কমানোর দাবিতে প্রথম ধাপের কর্মসূচি এবং দ্বিতীয় কর্মসূচি হবে সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার দাবিতে। দ্রম্নত নির্বাচনের জন্য বিএনপি যে দাবি জানিয়ে আসছিল, সে লক্ষ্যে সরকারকে চাপে রাখতে মূলত দ্বিতীয় কর্মসূচি পালন করবে। দুই ইসু্যতেই রমজানের আগেই ঢাকাসহ দেশব্যাপী সমাবেশ করবে দলটি। খুব শিগগিরই বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করে কর্মসূচির দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হবে। সোমবার রাতে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি গত কয়েক মাস ধরে একটি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনমুখী প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। আগামী জুলাই-আগস্টের মধ্যেও নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব বলে মনে করছে দলটি এবং এ ব্যাপারে তাদের অবস্থান ইতোমধ্যে তুলে ধরেছে। অন্যদিকে সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে যে কোনো সময় নির্বাচন হতে পারে। তবে বিএনপি আগামী বছরের জুন পর্যন্ত সময়কে নির্বাচনের জন্য 'খুবই অতিরিক্ত সময়' বলে মনে করছে। দলটির অভিমত, নির্বাচনের জন্য এত সময়ের দরকার নেই। বিএনপি মনে করছে, নূ্যনতম সংস্কার করে একটি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব এবং সেটি জুলাই-আগস্টেই সম্ভব। জানা গেছে, জুলাই-আগস্টে নির্বাচনের দাবিটা মূলত সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য। দলটি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন আশা করছে। সূত্র জানায়, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ছাত্রদের জুলাই অভু্যত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ছাত্ররা বিএনপির কাছে ওই ঘোষণাপত্রের যে খসড়া পাঠিয়েছে, সেটা নিয়ে বিএনপি নেতারা আলোচনা করেছেন। সেখানে কী কী ধরনের পরিমার্জন, পরিবর্ধন আনা যায়, সেগুলো নিয়ে দলের ভেতরে কাজ চলছে। এই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন নিয়ে বিএনপির প্রশ্ন থাকলেও ছাত্রদের এই উদ্যোগকে সম্পূর্ণরূপে বাদ দিতে চায় না। সেজন্য দলটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই ঘোষণাপত্রের কোথায় কোথায় পূর্ণাঙ্গ রূপ দেওয়া যায়, সেটা তারা করবে। খসড়া ঘোষণাপত্র নিয়ে ছাত্রদের পক্ষ থেকে বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতি বাতিলের ব্যাপারে যে কথা বলা হচ্ছে, সেটি যুক্তিসঙ্গত নয়। বিএনপি মনে করে, মুক্তিযুদ্ধই হবে বাংলাদেশের ভিত্তি। এরপরে বাংলাদেশের আরো অনেক অর্জন রয়েছে। এগুলো রেখেই ঘোষণাপত্র তৈরি করতে হবে। ইতোমধ্যে খসড়া ঘোষণাপত্র মোডিফাই (সংশোধন) করেছে দলটি। আজ (বুধবার) জরুরিভিত্তিতে আবার স্থায়ী কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে এগুলো চূড়ান্ত হবে। এরপর সংশোধনকৃত খসড়া নিয়ে যুগপতের শরিকদের সাথেও আলোচনা করবে। পরবর্তীতে এ ইসু্য নিয়ে সরকার আলোচনায় ডাকলে 'শরিকদের সাথে ঐকমত্যের ভিত্তিতে তৈরিকৃত খসড়া' সেখানে তুলে ধরবে বিএনপি। ছাত্রদের খসড়া ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, এটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে কার্যকর বলে ধরে নেওয়া হবে। তবে এটা এভাবে দেওয়ার কোনো সুযোগ আছে বলে মনে করে না বিএনপি। দলটির অভিমত, এটা অপ্রয়োজনীয়। এটাকে ডিক্লারেশন আকারে দিতে হবে। আর যখন এটা নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য হবে, তখন এটা ঘোষিত হয়েছে বলে গণ্য হবে। তবে ছাত্ররা এটাকে যে ব্যাকডেটেড প্রক্লেমেশন আকারে দেওয়ার যে কথা বলছে, সেভাবে দেওয়ার কোনো সুযোগ আছে বলে মনে করছে না দলটি।