৫০০ টাকার বাসভাড়া দেড় হাজার
প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
রেলওয়ে রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে সারা দেশের সব স্টেশন থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। এ বিষয়ে রেলওয়ে থেকে যাত্রীদের আগাম কোনো বার্তাও দেওয়া হয়নি। ফলে স্টেশনে এসে ফিরে যাওয়াসহ গন্তব্যে পৌঁছানো নিয়ে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। খুলনা অঞ্চলের যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, ট্রেন বন্ধ থাকায় বাসসংশ্লিষ্টরা যাত্রীদের অনেকটাই জিম্মি করে ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন। অন্যদিকে ময়মনসিংহ অঞ্চলে ২৮ জোড়া ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। ফলে ট্রেন যোগাযোগের ওপর নির্ভরশীল এই অঞ্চলের মানুষ বেশ ভোগান্তিতে পড়েছেন।
খুলনা: মঙ্গলবার সকালে দূরদূরান্ত থেকে যাত্রীরা খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে এসে ট্রেন চলাচল বন্ধ দেখে ফিরে গেছেন। অবশ্য এখানে অগ্রিম কাটা টিকিটের অর্থ যাত্রীদের ফেরত দিয়েছে রেলস্টেশন কর্তৃপক্ষ।
খুলনা থেকে ট্রেন বন্ধ থাকায় চাপ পড়েছে বাসের ওপর। এতে বাসের ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাস না পেয়ে ট্রেন ছাড়বে, সেই আশায় অনেককে স্টেশনের আশপাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে।
যাত্রীরা অভিযোগ করেন, ট্রেন বন্ধ থাকবে, এমন কোনো নোটিশ তাঁরা পাননি। এসএমএস বা অন্য কোনো মাধ্যমেও কাউকে ব্যাপারটা জানানো হয়নি। ট্রেন বন্ধ থাকবে ব্যাপারটি জানলে আগে থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
মঙ্গলবার সকালে খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় অনেক যাত্রীকে বসে থাকতে দেখা গেছে। তাঁদের অনেকেই ট্রেন চলাচল বন্ধের খবর জানতেন না। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্টেশনে অনেক যাত্রীকেই ট্রেনের খবর জানতে আসতে দেখা যায়। ট্রেন চলবে না জেনে অনেকেই স্টেশন ছেড়ে যান।
সকালে খুলনা রেলওয়ে স্টেশনে বসে ছিলেন মো. সানাউলস্নাহ নামে নওগাঁর সাপাহার উপজেলার এক ব্যক্তি। তার সঙ্গে দুটি বস্তা ছিল। বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যেই সকালে বাগেরহাট থেকে খুলনা এসেছিলেন। তিনি বলেন, প্রায় দেড় মাস আগে বাড়ি থেকে খুলনায় এসেছেন। বাগেরহাটে কৃষিকাজ করতে গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার সকালে বাড়িতে ফেরার উদ্দেশ্যে খুলনায় এসে দেখেন ট্রেন বন্ধ। সঙ্গে সঙ্গে সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালে চলে যান। সেখানে ৫০০ টাকার ভাড়া চাওয়া হচ্ছে দেড় হাজার টাকা, তাুও টিকিট নেই। এরপর সবাই মিলে ট্রাক ভাড়া করতে গিয়েছিলেন। প্রতি ট্রাকের ভাড়া চাইছে ২৫ হাজার টাকা। এত টাকা তাঁদের কাছে নেই। কাজ করে যে টাকা পেয়েছেন, তা বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন। তাঁর কাছে আছে মাত্র এক হাজার টাকা। এমন পরিস্থিতিতে ট্রেন ছাড়বে কি না, সে জন্য আবার স্টেশনে এসে বসে আছেন।
মো. মইনুল ইসলামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায়। তিনিও কৃষিকাজ করার জন্য খুলনায় এসেছিলেন। তার সঙ্গে আছেন আরও কয়েকজন। মইনুল ইসলাম বলেন, 'ট্রেন চলাচল বন্ধ, তা জানতাম না। সকাল আটটায় স্টেশনে এসে দেখি ট্রেন চলছে না। এখন কোনো বাসও নেই। ট্রেন যদি না ছাড়ে, তাহলে সবাই মিলে বাস বা ট্রাক ভাড়া করে বাড়ি যাব।'