রাসুলের (দ.) জবানিতে মাহে রমজানের গুরুত্ব

প্রকাশ | ০৩ মার্চ ২০২৫, ০০:০০

আবছার তৈয়বী (আবুধাবি থেকে)
মাহে রমজান মুমিন মুসলমানদের জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মাস। এ মাসের প্রতি ক্ষণে, প্রতি মুহূর্তে আলস্নাহর পক্ষ থেকে বর্ষিত হয় রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও নাজাতের আশিসধারা- যা অন্য মাসে কল্পনাও করা যায় না। বিখ্যাত সাহাবী হযরত সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুলস্নাহ্‌ সালস্নালাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসালস্নাম মাহে শা'বানের শেষ তারিখে আমাদের মাঝে এ বলে ওয়াজ করতেন, 'হে লোক সকল! এক মহাপবিত্র ও বরকতময় মাস তোমাদের ওপর ছায়া বিস্তার করেছে। এ মাসের একটি রাত ফজিলত, বরকত ও গুরুত্বের দিক দিয়ে হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। আলস্নাহ তায়ালা তোমাদের জন্য এ মাসে রোযা ফরজ করেছেন এবং এর রাতগুলো আলস্নাহর সামনে দাঁড়ানোকে নফল ইবাদাতরূপে নির্ধারণ করেছেন। যে ব্যক্তি এ মাসের রাতে আলস্নাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য হাসিলের উদ্দেশে ফরজ ছাড়া অন্য নফল ইবাদাত আদায় করবে, তার জন্য অন্য সময়ের ফরজ ইবাদাতের সমান সওয়াব প্রদান করা হবে। আর যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরজ আদায় করবে, সে অন্য মাসের ৭০টি ফরজ ইবাদাতের সমান সওয়াব পাবে। এ মাস সৌহার্দ্য ও সৌজন্য প্রদর্শনের মহিমায় ভাস্বর। এ মাসে মুমিনদের রিয্‌ক বা জীবনোপকরণ প্রশস্ত করে দেওয়া হয়। এ রিযক থেকে যে ব্যক্তি রোযাদারকে ইফতার করায়, তার জন্য তা গুনাহ্‌ মাফের এবং দোযখের আযাব থেকে নিষ্কৃতি লাভের উপায় হিসেবে বিবেচিত হবে এবং সে উক্ত রোযাদারের সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করবে। কিন্তু ওই রোযাদারের সওয়াব এতটুকুও কমতি করা হবে না। এই মাস এমন এক মাস- যার প্রথম দশ দিন রহমতের করুণারাশিতে ভরপুর, মধ্যবর্তী দশ দিন ক্ষমা ও মার্জনার স্রোতধারায় পরিপূর্ণ-পরিপস্নম্নত এবং শেষ দশ দিন জাহান্নাম থেকে মুক্তিলাভের পাথেয় হিসেবে নির্দিষ্ট। যে ব্যক্তি এ মাসে দাস-দাসী বা চাকরদের কাজের ভার হালকা করবে, আলস্নাহ তায়ালা তার পাপরাশি মোচন করবেন এবং দোযখ থেকে মুক্তি দেবেন। যে ব্যক্তি রোযাদারকে পান করাবে, আলস্নাহ তায়ালা আমার হাউজ (হাউজে কাউছার) থেকে তাকে এমন শরবত পান করাবেন, জান্নাতে দাখিল হওয়া পর্যন্ত সে তৃষ্ণার্ত হবে না।' (বর্ণনায়- ইবনে খুযাইমা, বায়হাকী ও তিরমিজী)। প্রিয় পাঠক-পাঠিকা! মাহে রমজানের গুরুত্ব ও তাৎপর্য এই একটিমাত্র হাদিসে সংক্ষেপে পরিপূর্ণভাবে বিবৃত হয়েছে। এই হাদিসের আলোকে আমল করলে প্রত্যেক মুমিন-মুসলমান তার অভীষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে এবং প্রিয়নবী সালস্নালাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসালস্নামের পবিত্র নূরানী হাতে 'হাউজে কাউছার'-এর অতুলনীয় পানি পান করে জান্নাতে যেতে পারবে। যে পানি পান করার পর হাশরের ময়দানের সব পেরেশানি ও ক্লান্তি নিমিষেই দূর হয়ে যাবে। আলস্নাহ আমাদেরকে তাওফিক দিন। আমিন, বিহুরমাতি রাহমাতুলিস্নল আলামীন সালস্নলাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসালস্নাম। আবছার তৈয়বী : লেখক, গবেষক ও ইসলামি চিন্তাবিদ