বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে খালেদা জিয়ার দাঁতের চিকিৎসা

প্রকাশ | ১৩ জুন ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বুধবার বিএসএমএমইউর কেবিন বস্নক থেকে ডেন্টাল ইউনিটে নেয়া হয় -যাযাদি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে মুখের ঘায়ের জন্য ডেন্টাল ইউনিটে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গত ১ এপ্রিল থেকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের কেবিন বস্নকের ৬২১ নম্বর কেবিনে ভর্তি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদাকে বুধবার দুপুরে একটি মাইক্রোবাসে করে হাসপাতালের 'এ' বস্নকে নেয়া হয়। পরে হুইল চেয়ারে বসিয়ে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় চতুর্থ তলায় ডেন্টাল ইউনিটে। ঘণ্টাখানেক পর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আবার তাকে কেবিনে ফিরিয়ে নেয়া হয় বলে হাসপাতালের অতিরিক্ত পরিচালক নাজমুল করিম জানান। তিনি বলেন, ডেন্টাল ও ম্যাক্সিলোফেসিয়াল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদা আকতারের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়াকে দাঁতের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, একটি দাঁতের অসমান অবস্থানের কারণে খালেদা জিয়ার মুখে ও জিহ্বায় ঘা হচ্ছিল। ডেন্টাল ইউনিটে গ্রাইন্ডিং করে ওই দাঁত ঠিক করা হয়েছে। গত বছরের ফেব্রম্নয়ারি থেকে দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের সাজা খাটছেন খালেদা জিয়া। ৭৪ বছর বয়সী এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বয়সজনিত বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একে মাহবুবুল হক রোজার ঈদের সপ্তাহ খানেক আগে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, মুখে জিহ্বায় ঘা হওয়ায় খালেদা জিয়ার খেতে সমস্যা হচ্ছিল। তবে তা অনেকটাই সেরে গেছে। মাহবুবুল হক সেদিন বলেছিলেন, মুখের ওই ঘা মারাত্মক কিছু না। অনেকেরই তা হয়। অনেক সময় ছত্রাকের সংক্রমণে ঘা হয়। আবার দাঁতের কারণেও তা হতে পারে। প্রয়োজনে বিষয়টি তারা পরীক্ষা করে দেখবেন। দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে রাখা হয়েছিল পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের পরিত্যক্ত কারাগারে। চিকিৎসার জন্য তাকে গত ১ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সরকারের তরফ থেকে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে, সুস্থ হলে খালেদাকে আর পুরনো কারাগারে ফেরানো হবে না। তার জন্য কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ১১ মামলায় পরবর্তী শুনানি ১৭ জুলাই এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদার জিয়ার বিরুদ্ধে রাজধানীর দারুস সালাম থানার আটটিসহ ১১ মামলার শুনানির পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ১৭ জুলাই। বুধবার মামলাগুলোর ওপর শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ নতুন দিন ঠিক করেন বলে জানিয়েছেন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাপস পাল। তিনি বলেন, কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বিশেষ এজলাসে বসে বিচারক এ দিন ঠিক করেন। এসব মামলার মধ্যে একটিতে অভিযোগপত্র গ্রহণ ও অন্যগুলোয় অভিযোগ গঠনের শুনানি ছিল বুধবার। মামলাগুলোর অধিকাংশই হাইকোর্টে স্থগিত আছে জানিয়ে সময়ের আবেদন করেন খালেদার আইনজীবীরা। এসব মামলার মধ্যে দারুস সালাম থানার আট মামলা নাশকতার। আর যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলাসহ দুইটি ও রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলা। ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাটি দায়ের করেন। এছাড়া ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়ে নূর আলম নামের এক যাত্রীকে হত্যার অভিযোগে যাত্রাবাড়ী থানায় দুই মামলা করা হয়। আর একই বছর বিভিন্ন সময় নাশকতার অভিযোগে দারুস সালাম থানায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আটটি মামলা দায়ের করা।